জোনাইদ হোসেন:
মহান মুক্তিযুদ্ধ আমাদের হাজার বছরের ইতিহাসে গৌরবময় ঘটনা। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বিশ্ব মানচিত্রে জেগে ওঠে নতুন এক দেশ। অনেক আশা স্বপ্ন ও প্রত্যাশায় সোনার বাংলাদেশ। জাতি হিসেবে আমরা খুবই সৌভাগ্যবান যে অতি অল্প সময়ে স্বাধীনতা পেয়েছি। পাকিস্তানের অত্যাচার ও দীর্ঘ অর্থনৈতিক শোষণে জর্জরিত স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশেকে বলা হয়েছে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’।
২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমরা পালন করব বিজয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী। দীর্ঘ এই ৫০ বছরে বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে উপনীত হয়েছে অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায়। সারা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল এখন বাংলাদেশে। ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত রাষ্ট্র হওয়ার স্বপ্ন দেখছি আমরা। পাশাপাশি বিগত ৫০ বছরে হিমালয় জয় থেকে শুরু করে নোবেল শান্তি পুরস্কার, আফ্রিকার অশান্ত অঞ্চল কে শান্ত করা সহ সমগ্র বিশ্বে রেখেছি গৌরবময় পদচারণা। বিশ্বমঞ্চে সম্মানের আসনে অধিষ্ঠিত করতে পেরেছি নিজেদের দেশকে।
জাতিসংঘে বাংলাদেশঃ
বাংলাদেশ জাতিসংঘের ১৩৬ তম সদস্য। ৮ আগস্ট ১৯৭২ বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভের জন্য প্রথম আবেদন করে। ২৫ আগস্ট নিরাপত্তা পরিষদে চীন এর বিরোধিতা করে। ১৭ অক্টোবর ১৯৭২ বাংলাদেশ জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক রাষ্ট্রের মর্যাদা লাভ করে। ১৯৭৩ সালে পুনরায় বাংলাদেশের সদস্যপদ লাভের প্রস্তাবে চীন ভেটো দেয়। পরবর্তীতে ১০জুন ১৯৭৪ নিরাপত্তা পরিষদের সভায় চীনসহ সদস্য দেশগুলো জাতিসংঘে বাংলাদেশেকে সদস্যপদ দেয়ার সুপারিশ করে। ১৭সেপ্টেম্বর ১৯৭৪ জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে।
বাংলায় ভাষণঃ
২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭৪ জাতিসংঘের ২৯ তম সাধারণ অধিবেশনে বাংলায় ভাষণ দেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এ ভাষণের মাধ্যমে প্রথম কোন বিশ্বসভায় আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলা ভাষা ব্যবহৃত হয়।
সাধারণ পরিষদের সভাপতিঃ
বাংলাদেশ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে দুইবার সভাপতি নির্বাচিত হয়। প্রথমবার ১৯৮৬ সালে, দ্বিতীয়বার ১৯৯৯ সালে। উল্লেখ্য, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করা একমাত্র বাংলাদেশী হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী।
নিরাপত্তা পরিষদে বাংলাদেশঃ
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বাংলাদেশ এ পর্যন্ত দুইবার সদস্য পদ লাভ করে। প্রথমবার সদস্যপদ লাভ করে ১০ নভেম্বর ১৯৭৮ (১৯৭৯-৮০মেয়াদে)এবং দ্বিতীয়বার ১৪অক্টোবর ১৯৯৯(২০০০-০১মেয়াদে)। এ মেয়াদের মধ্যে ১৯৭৯ সালের অক্টোবর, ২০০০ সালের মার্চ এবং ২০০১ সালের জুন মাসে নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে বাংলাদেশ।
শান্তিরক্ষী মিশনে বাংলাদেশঃ
১৯৮৮ সালে ইরান-ইরাক শান্তি মিশনে (United Nations Iran-Iraq Military Observer Group) বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৫ জন সদস্যের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের পথচলা। ১৯৮৯ সালে নামিবিয়া মিশনের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে যুক্ত হয়। ১৯৯০ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর শান্তিরক্ষা মিশনে যোগ দেয়। ১৬ মে ২০১০ হাইতিতে যোগদানের মাধ্যমে বাংলাদেশে নারী পুলিশের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের পদচারণা শুরু হয়। জাতিসংঘের “ডিপার্টমেন্ট অব পিসকিপিং অপারেশনস” প্রতিবেদন অনুসারে ৩১ মার্চ ২০২১ পর্যন্ত সর্বোচ্চ সেনা প্রেরণকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল বিশ্বে সবার শীর্ষে। বিশ্বশান্তি রক্ষায় বিভিন্ন মিশনে এ পর্যন্ত জীবন দিয়েছে ১৪৯ জন। আহত হয়েছে ২৪০ জন। বর্তমানে বাংলাদেশের ২৮৪ জন নারী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে দায়িত্ব পালন করছে। বাংলাদেশ এ পর্যন্ত ৪০ টি দেশের ৫৪ টি মিশনে শান্তি রক্ষার দায়িত্ব পালন করেছে।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্যপদ লাভঃ
স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশে প্রথম ১৮ এপ্রিল ১৯৭২ আন্তর্জাতিক সংস্থা কমনওয়েলথ এর সদস্যপদ লাভ করে। বাংলাদেশ কমনওয়েলথের ৩২তম সদস্য। এছাড়াও জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন, বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক গুরুত্বপূর্ণ সকল সংস্থার সদস্য বাংলাদেশ।
নোবেল পুরস্কারঃ
২০০৬ সালে ড. মুহাম্মদ ইউনুস নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তিনি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের একজন শিক্ষক। গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ও ক্ষুদ্রঋণ ধারণার প্রবর্তক । তার নোবেল প্রাপ্তির মাধ্যমে বিশ্বে বাংলাদেশের মর্যাদা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসঃ
২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ১৭ নভেম্বর ১৯৯৯ ইউনেস্কোর ২৯ তম অধিবেশনে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা দেওয়া হয়। ৩ নভেম্বর ২০১০ জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের চতুর্থ কমিটিতে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের প্রস্তাব উত্থাপন করে এবং প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।
বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশী শিক্ষক ও ছাত্রঃ
২০১৫ সালে একদল বিজ্ঞানীর ভাইল ফার্মিয়ন কণা আবিষ্কারের পর সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি হয়।মার্কিন বাংলাদেশী বিজ্ঞানী জাহিদ হাসান ছিলেন ঐ দলের দলনেতা।
প্রয়াত প্রফেসর জামাল নজরুল ইসলাম ছিলেন বিশ্ববিখ্যাত পদার্থবিদ স্টিফেন হকিং এর সহকর্মী। জামাল নজরুল ইসলামের লিখিত বিখ্যাত ‘বই দি আল্টিমেট ফেইট অফ দি ইউনিভার্স ‘(১৯৮৩) বিশ্বের নামিদামী অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত।
এছাড়াও বাংলাদেশের অনেক শিক্ষক যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, জার্মান, ভারতসহ বিশ্বের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে সুনামের সাথে শিক্ষকতা করছেন।
বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর শত শত ছাত্র বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে যাচ্ছে। অনেকে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদে নেতৃত্বও দিচ্ছেন।
এভারেস্টের চূড়ায় বাংলাদেশঃ
২৩ মে ২০১০ প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেন মুসা ইব্রাহিম। ২১ মে ২০১১ দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয় করেন এম এ মুহিত। তিনিই প্রথম বাংলাদেশী যিনি দুইবার এভারেস্ট জয় করেন। ১৯ মে ২০১২ প্রথম বাংলাদেশী নারী হিসেবে এভারেস্ট জয় করেন নিশাত মজুমদার।
সেভেন সামিট জয়ঃ
পৃথিবীর সাত মহাদেশের সাতটি শীর্ষ চুড়াকে একসাথে সেভেন সামিট বলা হয়। ওয়াসফিয়া নাজনীন বাংলাদেশের প্রথম পর্বতারোহী হিসেবে সেভেন সামিট জয় করেন। তিনি এখন পর্যন্ত সর্বকনিষ্ঠ বাংলাদেশী এবং দ্বিতীয় বাংলাদেশি নারী হিসেবে ২৬ মে ২০২১ বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্ট জয় করেন।
সার্ক গঠনের উদ্দ্যোগতা বাংলাদেশঃ
দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (SAARC) গঠনের মূল উদ্যোক্তা বাংলাদেশ। ৮ ডিসেম্বর ১৯৮৫ ঢাকায় শীর্ষ সম্মেলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও পাকিস্তান নিয়ে সার্ক গঠিত হয়। ২০০৭ সালে আফগানিস্তান সার্কের সদস্য হয়।
বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের দূতাবাসঃ
বর্তমানে মোট ৫৮ টি দেশে বাংলাদেশের ৭৮ টি মিশন রয়েছে। এই মিশনগুলোর মধ্যে ১১টি দূতাবাস নিজস্ব জমিতে অবস্থিত। এগুলো হলো চীনের বেইজিং, বেলজিয়ামের ব্রাসেলস, ভারতের নয়াদিল্লি ও কলকাতা, যুক্তরাজ্যের লন্ডন, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়া, ডেনমার্কের কোপেনহেগেন, সৌদি আরবের রিয়াদ, জাপানের টোকিও, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ও নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের স্থায়ী মিশন।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশঃ
মিয়ানমার থেকে রাষ্ট্র ও উগ্র বৌদ্ধদের নির্যাতন নিপিড়নের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা। ১৯৭৮ সালের প্রথম ২ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশ আসে। পর্যায়ক্রমে ২০১৭ সাল পর্যন্ত প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছে। যাদেরকে কক্সবাজার ও ভাসানচরে পুনর্বাসন করে খাদ্য, আশ্রয়, স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপদ পানি সহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেয়া হচ্ছে।
বৈশ্বিক পুরস্কার ও সম্মাননা লাভঃ
স্বাধীনতা পরবর্তী ৫০ বছরে বাংলাদেশের শত সহস্র ব্যক্তি ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বিশ্বের প্রায় সমস্ত মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার, সম্মাননা ও উপাধি লাভ করেছেন।
২৩ মে ১৯৭৩ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জুলিও কুরি শান্তি পুরস্কার লাভ করেন।
১৯৯৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদার তেরেসা পুরস্কার লাভ করেন, এছাড়াও প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন, এসডিজি অগ্রগতি পুরস্কারসহ অসংখ্য আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেন তিনি।
স্বাধীনতা পরবর্তী ৫০ বছরে দুজন বাংলাদেশী যুক্তরাজ্যের মর্যাদাপূর্ণ নাইট উপাধি লাভ করেন। একজন ফজলে হাসান আবেদ ও অপরজন আখলাকুর রহমান চৌধুরী।
২০২১ সালে জাপানের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘অর্ডার অফ দ্য রাইজিং সান’ লাভ করেন দু জন বাংলদেশী। মতিউর রহমান ও মোঃ আবু সায়েদ।
এছাড়াও সাংবাদিকতা, শিক্ষা,সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য অসংখ্য বাংলাদেশী বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেছেন।
খেলাধুলায় বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশঃ
১৯৮৭ সালে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রথম গ্র্যান্ড মাস্টার হন নিয়াজ মোর্শেদ।১৯৯০ সালের কমনওয়েলথ গেমসে প্রথম স্বর্ণজয় করে বাংলাদেশ। ২০১০ সালে ব্রুনাই ওপেন ও ২০১৩ সালে হিরো ইন্ডিয়া ওপেন জয় করেন গলফার সিদ্দিকুর রহমান ২০১৮ সালে রোমান সানা বিশ্ব আর্চারি প্রতিযোগিতায় তৃতীয় হয়ে হইচই ফেলে দেন।২০১৮ সালে নারী ক্রিকেট দল এশিয়া কাপ জয় করে।ওয়ানডে, টেস্ট ও টি২০ ক্রিকেটের তিন ফরমেটেই বিশ্বের ১ নম্বর অলরাউন্ডার হন সাকিব আল হাসান।টেবিল টেনিসের নারী এককে টানা ১৬ বার জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়ে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস’-এ নাম লিখিয়েছেন জোবেরা রহমান লিনু। ২০১১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও ২০১৪ সালের টি২০ বিশ্বকাপের সফল আয়োজক বাংলাদেশ।২০২০ সালের অনূর্ধ্ব ১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ।
বৈশ্বিক পার্লামেন্টে বাংলাদেশিঃ
১৮ জুলাই ১৯৯৮ ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাউস অব লর্ডসে প্রথম বাঙালি হিসেবে নিযুক্ত হন পলা মঞ্জিলা উদ্দিন। ২০১০ সালে প্রথম বাঙালি হিসেবে হাউস অব কমন্সে নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস গড়েন রুশনারা আলী। ২০১৫ সালে নির্বাচিত হন আরও দুই বাঙালি টিউলিপ সিদ্দিক ও রুপা হক। ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে এই তিনজনের সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হন আফসানা বেগম।
২০২১ সালে সুইজারল্যান্ডের জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশনে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন প্রবাসী বাংলাদেশী সুলতানা খান।
৬ মে ২০২১ স্কটল্যান্ডের পার্লামেন্ট সদস্য হন বাংলাদেশি ফয়সাল হোসেন চৌধুরী।
এ ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন আঞ্চলিক পার্লামেন্টে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নাগরিকরা প্রতিনিধিত্ব করছেন।
বিশ্ব ঐতিহ্যে বাংলাদেশঃ
ইউনেস্কোর একটি প্রকল্প রয়েছে, যার নাম আন্তর্জাতিক বিশ্ব ঐতিহ্য প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় ২১ টি রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটি বিশ্বের বিভিন্ন ঐতিহ্যের তালিকা প্রণয়ন করে থাকে। ইউনেস্কো স্বীকৃত বাংলাদেশের ঐতিহ্য গুলো হলঃ
বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্যঃ
৭ মার্চের ভাষণ। তালিকাভুক্ত হয় ৩০অক্টোবর ২০১৮
অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যঃ
- ১. বাউল সংগীত, ঘোষনাঃনভেম্বর ২০০৮
- ২.জামদানি,ঘোষনাঃ ৪ডিসেম্বর২০১৩
- ৩.মঙ্গল শোভাযাত্রা,ঘোষনাঃ ৩০ নভেম্বর ২০১৬
- ৪. শীতলপাটির বয়ন পদ্ধতি,ঘোষনাঃ৬ ডিসেম্বর ২০১৭
বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যঃ
- ১. ঐতিহাসিক মসজিদের শহর বাগেরহাট ৩২১ তম
- ২. পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার ৩২২ তম
- ৩. সুন্দরবন ৭৯৮ তম
- ৪. ১৩ খাতে বিশ্বে ১ম – ৮ম অবস্থানে বাংলাদেশঃ
প্রথমঃ ইলিশ উৎপাদন।
দ্বিতীয়ঃ আউটসোর্সিং, পাট উৎপাদন, কাঁঠাল উৎপাদন,ছাগলের দুধ উৎপাদন।
তৃতীয়ঃ তৈরি পোশাক রপ্তানি, ধান উৎপাদন, সবজি উৎপাদন, মিঠা পানির মাছ উৎপাদন।
সপ্তমঃ আলু উৎপাদন, প্রবাসী আয়, আম উৎপাদন।
অষ্টমঃ পেয়ারা উৎপাদন।
বাংলাদেশ অপার সম্ভাবনাময় একটি দেশ। বিশ্বকবির সোনার বাংলা, নজরুলের বাংলাদেশ, জীবনানন্দের রূপসী বাংলা, পদ্মা- মেঘনা – যমুনা বিধৌত অপরূপ সুন্দর বাংলাদেশ। স্বাধীনতার ৫০ বছরে আমাদের প্রাপ্তি অনেক। বিশ্বমঞ্চে ও আমাদের ভূমিকা মর্যাদাপূর্ন। কিন্তু আমরা চাইলে এই প্রাপ্তি ও ভূমিকা আরো বেশি হতে পারতো। সামনের দিনগুলোতে সামর্থের সবটুকু দিয়ে বিশ্বের জন্য বাংলাদেশ কাজ করে যাবে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এটিই আমাদের প্রত্যাশা। তখন আমরা বলব কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায় এর কবিতায়- “এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি। সকল দেশের রানী সে যে আমার জন্মভূমি।”
তথ্যসুত্রঃ ইন্টারনেট, কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স।
লেখকঃ সাংবাদিক
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন