সিএন প্রতিবেদন: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনী আচরণবিধিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো—বিদেশে থেকে কোনো প্রার্থী বা রাজনৈতিক দল নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারবে না।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইসি সচিব আখতার আহমেদ জানান, সংশোধিত আচরণবিধির খসড়া ইতিমধ্যেই আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ভেটিং সম্পন্ন হলে দ্রুতই তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে।
বিদেশে প্রচার কেন নিষিদ্ধ?
ইসি কর্মকর্তাদের ভাষ্য, নির্বাচন এলেই বিদেশে থাকা নেতাকর্মীরা প্রচার চালান, যা অনেক সময় অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি তৈরি করে এবং দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে। এছাড়া ব্যয়ের হিসাবও জটিল হয়। এসব কারণেই এবার বিদেশে প্রচার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পোস্টার যাবে, আসবে বিলবোর্ড
নতুন বিধিমালায় প্রচারে পোস্টারের ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। তবে প্রার্থীরা তাদের নির্বাচনী এলাকায় সর্বোচ্চ ২০টি বিলবোর্ড ব্যবহার করতে পারবেন। পাশাপাশি সাদা-কালো কাপড়ের ব্যানার ব্যবহারের অনুমতি থাকবে, তবে তাতে কেবল প্রার্থী ও দলীয় প্রধানের ছবি রাখা যাবে।
অনলাইনে প্রচারের কাঠামো
প্রথমবারের মতো অনলাইন প্রচারের জন্য আলাদা আইনি কাঠামো আনছে কমিশন। প্রতীক বরাদ্দের আগে কোনো ধরনের প্রচার নিষিদ্ধ থাকলেও প্রতীক পাওয়ার পর নির্ধারিত সময়সীমা পর্যন্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারের সুযোগ থাকছে। প্রার্থীদের প্রচারের মাধ্যম, সময় ও ব্যয়ের হিসাব নিয়মিতভাবে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানাতে হবে। তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মাইক ও পরিবেশ সুরক্ষা
মাইক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সময় নির্ধারণের প্রস্তাব এসেছে। শব্দের মাত্রা ৬০ ডেসিবলের মধ্যে রাখতে হবে।
প্লাস্টিক ও পলিথিন নিষিদ্ধ
ব্যানার, লিফলেট ও অন্যান্য প্রচারণামূলক কাজে প্লাস্টিক ও পলিথিন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা থাকছে। এছাড়া সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনায় পোস্টার লাগানো যাবে না, কেবল ঝুলিয়ে দেওয়া যাবে। আগের মতোই দেওয়াল লিখন নিষিদ্ধ থাকবে।
শাস্তির বিধান কঠোর হচ্ছে
নতুন সংশোধনী অনুযায়ী, আচরণবিধি ভাঙলে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা ছয় মাস কারাদণ্ডের পাশাপাশি অনলাইন প্রচারে অনিয়ম হলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায়ও ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। প্রয়োজনে প্রার্থীর প্রার্থিতাও বাতিল করতে পারবে কমিশন।
নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, “আমরা বিশেষভাবে ড্রোন, কোয়াডকপ্টার বা এআই ব্যবহারের অপব্যবহার রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেব। ভুল তথ্য (মিসইনফরমেশন), ইচ্ছাকৃত ভুয়া তথ্য (ডিসইনফরমেশন) কিংবা সত্য হলেও গোপনীয় তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া (ম্যালইনফরমেশন)—এসব থেকে ভোট প্রক্রিয়াকে সুরক্ষিত রাখাই আমাদের লক্ষ্য।”
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন