শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫

শিরোনাম

শ্রুতিলেখক না থাকায় সাদা খাতা জমা দিলেন ৭ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী

বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ১০, ২০২৫

প্রিন্ট করুন

সিএন প্রতিবেদন: চট্টগ্রামে মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিনে শ্রুতিলেখক না থাকায় কিছুই লিখতে পারেননি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সাত পরীক্ষার্থী। তাদের অভিভাবকদের অভিযোগ, স্কুল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় শ্রুতিলেখক অনুমোদন করা যায়নি। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি যথাযথ প্রক্রিয়া মানা হয়নি বলে শ্রুতিলেখক অনুমোদন করা হয়নি।

দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সাতজন হলেন- হাবিবুল হক রাতুল, মিনহাজ উদ্দিন, মারুফুর রহমান, রূপসা কানম, অপু দত্ত, লাকী আক্তার এবং খায়রুল ইসলাম। তারা চট্টগ্রাম নগরীর হামজারবাগ এলাকার রহমানীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তাদের পরীক্ষার কেন্দ্র পড়েছে নগরীর বাংলাদেশ মহিলা সমিতি (বাওয়া) উচ্চ বিদ্যালয়।

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) প্রথম পরীক্ষায় পরীক্ষাকেন্দ্রে কিছুসময় বসে থেকে কিছু লিখতে না পেরে একপর্যায়ে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সাত পরীক্ষার্থী কেন্দ্র ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। পরে অভিভাবকরা তাদের নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান।

জানা যায়, শ্রুতিলেখক নিয়োগের নীতিমালা হচ্ছে, তাকে সর্বোচ্চ অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া হতে হবে এবং বয়স ১৮ বছরের নিচে হতে হবে। কিন্তু দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীরা যাদের শ্রুতিলেখক হিসেবে ঠিক করেছিলেন, তাদের সবাই উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থী। যে কারণে পরীক্ষার আগে বিদ্যালয় থেকে তাদের এসব শ্রুতিলেখককে অনুমোদন করা হয়নি।

পরীক্ষার্থী যমজ দুই ভাই-বোন রূপসা খানম ও মো. মারুফের অভিভাবক মো. জসিম জানান, ‘শ্রুতিলেখক অষ্টম শ্রেণি কিংবা এর নিচের ক্লাসের শিক্ষার্থী হতে হবে, এটা আমাদের জানা ছিল না। আমার ওয়াইফ এবং বড় ছেলে স্কুলে নিয়মিত যায়। তাদের আগেভাগে কিছু বলা হয়নি। শেষমুহুর্তে এসে নিয়মের কথা বলে আমাদের বিপদে ফেলে দেয়া হয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয় রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা জেবুন নিছা খানম বলেন, ‘তারা এক সপ্তাহ ধরে আমাদের জানিয়েছে ক্লাস এইটের বাচ্চা ঠিক করেছে। কিন্তু আমাদের সামনে আনেনি। আমরা বারবার বলার পরেও তারা আনেনি। শেষে অনার্সের বাচ্চা নিয়ে আসছে অষ্টম শ্রেণির বলে। কিন্তু আমি যাচাই-বাছাই করে দেখি কলেজের ছেলে তাই অনুমোদন দেইনি। কাল রাতের ৯টা পর্যন্ত অপেক্ষা করি তাও তারা অষ্টম শ্রেণির বাচ্চা আনেনি। আমরা বোর্ডে যোগাযোগ করেছি। বোর্ড থেকে বলা হয়েছে নিয়মের বাহিরে কিছু করা যাবে না।

তিনি আরও বলেন, ওরা আমাদের বিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী। কিন্তু আমরা তো নিয়মের বাহিরে কিছু করতে পারি না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. পারভেজ সাজ্জাদ চৌধুরী বলেন, ‘শ্রুতিলেখক হিসেবে যাদের নেওয়া হয়েছিল, তাদের কেউ কেউ ইন্টারমিডিয়েটের ছাত্র ছিল। নীতিমালার বাইরে তো আমরা বিষয়টি অনুমোদন করতে পারি না। এছাড়া অভিভাবক ও স্কুল কর্তৃপক্ষের প্রত্যয়নের ক্ষেত্রেও কিছু সমস্যা ছিল।’

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন