সিএন প্রতিবেদন: জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, কমিশনের পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেওয়া ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়নের রূপরেখা’ তিন ধাপে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি ধাপে এমন সুপারিশ রয়েছে, যা সাংবিধানিক সংশোধন ছাড়াই অধ্যাদেশ বা অফিস আদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “প্রথম ধাপে এমন বিষয়গুলো রয়েছে, যেগুলো সরকার অবিলম্বে অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে পারে। দ্বিতীয় ধাপে আছে যেসব সিদ্ধান্ত প্রশাসনিক নির্দেশ বা অফিস অর্ডার দিয়েই কার্যকর করা সম্ভব। এসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোনো মতভেদ নেই।”
তিনি আরও জানান, কমিশনের তৃতীয় ভাগে রয়েছে সংবিধান-সংশ্লিষ্ট বিষয়। এসব বিষয়ে অনেক রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐকমত্য থাকলেও কিছু ভিন্নমতও দেখা গেছে। “সংবিধান সংশোধনের আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়নের পথনির্দেশ তৈরি করতেই আমরা তৃতীয় ভাগে বিস্তারিত সুপারিশ দিয়েছি,” বলেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
তিনি জানান, কমিশন সরকারকে দুটি বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছে। প্রথম প্রস্তাবে বলা হয়েছে—সরকার একটি আদেশ জারি করে গণভোট আয়োজন করতে পারে, যাতে জনগণের মতামতের ভিত্তিতে সংবিধান সংস্কারের পথ সুগম হয়। গণভোটে সম্মতি পেলে ১৩তম জাতীয় সংসদ একই সঙ্গে সংসদ ও সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে কাজ করবে, তবে সংস্কার পরিষদ মাত্র ১০ দিন কার্যকর থাকবে। এই সময়ে সদস্যরা সংবিধানে প্রয়োজনীয় সংশোধন, সংযোজন ও পরিমার্জন সম্পন্ন করবেন।
দ্বিতীয় বিকল্প প্রস্তাবেও গণভোটের কথা বলা হয়েছে, তবে সেখানে ৪৮টি বিষয়ের ওপর জনগণের মতামত নেওয়ার পাশাপাশি ‘অন্তর্বর্তী সরকার বিল’ আকারে সংস্কারের প্রস্তাব উপস্থাপনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আলী রীয়াজ বলেন, “সংবিধান সংস্কার পরিষদের সদস্যরা সংসদ সদস্য হলেও তারা আলাদাভাবে শপথ নেবেন এবং নিজস্ব কার্যপ্রণালী তৈরি করবেন। স্পিকার পরিষদের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।”
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, সংবিধান সংস্কার পরিষদ যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করবে এবং কোনো অবস্থাতেই সরকারের প্রস্তাবিত বিলগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে গৃহীত হবে না।



চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন