নিউইয়র্ক প্রতিনিধি
যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রভাবশালী প্রবাসী সংগঠন বাংলাদেশ বিয়ানীবাজার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সমিতি ইউএসএ ইনকের আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে জটিলতা ও বিভ্রান্তি। নির্বাচনী প্রচারণা শেষ পর্যায়ে হলেও ভোটার তালিকা নিয়ে অভিযোগের নিষ্পত্তি হয়নি, বরং বেড়েছে বিতর্ক। নির্বাচন কমিশনও অনেক প্রশ্নের সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেনি। ফলে প্রবাসী মহলে এই নির্বাচনকে ঘিরে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ভুয়া ভোটার, ভোটার তালিকা নিয়ে আপত্তি ও মামলা প্রসঙ্গে প্রশ্নোত্তর পর্বে এসব চিত্র উঠে আসে। কমিশনের এক সদস্যের ভাষায়, “গঠনতন্ত্রে শুভংকরের ফাঁকি রয়েছে,”—যা আলোচনায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার আজিজুর রহমান লিখিত বক্তব্যে জানান, আগামী ২৬ অক্টোবরের নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, “একটি প্যানেল অহেতুক আবেদন দিয়ে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটানোর চেষ্টা করছে।”
নির্বাচন কমিশনের ব্যাখ্যায় বলা হয়, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ভোটার তালিকা প্রণয়ন বা সংশোধনের দায়িত্ব কমিশনের নয়। ৩০ আগস্টের মধ্যে কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত তালিকা নির্বাচন কমিশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তবে একাধিক ভোটার নাম, বাইরে থাকা ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তি এবং দ্বৈত ভোটার হওয়ার অভিযোগে পাঁচ সদস্য আদালতে মামলা করেছেন।
এ প্রেক্ষিতে ১০ অক্টোবর গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে জরুরি সভা করে নির্বাচন কমিশন। সভায় আজমল হোসেন কুনু, বদরুল হোসেন খান, আব্দুস শহীদ মাস্টার ও সামছুল আবদীনকে সমাধান খোঁজার দায়িত্ব দেওয়া হলেও তারা কোনো সমাধান দিতে পারেননি।
প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রশ্ন করা হলে কমিশনার আমিনুল হোসেন জানান, “গঠনতন্ত্রে ডাবল ভোটার বা ভুয়া ভোটার বাতিলের কোনো সরাসরি নিষেধাজ্ঞা নেই।” তখন প্রধান নির্বাচন কমিশনার আজিজুর রহমান বলেন, “এখানেই গঠনতন্ত্রের শুভংকরের ফাঁকি—বিগত নেতারা নিজেদের সুবিধার জন্য এসব ফাঁকফোকর রেখেছেন।”
নির্বাচনী ব্যয়ের প্রসঙ্গে আজিজুর রহমান জানান, সভাপতি আব্দুল মান্নান ও সাধারণ সম্পাদক রেজাউল আলম অপু নির্বাচনী খরচের জন্য চেক ইস্যু করলেও কোষাধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান দুখু সেই চেক আটকে দেন। ফলে ইভিএমসহ অন্যান্য ব্যয় মেটাতে কমিশনকে ধারদেনা করতে হয়েছে।
তার ভাষায়, “ঢাল নেই, তলোয়ার নেই—এই অবস্থায়ই আমরা নির্বাচন আয়োজনের চেষ্টা চালাচ্ছি।”
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, ১৯টি পদের বিপরীতে দুটি প্যানেল এবং কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আগামী ২৬ অক্টোবর কুইন্স ও ব্রংক্সের দুটি কেন্দ্রে ৮ হাজার ৫০৩ ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
এদিকে ২৩ অক্টোবর আদালতের রায়ের দিকে তাকিয়ে আছে প্রার্থীরা ও প্রবাসী বাংলাদেশি সম্প্রদায়। নির্বাচন ঘিরে বিয়ানীবাজার সমিতির ইতিহাসে এমন টানটান পরিস্থিতি বিরল বলেই মত পর্যবেক্ষকদের।



চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন