সিএন প্রতিবেদন: যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবাজারে ভাটা চলছে। জুন মাসে দেশটিতে চাকরির সুযোগ কমে এসেছে ৭৪ লাখে, যা মে মাসের তুলনায় প্রায় ৩ লাখ কম। বিষয়টিকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির জন্য একটি সতর্ক সংকেত হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকেরা।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) প্রকাশিত দেশটির শ্রম বিভাগের তথ্যমতে, মে মাসে যেখানে চাকরির সংখ্যা ছিল ৭৭ লাখ, জুনে তা নেমে আসে ৭৪ লাখে।
যদিও ছাঁটাইয়ের হার উল্লেখযোগ্যভাবে না বাড়লেও, চাকরি ছেড়ে যাওয়ার হারও কমেছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এটি স্পষ্ট করে—অনেক কর্মী নতুন চাকরি পাওয়ার বিষয়ে আত্মবিশ্বাস হারাচ্ছেন।
এই ধীরগতির জন্য মূলত দুটি বড় কারণকে দায়ী করছেন অর্থনীতিবিদরা। প্রথমত, ২০২২ ও ২০২৩ সালে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ একাদশবার সুদের হার বাড়িয়েছে, যার ফলে কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগ ব্যয় বেড়েছে। দ্বিতীয়ত, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে নিয়োগদাতাদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
চলতি জুলাই মাসের পূর্ণাঙ্গ শ্রমবাজার প্রতিবেদন আগামী শুক্রবার প্রকাশিত হবে। তবে প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, বেকারত্বের হার জুনের ৪.১ শতাংশ থেকে বেড়ে ৪.২ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। এ মাসে নতুন কর্মসংস্থান দাঁড়াতে পারে ১ লাখ ১৫ হাজারে, যা জুনের ১ লাখ ৪৭ হাজারের তুলনায় কম।
জুন মাসে নিয়োগের সংখ্যা তুলনামূলক ভালো মনে হলেও ভেতরের চিত্র ভিন্ন। ওই মাসে ব্যক্তিখাতে কর্মসংস্থান হয়েছিল মাত্র ৭৪ হাজার, যা গত বছরের অক্টোবরের পর সবচেয়ে কম। বাকি প্রায় ৬৪ হাজার চাকরি ছিল শিক্ষা খাতে, যা মৌসুমি প্রভাবের কারণে কিছুটা অতিরঞ্জিত হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
২০২৫ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রতি মাসে গড়ে ১ লাখ ৩০ হাজার নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। অথচ ২০২৪ সালে এই সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৬৮ হাজার, আর কোভিড-পরবর্তী পুনরুদ্ধারের সময় (২০২১–২০২৩) ছিল গড়ে ৪ লাখের বেশি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধারা যদি অব্যাহত থাকে, তবে তা যুক্তরাষ্ট্রের সামগ্রিক অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক ভবিষ্যতে নীতিগত পরিবর্তনের কথা বিবেচনা করতে পারে।
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন