শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫

শিরোনাম

মানবতার মুখোশের আড়ালে যুক্তরাষ্ট্রের আসল চেহারা!

বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০, ২০২৫

প্রিন্ট করুন

যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতির অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে তাদের অর্থনৈতিক ও সামরিক আধিপত্য বজায় রাখা। এজন্য তারা কখনো মানবাধিকার ইস্যুতে কঠোর অবস্থান নেয়, আবার কখনো স্বার্থের কারণে তা উপেক্ষা করে। দেশটি তার বৈদেশিক নীতিতে মানবিক মূল্যবোধের চেয়ে স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়। যখন কোনো সংকট তাদের ভূরাজনৈতিক অবস্থানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, তখন তারা মানবিক সাহায্য প্রদান করে বা সামরিক হস্তক্ষেপ করে। অন্যদিকে, যেখানে তাদের স্বার্থ নেই, সেখানে নিরব ভূমিকা পালন করে।

যুক্তরাষ্ট্রের মানবতা ও নৈতিক অবস্থান আসলে কৌশলগত স্বার্থের ভিত্তিতে পরিবর্তনশীল। তারা যখন কোথাও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়, তখন সেটি আদৌ মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে নাকি ভূরাজনৈতিক স্বার্থে করা হচ্ছে, সেটি প্রশ্নসাপেক্ষ। তাই যুক্তরাষ্ট্রের মানবিক নীতিকে স্থির বা নিরপেক্ষ বলা যায় না, বরং এটি স্থান, কাল ও পাত্র অনুযায়ী পরিবর্তনশীল।

যুক্তরাষ্ট্র প্রায়শই ইসরায়েলের সামরিক হামলাকে “আত্মরক্ষার অধিকার” বলে বৈধতা দেয়। ইসরায়েল যখন গাজায় বিমান হামলা চালায়, তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং পররাষ্ট্র দপ্তর শুধু “উভয় পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের” আহ্বান জানায়, কিন্তু ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয় না। যুক্তরাষ্ট্র গাজায় মানবিক বিপর্যয়ের সময় কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয় না, কারণ তাদের পররাষ্ট্রনীতি মূলত ইসরায়েলের প্রতি গভীর সামরিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক দ্বারা পরিচালিত হয়। ইসরায়েলপন্থী লবির প্রভাব, মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত স্বার্থ, এবং গণমাধ্যমের একপাক্ষিক প্রচার এই অবস্থানকে আরও সুসংহত করেছে। ফলে গাজায় হাজার হাজার নিরীহ মানুষ মারা গেলেও, যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে কোনো দৃশ্যমান পরিবর্তন দেখা যায় না।

১৯৯০-এর দশকে কসোভো ও বসনিয়ায় জাতিগত নিধনের বিরুদ্ধে সরাসরি সামরিক হস্তক্ষেপ করেছিল, কিন্তু রুয়ান্ডার গণহত্যার সময় কিছুই করেনি। একদিকে তারা স্বৈরশাসকদের বিরুদ্ধে কথা বলে, অন্যদিকে সৌদি আরবের মতো দেশগুলোর একনায়কতন্ত্রকে সমর্থন দেয়। চীনের উইঘুর মুসলিমদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে কঠোর সমালোচনা করে, কারণ চীনের সঙ্গে তাদের বৈশ্বিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন