কক্সবাজার (পেকুয়া) প্রতিনিধি: কক্সবাজারের পেকুয়ায় যুবককে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভবনে দশ ঘন্টা আটক রেখে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। রোববার (৩০ জানুয়ারি) সকালে উপজেলার মগনামা ইউপির ভবনে এ ঘটনা ঘটে।
আহত যুবক আবদুল হাকিম মগনামা ইউনিয়নের কোদাইয়্যাদিয়া এলাকার আশরাফ মিয়ার ছেলে।
ইউপি ভবন থেকে আহত অবস্থায় আব্দুল হাকিমকে উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন পিতা আশরাফ মিয়া। অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসক তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে রেফার করেন।
আশরাফ মিয়া জানান, ইউপি নির্বাচনের ভোট দেয়াকে কেন্দ্র করে আমার ছেলেকে মগনামা ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে ধরে নিয়ে গিয়ে চেয়ারম্যান ইউনুছ চৌধুরী উপস্থিতিতে কয়েক জন গ্রাম পুলিশ ও একই এলাকার জিয়াউর রহমান, নুর মোহাম্মদ, কান ফুল বাহিনীর প্রধান দিদার, আমিনুল কবির, মঞ্জুর আলম ও শোয়েব মিলে মারধর করে গুরুতর আহত করেছে। আহত করার পর বেশ কয়েক ঘন্টা ছেলেকে আটকে রাখা হয়। আমি যখন আনতে যায়, তখন সাদা কাগজে সই নিয়ে ছেলেকে মুমূর্ষু অবস্থায় আমার হাতে তুলে দেন।’
আহত যুবক আবদুল হাকিম বলেন, ‘আমার স্ত্রী অসুস্থ। তাই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার গাড়ি দাঁড় করিয়ে সড়কের ইটগুলো ঠিক করছিলাম। ওই সময় স্থানীয় কিছু লোক চৌকিদারদের খবর দিয়ে নিয়ে আসেন। এক পর্যায়ে তারা আমাকে বকাঝকা করে চলে যান। চিকিৎসা শেষে দুপুরে স্ত্রীকে বাড়িতে রেখে কাজি মার্কেট আসামাত্র ইট চুরি করার অভিযোগ তুলে কয়েক জন চৌকিদার আমাকে পথ গতিরোধ করে মারধর শুরু করে। টানাহেঁচড়া করে ইউপি ভবনে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান ইউনুছের সামনে বেদড়ক পেটাতে থাকে। ওই সময় চেয়ারম্যান থানায় খবর দিয়ে আমাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়ার চেষ্টা করে। পুলিশ আমাকে গুরুতর আহত দেখে ইউনিয়ন পরিষদে রেখে চলে যায়। এরপর আমার বৃদ্ধ পিতা লোকজন নিয়ে উদ্ধার করে আমাকে।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মগনামা ইউপির চেয়ারম্যান ইউনুছ চৌধুরী বলেন, ‘আবদুল হাকিম সড়কের ইট চুরি করার সময় চৌকিদার বাধা দিলে তাদের মারধর করে আহত করে। এরপর তাকে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসলেও আমি পরিষদে ছিলাম না। তাকে মারধরের বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই।’
পেকুয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কানন সরকার বলেন, ‘আমি যতটুকু জেনেছি, আবদুল হাকিম তার গর্ভবতী স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছিলেন। সড়কের ইট এলোমেলো থাকায় গাড়ি থেকে নেমে তিনি ইটগুলো ঠিক করছিল। তবে কিছু ইট নাকি তিনি বাড়িতেও নিয়ে গিয়েছিল। এ অভিযোগে তাকে চৌকিদাররা ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যায়। সেখানে হাতাহাতি হয়। ইউনিয়ন পরিষদের লোকজন থানায় ফোন দিয়ে বলে আবদুল হাকিমের কাছে ওয়ারেন্ট রয়েছে। ইউপি কার্যালয়ে গিয়ে কাগজপত্র বিশ্লেষণ করে দেখি, তার কাছে ওয়ারেন্ট নাই। এ বিষয়ে পরিবারে পক্ষ থেকে অভিযোগ দিলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
সিএন/এমএ
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন