নিজস্ব প্রতিবেদক: International Day of Women and Girls in Science উপলক্ষে ‘বর্তমানে বিজ্ঞান গবেষণায় নারীর ভূমিকা ও প্রতিবন্ধকতা’ শীর্ষক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলোচকবৃন্দ তাঁদের নিজেদের কর্মময় জীবনের অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধি তুলে ধরে কালভেদে নারীদের বিজ্ঞানে অগ্রযাত্রার পেছনের অনুপ্রেরণা, বিজ্ঞানে নারীর ভূমিকা আসলেই কতটুকু, গবেষণায় নারীদের প্রতিবন্ধকতাসহ সাম্প্রতিক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
গত শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সায়েন্টিফিক সোসাইটি কর্তৃক এটি আয়োজিত হয়েছে।
সংগঠনটির এডমিন সেক্রেটারি জুবাইদা হক বিনতে আলমের সঞ্চালনায় মেরিন সিটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা: বাসনা মুহুরী বলেন, পরিবারের সাপোর্ট একজন নারী শিক্ষার্থীর জন্যে আশীর্বাদের মত। আমি মনে করি, নারীকে নারী হিসেবে বা একজন মেয়ে হিসেবে না দেখে যদি একজন মানুষ হিসেবে দেখে তার মেধার মূল্যায়ন করা হয়, সেক্ষেত্রে প্রাথমিক পর্যায়ের ১০০% নারী শিক্ষার হার ঝরে ১৭% এ নেমে না এসে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা ক্ষেত্রে অন্তত ৫০% পর্যন্ত আমরা পাবো। নারীদেরকে শুধুমাত্র একটু সাপোর্ট ও সাহস যদি পরিবার থেকে দেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে তারা বিজ্ঞান গবেষণায় আমাদের দেশকে আরও বহুদূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে।
চবি রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. তাপসী রায় বলেন, গবেষণার জন্যে সে ছেলে হোক বা মেয়ে, সবচেয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসটি হলো সময়। যেকোনো আবিষ্কারের পেছনেই গবেষকের অনেক সময়, অনেক মানসিক শ্রম দিতে হয়। যদি কোনো পরিবার তাদের মেয়েকে এই সহযোগীতা করে, সমাজের দোহাইতে তার উপরে নানা অযাচিত চাপ তৈরী না করে, সেক্ষেত্রে একজন নারীও বিজ্ঞানী ও গবেষক হিসেবে সমাজের জন্য অসামান্য অবদান রাখতে পারবেন। এবং অবশ্যই নারীদেরকে হতে হবে দৃঢ়প্রত্যয়ী, আশেপাশে যত বাধাই আসুক, মনোবল হারানো যাবে না।”
চবি প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সোনম আক্তার বলেন, বিজ্ঞান বিষয়ে ল্যাবে কাজ করতে হলে কোনো বাঁধা–ধরা সময়ের মাঝে করা যায় না, দেখা যায় অনেক সময় অনেক পরীক্ষণ থেকে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পেতে অনেক লম্বা সময় জুড়ে কাজ করতে হয়। কিন্তু আমাদের দেশে কোনো মেয়ে এত দীর্ঘ সময় ল্যাবে থাকবে, এরপর সে যে নিরাপদে ঘরে ফিরে আসতে পারবে, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। কোনো কারণে যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটেও যআয়, সেক্ষেত্রেও সবাই মেয়েটিকেই দোষারোপ করে, কেন সে গিয়েছিলো, কেন তাকে গবেষণা করতে হবে।
এই নিরাপত্তার চিন্তাতেই অনেক বাবা–মা তাদের মেয়ে সন্তানকে দ্রুত বিয়ে দিতে চিন্তা করেন, যার কারণে অনেক নারীই পরবর্তীতে সংসারের চাপে পড়ে আর তাদের গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে নিয়ে যেতে পারেন না। তাই, গবেষণা ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হলে আমাদের এই ওভারঅল সোশ্যাল স্ট্রাকচার ও মেন্টালিটির পরিবর্তন করা খুবই জরুরী।
আইআই/সিএন
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন