নিজস্ব প্রতিবেদক:
‘অদম্য বাংলাদেশে অবাক বিশ্ব’ স্লোগানকে সামনে রেখে তিন দশক আগে যাত্রা শুরু করে উত্তর আমেরিকার প্রবাসীদের সবচেয়ে বড় মিলনমেলা ফোবানা সম্মেলন। মূলত প্রবাসে বাঙালিদের ঐক্যবদ্ধ করতে এবং বাংলাদেশের ইতিহাস, শিল্প, সংস্কৃতির ঐতিহ্য তুলে ধরতে আয়োজিত হয় এ সম্মেলন। তবে সম্প্রতি নিজেদের মধ্যে কোন্দলে জড়িয়ে পৃথক পৃথকভাবে সম্মেলনের প্রস্ততি নিচ্ছে একাধিক সংগঠন । আর এতে করে জৌলুশ হারাচ্ছে সংগঠনটি।
জানা গেছে, ক্যালিফোর্নিয়া, সিকাগো এবং কানাডার মন্ট্রিয়ালে পৃথক পৃথকভাবে চলছে তিনদিন ব্যাপী ফোবানা সম্মেলনের প্রস্তুতি। এই নিয়ে চলছে লোক দেখানো পোষ্টারের মাধ্যমে প্রচারণা। এছাড়া বাংলাদেশ কনভেনশন নামে ফোবানার আদলে নিউইয়র্কেও আরেটি সম্মেলনের প্রস্তুতি চলছে। এসব আয়োজনের পোষ্টারে রাখা হয়েছে বেশ কিছু অতিথি ও শিল্পীদের নাম। যাদের অধিকাংশের সাথে যোগাযোগ না করেই পোষ্টারে নাম বসানোর অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া বাংলাদেশ কনভেনশনের আয়োজন ছাড়া অন্য কোন আয়েজনে দেখা যায়নি সংবাদমাধ্যমে প্রচারণা। আর এসব বিষয়গুলোকে কেন্দ্র করে ফোবানা সম্মেলনের যথার্থতা নিয়ে জনমনে তৈরি হয়েছে নানান প্রশ্ন।
এসব সম্মেলনের একটির আয়োজন করছেন এক নামধারী বিএনপি নেতা। যার কর্মকাণ্ড আধিকাংশ প্রবাসির কাছে প্রশ্নবিদ্ধ। রয়েছে নানান অভিযোগও। প্রবাসিরা বলছেন, কিছু মানুষ অনুষ্ঠানের নাম করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার কর্মকাণ্ডে লিপ্ত । ফোবানার এসব সম্মেলনে যদি সেরকম কিছু থাকে তবে তা বাঙালিদের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক বিষয়।
এইদিকে ফোবানা বিভক্তির ধারা যেন কোনমতেই থামছে না। একটি ফোবানা থেকে তিনটি হওয়ার পরও চলছে দ্বন্ধ। এবার নিজেদের আন্তকোন্দলে শঙ্কা তৈরি হয়েছে তিনটি ভেঙ্গে ছয়টি ফোবানা হওয়ার। আর এর পেছনে ব্যক্তি কেন্দ্রীক স্বার্থকেই কারণ হিসেবে দেখছেন আনেকে। সংশ্লষ্টরা বলছেন এসব থামানো না গেলে সামনে ফোবানা তার ঐতিহ্য হারাবে।
আগস্টের ২ তারিখ এক সংবাদ সম্মেলনে ফেডারেশন অব বাংলাদেশি অ্যাসোসিয়েশনস ইন নর্থ আমেরিকার (ফোবানা) সাবেক সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী বলেছেন, ফোবানা থেকে বহিষ্কৃত কিছু অপশক্তি ও স্বাধীনতা বিরোধী ব্যক্তিরা ফোবানার নামে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করে মানুষকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু আমরা বলব আমরাই প্রথম ও একমাত্র সংগঠন।
ফোবানার বিভক্তি ও একাধিক আয়োজন সুনজরে দেখছেন না বাঙালি আমেরিকানরা। তারা বলছেন, ফোবানা সম্মেলনের মাধ্যমে সবার মিলনমেলা হয়। এর মাধ্যমে পারস্পরিক সম্পর্ক সুদৃঢ় হয় । এছাড়া ফোবানার বাংলাদেশের সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও ভাষাকে উত্তর আমেরিকায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে উজ্জীবিত রাখে এবং নতুন প্রজন্মের কাছে এর প্রচার ও প্রসার করে।
তারা বলছেন, যদি ফোবানা নিয়ে এসব বন্ধ না হয় তবে আমাদের নতুন প্রজন্ম কি শিখবে? অনুষ্ঠানের নাম করে যদি কেউ নিজেদের স্বার্থ হাসিলের ঠেষ্টা করে তবে তা প্রবাসিরা বরদাস্ত করবে না।
প্রসঙ্গত, ১৯৮৭ সালে ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্বব্যাংকের একটি ছোট অডিটরিয়ামে অত্যন্ত ছোট পরিসরে ফোবানার জন্ম হয়েছিল। গতবছর ফোবানার ৩৫তম আসর অনুষ্ঠিত হয়। এবার আনুষ্ঠিত হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে ৩৬তম সম্মেলন।
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন