ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে নিরাপত্তা সতর্কতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে (হাই এলার্ট) উন্নীত করা হয়েছে। নিউইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলেস ও মিয়ামিসহ বড় শহরগুলোতে ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও কূটনৈতিক স্থাপনাগুলোর চারপাশে পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে।
নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগ (এনওয়াইপিডি) এক বিবৃতিতে জানায়, সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে আমরা অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করছি এবং ফেডারেল সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।
ওয়াশিংটনের মেট্রোপলিটন পুলিশ বিভাগ এবং মিয়ামি-ডেড কাউন্টিও জানিয়েছে, বর্তমানে কোনো নির্দিষ্ট হুমকি না থাকলেও জননিরাপত্তা রক্ষায় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও জনসমাগমস্থলে টহল জোরদার করা হচ্ছে।
লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র কারেন বাস জানিয়েছেন, সুনির্দিষ্ট হুমকি না থাকলেও এলএপিডি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরালো করেছে।
পুলিশ বিভাগের সাবেক কর্মকর্তা ও সন্ত্রাসবাদ পর্যবেক্ষক পল মাউরো জানিয়েছেন, এনওয়াইপিডি কিছু মসজিদ ও ইসরায়েল সংশ্লিষ্ট স্থানে ‘হাউস অব ওয়ারশিপ কার’ মোতায়েন করছে। এই গাড়িগুলো সরাসরি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সামনে রাখা হয় যাতে তাৎক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।
তিনি আরও বলেন, অনলাইনে যেসব জঙ্গিগোষ্ঠী বা চরমপন্থী সদস্য তৎপর, তাদের ডিজিটাল গতিবিধি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এনওয়াইপিডির সাইবার কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট এ ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা রাখছে।
সাইবার নজরদারির পাশাপাশি কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশন বিমানবন্দর ও সীমান্তে আগত যাত্রীদের ওপরও নজরদারি বাড়িয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, ইরান সাইবার হামলায় যথেষ্ট সক্ষম এবং অতীতে তারা ব্যাংক অব আমেরিকা ও জেপি মরগান চেইসের মতো বড় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সাইবার আক্রমণ চালিয়েছে। সাবেক সিআইএ গুপ্তচর ট্রেসি ওয়ালডার বলেন, ইরান পূর্বেও সফলভাবে ডিনায়াল অব সার্ভিস হামলা চালিয়েছে এবং মার্কিন মাটিতে কার্যকর ছিল এমন কয়েকটি সন্ত্রাসী সেলও ধরা পড়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ জানিয়েছে, ছোট শহরের পুলিশ বাহিনীগুলোকে সহায়তা করতে তারা প্রস্তুত রয়েছে। গ্রীষ্মকালে জনসমাগমপূর্ণ অনুষ্ঠান ও প্যারেডে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার রাতে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় আমেরিকান যুদ্ধবিমান বোমা হামলা চালায়। হামলার লক্ষ্যগুলোর একটি ছিল ফোর্দো, ইরানের দূরবর্তী পাহাড়ি এলাকার ভেতর লুকানো একটি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র। যা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন