শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

রান্নাঘর গোছানো ও দুর্গন্ধমুক্ত রাখতে ফলপ্রদ সাত পরামর্শ

বুধবার, ফেব্রুয়ারী ১, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

লাইফস্টাইল প্রতিবেদক: সারা বাসা খুব সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে রেখেছেন। তবে রান্নাঘরে ঢুকলেই দেখা যায়, সব জিনিস এলোমেলো! বাসার সবচেয়ে ব্যস্ততম এ স্থানটাই যদি পরিষ্কার না থাকে, তাহলে কি কাজ করতে ভাল লাগবে? সকালের চা বানানো থেকে শুরু করে রাতের খাবার তৈরি করা পর্যন্ত কত বার যে রান্নাঘরে যাওয়া হয়, তার হিসাব নেই। তবু কোথায় যেন এ জায়গাটাই পরিষ্কার রাখার জন্য আগ্রহের কমতি দেখা যায়। আবার কীভাবে রান্নাঘর পরিষ্কার রাখা যায়, সেই কৌশলগুলোও অনেকের অজানা।

তাহলে, জেনে নিন রান্নাঘর গোছানো ও দুর্গন্ধমুক্ত রাখার কয়েকটি পরামর্শ সম্পর্কে।

সিঙ্ক ও বেসিন ঝকঝকে রাখুন: পুরো দিনের বিভিন্ন ধোয়ামোছার পর সিঙ্ক কিংবা বেসিন জ্যাম হয়ে যেতে পারে। এতে দুর্গন্ধ ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকে। কাজের শেষে তাই সম্ভব হলে সিঙ্কে গরম পানি ঢেলে দিন। খুব বেশি গরম পানি ব্যবহার করা উচিত নয়। এতে প্লাস্টিকের পাইপের ক্ষতি হতে পারে। তবে প্লাস্টিকের জন্য সহনীয় পর্যায় পর্যন্ত গরম পানি ব্যবহার করলে যে কোন কারণে পাইপ জ্যাম হয়ে গেলে তা ঠিক হয়ে যাবে। সবশেষে লিকুইড সাবান কিংবা ভিনেগার পানিতে মিশিয়ে তা দিয়ে সিঙ্কের পুরোটা পরিষ্কার করে নিন। তেলতেলে ভাব কমানোর জন্য সিঙ্কের মধ্যে ভিনেগার ছড়িয়ে দিয়ে তাতে লেবুর রস ও কয়েক টুকরো লেবু রেখে দিন। দশ মিনিট পর ঘষে ধুয়ে ফেলুন। এতে সিঙ্কের চকচকে ভাব ফিরে আসবে।

রান্নাঘরের স্ল্যাব ক্লিন করুন: প্রতিদিন রান্না করার সময় মশলা বা তরকারি চুলায় ও স্ল্যাবে পড়তে পারে। এ দাগ এক বার বসে গেলে ওঠানো খুব কষ্টকর। এ ছাড়া, স্ল্যাবও তেল চিটচিটে হয়ে যায়। তাই, প্রতি বার রান্না শেষ করে চুলা ও স্ল্যাব ক্লিন করে নিন। ক্লিন করার জন্য গরম পানিতে বাসন পরিষ্কারের লিকুইড সাবান ও এক চামচ লবণ মিশিয়ে নিন। পানিতে কাপড় ভিজিয়ে চুলার আশেপাশে ও স্ল্যাব পরিষ্কার করা হলে শুকনো আরেকটি কাপড় দিয়ে ভালভাবে মুছে নিন।

আঁশটে গন্ধ দূর করুন: মাছ কাটাকুটি করা হলে স্বাভাবিকভাবেই রান্নাঘরে কিছুটা আঁশটে গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। এ ক্ষেত্রে, মাছের আঁশ আর অন্যান্য আবর্জনা আগে পলিথিনে ভরে মুখ বন্ধ করে তারপর ময়লার ঝুড়িতে রাখুন। মাছ কাটার সময় পুরাতন পত্রিকা বা পলিথিন বিছিয়ে রাখতে পারেন। এতে মেঝে নোংরা হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে। মাছ-মাংস কাটার পর যদি রান্নাঘরে গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে তবে পানিতে কিছুটা দারুচিনি রেখে ফুটিয়ে নিন। এতে ঘরের দুর্গন্ধ কমে আসবে। চাইলে এয়ার ফ্রেশনারও ব্যবহার করতে পারেন।

ওভেন পরিষ্কার রাখুন: রান্নার ঝামেলা কমিয়ে আনার জন্য অনেকেই এখন মাইক্রোওয়েভ ব্যবহার করছেন। তবে ব্যবহার শেষে যদি ওভেন ভালভাবে ক্লিন করা না হয়, তবে অল্প সময়েই ছড়িয়ে থাকা খাবার থেকে দুর্গন্ধ আসতে পারে। তাই, ওভেনও নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে। এক বাটি পানিতে ভিনেগার কিংবা লেবুর রস মিশিয়ে তা ওভেনে এক মিনিট গরম করে নিন। এতে গরম পানির বাষ্প পুরো ওভেনে ছড়িয়ে পড়বে। পরে শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে নিলেই ওভেন পরিষ্কার হয়ে যাবে।

রান্নাঘরের চকচকে ভাব ধরে রাখুন: রান্নাঘরে স্টেইনলেস স্টিলের সিঙ্ক পরিষ্কার করার পর কাপড়ে খানিকটা অলিভ অয়েল কিংবা কোকোনাট লাগিয়ে তা দিয়ে সিঙ্ক মুছে নিতে পারেন। রান্নাঘরের কোন পাত্র চকচকে রাখতে চাইলেও এ পদ্ধতি ফলো করতে পারেন। কাঠের জিনিসের চকচকে ভাব ধরে রাখতে চাইলে কিছুটা লবণ ছিটিয়ে তাতে অল্প লেবুর রস দিয়ে হালকা ঘষে নিন। রান্নাঘরের প্রতিটি জিনিস যখন পরিষ্কার থাকবে, তখন এমনিতেই চকচকে ভাব বজায় থাকবে।

টাইলস পরিষ্কার করুন: চুলার আশেপাশের দেয়ালে তেল চিটচিটে টাইলস পরিষ্কারের জন্য বেকিং সোডা ও লেবু বেশ কার্যকরী। বেকিং সোডার পেস্ট তৈরি করে তাতে লেবুর রস মিশিয়ে নিন। এরপর টাইলসে থাকা দাগের ওপর পেস্টটি লাগিয়ে রাখুন। কিছুক্ষণ পর পরিষ্কার করে নিতে হবে। এতে করে টাইলসের তৈলাক্ত ভাব আর দাগ নিমিষেই দূর হয়ে যাবে।

জমিয়ে রাখবেন না কোনকিছুই: ভাজা পোড়ার পুরাতন তেল হোক কিংবা এঁটো থালাবাসন, রান্নাঘরের কোন কাজই জমিয়ে রাখা উচিত নয়। চেষ্টা করুন, এঁটো থালাবাসন অন্তত খানিকটা পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে। পরে নিজের সুবিধামত সময়ে সাবান দিয়ে ধুয়ে নিন। এ ছাড়া, প্রতিদিন ২০-২৫ মিনিট বরাদ্দ রাখুন সিঙ্ক ও চুলার আশেপাশের এরিয়া পরিষ্কারের জন্য। এসব স্থান ব্যবহার হয় বেশি, তাই খুব সহজে দাগ বসে যেতে পারে। তাই, এ জায়গাগুলো প্রতিদিন ক্লিন করে নেয়াই ভাল।

সিএন/এমএ

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন