আগামী ২২ জুন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচন। এই নির্বাচনে নগরীর মেয়র পদে এরিক এডামসকে সমর্থন জানিয়েছে বাংলাদেশি কমিউনিটি। আনুষ্ঠানিক এই সমর্থন জানাতে গত ২৫ এপ্রিল জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ‘রাইজ আপ নিউইয়র্ক’ নামক একটি গ্রæপ, যা বিভিন্ন স্তরের বাংলাদেশি আমেরিকান প্রফেশনালসদের নিয়ে গঠিত।
বৃষ্টি উপেক্ষা করে ওইদিন সেখানে প্রায় ১০০ কমিউনিটি লিডার উপস্থিত ছিলেন।
এই আনুষ্ঠানিক সমর্থনের আগে নানা সময় ব্যক্তিগতভাবে এরিক এডামসের সঙ্গে দেখা করেছেন ‘রাইজ আপ নিউইয়র্কে’র অনেক সদস্য। এছাড়া গ্রুপটির নানা অংশের সঙ্গে ভার্চুয়াল মাধ্যমে একাধিক বৈঠক হয়েছে এরিক এডামসের। সেই ধারাবাহিকতায় এবার আনুষ্ঠানিক সমর্থন আসলো।
সিটির মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য এই মুহূর্তে অন্যান্য যারা মাঠে নেমেছেন, নাগরিকদের দৃষ্টি আকর্ষণের ক্ষেত্রে তাদের থেকে ঢের এগিয়ে আছেন এরিক এডামস। বেশ জোরেশোরেই প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। শুধু বাংলাদেশি কমিউনিটি নয়; ইতোমধ্যেই বিভিন্ন অর্থনৈতিক, নৃতাত্ত্বিক এবং ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায়ে সক্ষম হয়েছেন তিনি।
এরিক এডামস জন্মগ্রহণ করেছেন নিউইয়র্কে। কোনো ধনী পরিবারে তার জন্ম হয়নি। পড়াশোনার পাট চুকিয়ে ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে দায়িত্ব পালন করেছেন নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগে (এনওয়াইপিডি)। মেধার স্বাক্ষর রেখে সেখানে ক্যাপ্টেন পদে উন্নীত হয়েছিলেন।
এনওয়াইপিডি থেকে অবসর গ্রহণের পর ব্রæকলিন থেকে স্টেট সিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপর ২০১৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত টানা দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন ব্রুকলিন বরো প্রেসিডেন্ট হিসেবে। এবার মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মাঠে নেমেছেন তিনি।
তিনি যে বাংলাদেশি কমিউনিটির সমর্থন আদায় করে নিয়েছেন, তার পেছনে আছে অনেক শ্রম-ঘাম। দীর্ঘ প্রচেষ্টায় মুসলমানদের সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। যোগ দিয়েছেন অসংখ্য সামাজিক অনুষ্ঠানে। বিভিন্ন মসজিদে জুমার নামাজের সময় বক্তব্য রেখেছেন। মোদ্দাকথা, বাংলাদেশিদের সমর্থন আদায়ের জন্য এরিক এডামসকে অনেক পথ পাড়ি দিতে হয়েছে।
২৫ এপ্রিল আয়োজিত অনুষ্ঠানে ‘রাইজ আপ নিউইয়র্ক’-এর অন্যতম সহ-প্রতিষ্ঠাতা শামসুল হক তার বক্তব্যে বলেন, এরিক এডামস একজন প্রতিভাবান নেতা, অভিজ্ঞ পেশাদার এবং সত্যিকারের নিউইয়র্কার। ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার প্রয়োজনীয় সংস্কারে তার যে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা রয়েছে, তা নিউইয়র্ক সিটিকে সুরক্ষিত রাখতে খুবই কাজে দেবে।
শামসুল হক যখন এই বক্তব্য দিচ্ছেন, তখন সেখানে উপস্থিত কমিউনিটি লিডাররা ‘আমার ভাই তোমার ভাই, এরিক ভাই, এরিক ভাই’ বলে স্লোগান তোলে। এছাড়া বাংলাতেই আরেকটি দারুণ স্লোগান তোলা হয়- ‘এরিক ভাইয়ের মার্কা কি, সততা ছাড়া আর কী!’
এ সময় নিজেকে বাংলাদেশিদের ‘পুরনো বন্ধু’ আখ্যা দিয়ে এরিক এডামস তার বক্তব্যে বলেন, আমি শ্রমজীবী মানুষের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করছি, ভবিষ্যতেও করবো। প্রাপ্ত বয়স্কদের আরও ভালো মজুরি, আরও সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা এবং রাস্তায় নিরাপদ চলাফেরা নিশ্চিত করার চেষ্টা করবো।
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন