রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

৫ দিনে ৫ খাতে ক্ষতি ১৪ হাজার কোটি টাকা: আল জাজিরার প্রতিবেদন

বুধবার, জুলাই ২৪, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে গত কয়েক দিন রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফলে দেশজুড়ে কারফিউ জারির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। একই সঙ্গে মোতায়েন করা হয় সেনাবাহিনী।

সেনাবাহিনী কাজ শুরু করার পর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। তবে এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে প্রায় এক সপ্তাহ। ইন্টারনেট ও অন্যান্য পরিসেবা বন্ধ এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হওয়ায় কয়েক দিন কারখানাও বন্ধ রাখতে হয়। ফলে পাঁচ খাতে দেশের অন্তত ১৪ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

ব্যবসায়ী নেতাদের বরাত দিয়ে আল-জাজিরা জানায়, গেল পাঁচ দিনে শুধু পোশাক ও স্টিল খাতসহ আরও তিন খাতে বাংলাদেশের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে এক দশমিক দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকার বেশি।

আল জাজিরাকে বিজিএমইএর প্রেসিডেন্ট এসএম মান্নান কোচি জানান, নিরাপত্তাজনিত কারণে গেল শনিবার থেকে সব গার্মেন্টস বন্ধ রাখতে হয়। সে সঙ্গে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকায় তৈরি পোশাক রপ্তানিতেও প্রভাব পড়ে। ফলে প্রতিদিন এ খাতে ক্ষতি হয়েছে দেড়শ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় এক হাজার ৭৬৪ কোটি টাকা। পাঁচ দিনে সে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় আট হাজার ৮২৪ কোটি টাকার বেশি।

এসএম মান্নান বলেন, এমন পরিস্থিতির কারণে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো আমাদের ওপর থেকে আন্তর্জাতিক ক্রেতারা আস্থা হারাচ্ছেন। এই ক্ষতি শুধু অর্থ দিয়ে পরিমাপ করা যাবে না বলেও জানান তিনি। বলেন, দেশের সবচেয়ে মূল্যবান শিল্পের ওপর দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

শুধু পোশাক শিল্পই নয়, ক্ষতির মুখে পড়েছে স্টিল খাতও। এ খাত সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন, গেল পাঁচ দিনে তাদের ক্ষতি হয়েছে ১৩৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় এক হাজার ৬০০ কোটি টাকার বেশি।

বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সুমন চৌধুরী বলেন, তারা বন্দর থেকে কাঁচামাল খালাস করতে পারছে না, ফলে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।

বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে সিরামিক খাতও। তাদের শঙ্কা, দৈনিক প্রায় ৮০ লাখ মার্কিন ডলার মূল্যের রপ্তানি আদেশ হারাতে হবে, যা পাঁচ দিনে ৪৭০ কোটি টাকারও বেশি। ইকমার্স খাতেও বড় লোকসান গুনতে হয়েছে ফেসবুক ভিত্তিক ব্যবসায়ীদের। বলা হচ্ছে, এ খাতে প্রতিদিন ক্ষতি হয়েছে অন্তত ৫০ লাখ মার্কিন ডলার করে, যা পাঁচ দিনে ২৯৪ কোটি টাকার বেশি। এছাড়া ফার্মাসিউটিক্যালস খাতও বড় ক্ষতির মুখে পড়েছে বলে দাবি করা হয়।

কল সেন্টারগুলোর বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয় আল জাজিরার ওই প্রতিবেদনে। বলা হয়, দৈনিক ৩০ লাখ ডলার করে ক্ষতি হয়েছে এ খাতে। পাঁচ দিনে সে ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়েছে- ১৭৬ কোটি টাকা। তবে সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা এবং যানবাহন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সে তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।

Views: 2

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন