আয়াত বিন নেওয়াজ চৌধুরী: আমার বয়স দশ বছর। আমি বর্তমানে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়াশোনা করছি। ২০১৯ সাল থেকে আমি আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে জানতে এবং বুঝতে শুরু করি। সেই বছর আমি অংকুর সোসাইটি স্কুল কর্তৃক আয়োজিত প্রতিযোগিতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কবিতা আবৃত্তি করে ৩য় স্থান লাভ করি। সেসময় আমার আনন্দের চেয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা আরো বেড়ে গেলো। তাঁর ত্যাগ, বজ্র কন্ঠে নেতৃত্ব, দেশপ্রেম, নিরীহ মানুষের জন্য ভালোবাসা সব আমার হৃদয় স্পর্শ করে। আমি তাঁর সম্পর্কে আরও জানতে আগ্রহী হয়ে উঠি।
২০১৯ সালে আমি কলকাতার ‘মাদার’স ওয়াক্স মিউজিয়ামে’ ঘুরতে গিয়ে সেখানে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি দেখে বেশ উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়ি। আমার কাছে মনে হয়েছিল বঙ্গবন্ধু স্বয়ং আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন! আমি তাকে ছুঁয়ে দেখেছিলাম,তাকে অনুভব করার চেষ্টা করেছিলাম!
২০২০ সালে ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ কর্তৃক আয়োজিত কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ৩য় স্থান অর্জন করি। আমি সময় পেলেই বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে রচনাবলী পড়ি, তাঁর ছবি আঁকি। পারি বা না পারি ভালোবাসা থেকে করার চেষ্টা করি। আমি আমার মা কে একদিন প্রশ্ন করি, অন্যায় হতে দেখলেও যেখানে মানুষ প্রতিবাদ করে না নিজেকে নিরাপদ রাখার জন্য, বঙ্গবন্ধু সেখানে নিশ্চিত বিপদ জেনেও কিভাবে ঝাঁপিয়ে পড়তেন? আমার মা জবাবে বলেন, ‘উনি দেশ ও মানুষের জন্য এত করেছেন বলেই উনি জাতির পিতা। তার দুর্বার নেতৃত্বের কারণেই আজ পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটা দেশ আছে।’
আমার কাছে মনে হয় বঙ্গবন্ধু এখনও দেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কারণ বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাবার আদর্শ বুকে ধারণ করেই দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
আমি গেল বছর ১৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে কিছু করতে চাইলে আমার মা বলেন, উনার জন্য নফল নামাজ পড়ে দিও, কোরআন শরীফ তেলাওয়াত করে দোয়া করে দিও। এটাই সব মুসলমানদের চাওয়া থাকে। আমি দোয়া করি যেন উনি যেখানে আছেন সেখানে যেন ভালো থাকতে পারেন। উনি এত এত ভালো কাজ করেছেন, এত মানুষের দোয়া উনি নিয়েছেন,আল্লাহ নিশ্চয়ই তাঁকে ভালো রাখবেন, ইনশা-আল্লাহ।
এ বছর আমি আমার ভালোবাসার প্রকাশ থেকে উনার (বঙ্গবন্ধু) জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আমার ঈদে পাওয়া ঈদি ও জমানো টাকা দিয়ে একটি সুন্দর কেক কিনতে চাই। যার চারপাশে সবুজ, মধ্যখানে লাল থাকবে ও বাংলাদেশের মানচিত্রের উপর বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি থাকবে। সেই কেক নিয়ে আমি আমার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সকল শিক্ষকমন্ডলী এবং সহপাঠীদের নিয়ে আমি উনার প্রতি শ্রদ্ধা ভালোবাসা ও বিনম্রতার প্রকাশ করতে চাই।
কিন্তু আমার আশা স্বপ্ন হয়ে থাকবে কি না জানি না।আমি গতবছরও এই উদ্যোগটি নিয়েছিলাম। কিন্তু কোভিড পরিস্থিতির জন্য তা আর করা সম্ভব হয় নি। আমার মা সবসময় সবখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি সম্মান ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। উনি বলেন, আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের ইতিহাসে উনার (শেখ হাসিনা) মত করে নারীদের নিয়ে কেও ভাবেনি। বেগম রোকেয়া যদি নারী জাগরণের অগ্রদূত হন, তাহলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হলেন নারীর স্বাবলম্বীতার অগ্রদূত।
আমার অনেক দিন ধরেই ইচ্ছা, আমি বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করে একসাথে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে কেক কাটার। কিন্তু আমি জানি না,আমার এ ইচ্ছে পুরণ হবে কি না।শিশু দিবসে আমার চাওয়া থাকবে,আমি সহ আরো যে শিশু আছে তারা একদিন প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করে তাঁর মুখে বঙ্গবন্ধুর জীবনী সম্পর্কে আরো জানতে চাই ও তাঁর আদর্শ বুকে ধারণ করতে চাই।মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমার আকুল আবেদন থাকবে তিনি যেন আমার এ ইচ্ছাটি পুরণ করেন।
আইআই/সিএন
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন