প্রায় দুই বছরের মধ্যে এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতির হার ৫ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। আগের বছরর তুলনায় গত মাসে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ৪ দশমিক ৯ শতাংশ হারে। যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম পরিসংখ্যান ব্যুরোর সূত্রে এ তথ্য জানিয়েছে।
তথ্য মতে, এপ্রিল মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৭ দশমিক ৭ শতাংশ। এ ছাড়া আগের মাস, অর্থাৎ চলতি বছরের মার্চের সাপেক্ষে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কার্যত কমেছে। এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্রে খাদ্য ও জ্বালানিবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৫ শতাংশ, অর্থনীতিবিদেরা অবশ্য তেমনটি ভেবেছিলেন।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রিন্সিপাল অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রধান বৈশ্বিক কৌশলবিদ সীমা শাহ গ্রাহকদের উদ্দেশে এক বার্তায় বলেছেন, অনেকে ধারণা করেছিলেন, এপ্রিল মাসে মূল্যস্ফীতির হার বাড়বে, কিন্তু তাদের এ উদ্বেগ ভুল প্রমাণিত হয়েছে। সেই সঙ্গে সেবার মূল্য কমতে শুরু করেছে।
সীমা শাহ আরও বলেন, এপ্রিল মাসে কর্মসংস্থানের চিত্রও শক্তিশালী। ফেডারেল রিজার্ভ তাতে স্বস্তি বোধ করবে, তারা যে নীতি সুদহার বৃদ্ধির ধারা আপাতত স্থগিত করার কথা বলেছিল, সেই অঙ্গীকারও পুনর্ব্যক্ত করেছে।
মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশের নিচে নেমে আসা যথেষ্ট নয়। কারণ, ফেডারেল রিজার্ভের মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ২ শতাংশ, সেই পর্যায়ে যেতে আরও অনেকটা সময় লেগে যাবে বলে বিশ্লেষকেরা ধারণা করছেন।
সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বেকারত্বের হারও কমেছে। মার্চ মাসে তা ছিল মহামারির আগের পর্যায়ে, অর্থাৎ ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। মজুরিও বেড়েছে। গত ১২ মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ঘণ্টাপ্রতি গড় মজুরি ৪ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। মজুরি বৃদ্ধির অর্থ হলো, পণ্য ও সেবার দাম বৃদ্ধি পাওয়া, যা শেষমেশ ভোক্তাদের দিকে চলে যাবে। অর্থাৎ মূল্যস্ফীতি আবারও বৃদ্ধির সম্ভাবনা আছে।
মূল্যস্ফীতি বাড়লে নীতি সুদহার বৃদ্ধির সম্ভাবনাও থেকে যায়। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে নীতি সুদহার বৃদ্ধির আরেকটি ফল হচ্ছে, সে দেশে বন্ডসহ অন্যান্য আমানতের সুদহার বৃদ্ধি পাওয়া। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা আর উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বিনিয়োগে আগ্রহী হন না। তাঁরা তখন ভাবেন, ডলারে বিনিয়োগ করা ভালো। কারণ, এর ফলে ভালো সুদ পাওয়া যাবে। ফলে ডলারের বিনিময় মূল্য বেড়ে যায়। দেশে দেশে স্থানীয় মুদ্রার দরপতন হয়।
গত এক বছরে ডলারের বিনিময় মূল্য বৃদ্ধির কারণে আমদানি ব্যয়বহুল হয়েছে, পরিণামে অবধারিতভাবে বেড়েছে মূল্যস্ফীতির হার। আবার যেসব কোম্পানির নেট দায় ডলারের সাপেক্ষে নির্ধারিত হয়, তাদের মুনাফা কমবে। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্র নিজ দেশে মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় যে পদক্ষেপ নেয়, তার জেরে অনেক দেশে উল্টো মূল্যস্ফীতি বাড়ে।
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন