সোমবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৫

শিরোনাম

হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে হামলা তীব্র করার হুমকি ইসরাইলের

রবিবার, নভেম্বর ২, ২০২৫

প্রিন্ট করুন

ইসরাইল দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান আরও জোরদার করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। এর একদিন আগে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, ইসরাইলি বিমান হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন।

যদিও ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে লেবাননের এই গোষ্ঠীর সঙ্গে ইসরাইলের যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়, তবুও ইসরাইল এখনো দক্ষিণ লেবাননের পাঁচটি এলাকায় সেনা মোতায়েন রেখেছে এবং নিয়মিত হামলা চালাচ্ছে।

রোববার (২ নভেম্বর) ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাটজ এক বিবৃতিতে বলেন, হিজবুল্লাহ আগুন নিয়ে খেলছে, আর লেবাননের প্রেসিডেন্ট বিষয়টি নিয়ে দেরি করছেন। লেবানন সরকারকে হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করতে হবে এবং দক্ষিণ লেবানন থেকে তাদের সরাতে হবে। সর্বোচ্চ প্রয়োগ চলবে এবং তা আরও তীব্র হবে—উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দাদের ওপর কোনো হুমকি সহ্য করা হবে না।

ইসরাইলের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক মূল্যায়নে দেখা গেছে হিজবুল্লাহ আবারও তাদের সক্ষমতা পুনরুদ্ধার করছে এবং সিরিয়া থেকে শত শত স্বল্প-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র চোরাইপথে লেবাননে নিয়ে এসেছে। তিনি আরও জানান, ইসরায়েল লেবাননকে সতর্কবার্তা দিয়েছে—যদি হিজবুল্লাহ নিরস্ত্র না হয়, তবে বৈরুতের দক্ষিণ উপশহর আবারও বোমা হামলার মুখে পড়তে পারে।

২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর হিজবুল্লাহর রকেট হামলার কারণে ইসরাইল-লেবানন সীমান্তের উত্তরাঞ্চলের হাজারো বাসিন্দা মাসের পর মাস ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। এ সংঘাত এক বছরের বেশি স্থায়ী হয় এবং দুই মাসের উন্মুক্ত যুদ্ধের পর ২০২৪ সালের শেষের দিকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়।

ইরান-সমর্থিত এই গোষ্ঠীটি যুদ্ধে ব্যাপকভাবে দুর্বল হয়ে পড়লেও এখনো অস্ত্র ও আর্থিকভাবে টিকে আছে। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ইসরাইল হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহসহ সংগঠনের অনেক শীর্ষ নেতাকে হত্যা করে।

যুদ্ধবিরতির পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র লেবানন সরকারকে হিজবুল্লাহ নিরস্ত্র করার জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছে, যদিও হিজবুল্লাহ ও তাদের মিত্ররা এ পরিকল্পনার বিরোধিতা করছে।

সর্বশেষ হামলা

যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও ইসরাইল লেবাননে বিমান হামলা বন্ধ করেনি। ইসরাইলি বাহিনী দাবি করে, এসব হামলার লক্ষ্য হিজবুল্লাহর অবস্থান। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে এসব হামলা আরও বেড়েছে।

গত বৃহস্পতিবার ইসরাইলি স্থলবাহিনী দক্ষিণ লেবাননে এক প্রাণঘাতী অভিযানে যায়, যার পর লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন সেনাবাহিনীকে এসব অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের নির্দেশ দেন।

গত অক্টোবরের মাঝামাঝি তিনি ইসরাইলের সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছিলেন, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি করাতে মধ্যস্থতা করেন। তবে আউনের অভিযোগ, তার আলোচনার প্রস্তাবের জবাবে ইসরাইল বরং হামলা আরও বাড়িয়েছে।

লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার (১ নভেম্বর) দক্ষিণ লেবাননের নাবাতিয়েহ জেলায় ইসরাইলি বিমান হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। লেবাননের সরকারি বার্তা সংস্থা ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, ইসরাইলি সেনারা একটি গাড়িতে ‘গাইডেড মিসাইল’ নিক্ষেপ করে।

ইসরাইলি সামরিক বাহিনী হামলার সত্যতা স্বীকার করে বলেছে, নিহতদের মধ্যে হিজবুল্লাহর রাদওয়ান বাহিনীর এক সদস্য ছিলেন।

সেনাবাহিনী আরও জানিয়েছে, ওই সন্ত্রাসী অস্ত্র পরিবহন ও দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর সন্ত্রাসী অবকাঠামো পুনর্গঠনের কাজে জড়িত ছিল। এ কার্যক্রম ইসরাইল ও এর নাগরিকদের জন্য হুমকি এবং ইসরাইল-লেবানন চুক্তির লঙ্ঘন।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন