নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র: যুক্তরাষ্ট্র হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের মত বিনিময় সভা গত ২৪ জানুয়ারি সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের ফ্লোরাল পার্কের গোল্ডেন ইয়ার্স কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সংগঠনের অন্যতম সভাপতি টমাস দুলু রায়ের সভাপতিত্বে এবং অন্য সভাপতি দ্বিজেন ভট্টাচার্য্যের তত্বাবধানে ও সাধারণ সম্পাদক বিষ্ণু গোপের সঞ্চালনায় সভায় সংগঠনের সদস্য, ডিরেক্টর ও কর্মকর্তা ছাড়াও সমাজের অন্য প্রতিষ্ঠানের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় গতে ৫ আগস্টের পর থেকে দেশে সরকারি প্রশ্রয়ে ও কোন কোন ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগীতায় সংঘটিত সামপ্রদায়িক সন্ত্রাস ও সংস্কারের নামে স্বাধীনতার মূল চেতনা ভাষা-ভিত্তিক বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতা বিরোধী অশুভ কার্যক্রম সম্পর্কে বক্তব্য দেন পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান নবেন্দু দত্ত ও সদস্য সচিব চন্দন সেনগুপ্ত, টম্স দুলু রায় ও রণবীর বড়ুয়া, ডিরেক্টর শিতাংশু গুহ, দিলীপ নাথ. পরেশ সাহা, তপন সেন, প্রদীপ মালাকার, ইউনাইটেড হিন্দুজ অফ ইউএসএর সভাপতি ভজন সরকার ও সাধারণ সম্পাদক রামদাস ঘরামী, বীর মুক্তিযোদ্ধা অবিনাশ আচার্য্য, রোজালিন কষ্টা, রিণা সাহা, রূপকুমার ভৌমিক, রণজিৎ রায়, অজিত চন্দ, অনুকুল অধিকারী, রণজিৎ ভাদুড়ী, রমেশ নাথ, রাখি মিত্র, পার্থ তালুকদার, কুমার বাবুল সাহা, রণজিৎ পুরকায়স্থ, পরেশ ধর, চঞ্চনা চাকমা, সুভাষ সাহা, গৌতম সরকার, মৈত্রিশর বড়ুয়া, পিয়াস দাস সুমন, সুজন রায, অমিত ঘোষ, সুকান্ত দাস টুটুল, সুমন মিত্র, রাজীব নন্দী, জলি সাহা, প্রদীপ কুন্ডু, মুনমুন সাহা, বামেশ রায়, বিকাশ বড়ুয়া, সঞ্জিত ঘোষ, ইন্দ্রজিৎ সরকার, হরিগোপাল বর্ম্মণ, আশীস কুমার পাল, সাধন দাস, গোপাল গোপ, নিতাই নাথ, প্রদীপ সূত্রধর, মোহনজী বানিয়া, মিতুল ভৌমিক, স্টিফেন মন্ডল।
দেশে তাদের বিপন্ন স্বজনদের মর্মস্পর্শী দু:খ দুর্দশার করুণ বিবরণ দিতে গিয়ে বক্তারা বলেন, ‘দেশ এখন কার্যত: তারাই চালাচ্ছে যারা ১৯৭১ সালে গণহত্যা করেছিল এবং আজও সেটাকে জোর গলায় সমর্থন করে।’
তারা বলেন, ‘একাত্তরের পরাজিত শক্তির ক্রীড়ানক ড. ইউনূস-রিয়াজ ও ছাত্র সমন্বয়ক মাহফুজরা সংবিধানে রাষ্ট্র ধর্ম-ইসলাম বহাল রেখে, ধর্মনিরপেক্ষতা ও ভাষা-ভিত্তিক বাঙালি জাতীয়তাবাদ ছেঁটে দিয়ে বাংলাদেশেকে মুসলিম বাংলায় পরিণত করতে উদ্যত। গত ৫ আগষ্টের পর থেকে দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর যে বর্বর আক্রমণ অব্যাহত রয়েছে, সেটা ঐ পরিকল্পনারই অংশ।’
বক্তারা বলেন, ‘যেহেতু কোন সরকারই কোন দিন সংখ্যালঘু নির্যাতকদের বিচার করেনি, এমনকি আওয়ামী লীগ সরকারও ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিশ্রুত সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন পাশ করেনি, তাই বাংলাদেশের ১৮ মিলিয়ন সংখ্যালঘু নাগরিকদের বাঁচার একমাত্র পথ দেশে তাদের জন্য কয়েকটি সংরক্ষিত স্বায়ত্বশাসিত এলাকা গঠন করা এবং সেপারেট ইলেক্টরেট চালু করা যা ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের জন্য ইংরেজ সরকার করেগিয়েছিল তারা স্রেফ সংখ্যালঘু বলে এবং যা ১৯৫৪ সালের নির্বাচন পর্যন্ত পাকিস্তানে চালু ছিল।’
সভায় বলা হয়, ‘একটি বিশদ সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন পাশ করতে হবে, যার মাধ্যমে সংখ্যালঘুদের ‘সংখ্যালঘু’ বলে এবং অদিবাসীদের ‘অদিবাসী’ বলে স্বীকৃতি দিতে হবে, ইসলামী ফাউন্ডেশনের আদলে হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টান ফাউন্ডেশন ও একটি সংখ্যালঘু কমিশন ও মন্ত্রণালয় গঠন করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের মত হেইট ক্রাইম ও স্পিচ আইন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
বিষ্ণু গোপ ও দ্বিজেন ভট্টাচার্য্য যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশী সংখ্যালঘু ব্যক্তিদের দেশে বিপন্ন সংখ্যালঘু নাগরিকদের সাহায্যে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানান।
সিএন/আলী
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন