শুক্রবার, ০১ আগষ্ট ২০২৫

শিরোনাম

সন্তানের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হচ্ছে? যা করবেন

বৃহস্পতিবার, জুলাই ৩১, ২০২৫

প্রিন্ট করুন
সন্তান

“আমার সন্তান আমার সঙ্গে আগের মতো খোলামেলা কথা বলে না”, “সে এখন সব কিছু একা একাই করতে চায়, বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটায়, আমাদের এড়িয়ে চলে।” আজকাল অনেক মা-বাবাই অভিযোগ করেন।

আসলে এটি একটি খুব স্বাভাবিক পরিবর্তন— বিশেষ করে বয়ঃসন্ধির সময়ে এমন আচরণ দেখা যায়। তবে এই পরিবর্তনের পেছনে পুরোপুরি সন্তানকে দোষ দেওয়া যাবে না। অনেক সময় মা-বাবার ব্যস্ততা, সময় না দেওয়া কিংবা অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণও সন্তানের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করে। এই দূরত্ব কাটিয়ে সন্তানের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাইলে কিছু কৌশল অবলম্বন করতেই হবে।

কেন দূরত্ব তৈরি হয়?

অতিরিক্ত কাজের চাপের কারণে সন্তানকে সময় না দেওয়া, সন্তানের চিন্তা-ভাবনাকে গুরুত্ব না দেওয়া, সবসময় উপদেশ বা শাসন দিয়ে কথা বলা, সন্তানের বন্ধু বা মনের মানুষ হওয়ার বদলে “নিয়ন্ত্রক অভিভাবক” হয়ে ওঠা, ডিজিটাল ডিভাইসের প্রতি সন্তানের আসক্তি, যা তাকে একা সময় কাটাতে উৎসাহিত করে।

এসব কারণে সন্তানের সঙ্গে এক সময় দূরত্ব তৈরি হয়। ফলে সে নিজের কথা বলতে চায় না, কষ্ট লুকিয়ে রাখে এবং বাইরের জগতে আশ্রয় খোঁজে।

কী করবেন বাবা-মা?

সন্তানকে সময় দিন, কিন্তু উপদেশ নয়

আপনার হয়তো সারা দিন অফিস ও সংসারের কাজ

আপনার হয়তো সারা দিন অফিস ও সংসারের কাজ থাকে, তবে প্রতিদিন অন্তত ১৫-৩০ মিনিট একান্ত সময় সন্তানের জন্য রাখুন। এই সময়ে মোবাইল, টিভি বা ল্যাপটপ বন্ধ রাখুন। কেবল তার সঙ্গে গল্প করুন। তার স্কুলের দিন কেমন কাটল, নতুন কিছু শিখল কি না, কোন বন্ধুর সঙ্গে ঝগড়া হয়েছে কি না— এসব বিষয় শুনুন। উপদেশ দেওয়ার বদলে মনোযোগ দিয়ে শুনুন। এতে সন্তান বুঝবে, “আমার বাবা-মা আমাকে গুরুত্ব দেন।”

রুটিনে সন্তানকে অন্তর্ভুক্ত করুন

সন্তানের দৈনন্দিন রুটিনের অংশ হোন। তাকে স্কুলে দিয়ে আসা, স্কুল থেকে আনা, টিফিন তৈরি করা, হোমওয়ার্কে সহায়তা করা, একসঙ্গে ডিনার করা— এসব ছোট ছোট কাজে সঙ্গ দিন।
শুধু পড়াশোনা নয়, সন্তানের খেলাধুলা, শখ, মনের অনুভূতি এসবও গুরুত্ব দিন। এতে করে সে বুঝবে আপনি কেবল “রেজাল্ট চাওয়া অভিভাবক” নন, একজন বন্ধু।

সন্তানের স্বাধীনতাকে সম্মান করুন

সন্তানের স্বাধীনতাকে সম্মান করুন

নতুন প্রজন্ম (Gen Z বা Gen Alpha) অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী ও তথ্যভিত্তিক। তারা চায় শ্রদ্ধা, সমঝোতা ও স্বাধীনতা। সন্তানের ভুলগুলো ধরিয়ে দেওয়ার আগে তার দৃষ্টিভঙ্গি বোঝার চেষ্টা করুন। কোন কাজ করতে চাইলে আগে শুনুন সে কেন তা চায়, তারপর যুক্তিপূর্ণভাবে আলোচনা করুন। এতে সন্তানের মধ্যে বিচার-বুদ্ধি গড়ে উঠবে এবং সে আপনার উপদেশ গ্রহণ করতে শিখবে।

বন্ধুর মতো আচরণ করুন

সন্তান

সবসময় সন্তানকে “প্যারেন্টাল ভয়ে” না রেখে এমন এক সম্পর্ক গড়ে তুলুন যাতে সে যে কোনো বিষয় সহজে শেয়ার করতে পারে। সপ্তাহে অন্তত একদিন একসঙ্গে সিনেমা দেখা, ঘুরতে যাওয়া বা প্রিয় কোনো হোটেলে খাওয়া— এসব করতে পারেন। সন্তান যেটা পছন্দ করে, সেটাতে অংশগ্রহণ করুন। এতে করে আপনার প্রতি তার নির্ভরতা বাড়বে।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন