চট্টগ্রাম: বর্ষা শুরুর আগে সিটির সব খাল থেকে মাটি উত্তোলন করে জলজটের সমূহ সম্ভাবনা দূরীকরণে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে জানিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্পের যে কাজ চলছে, এ কাজ বাস্তবায়নকারী সংস্থাকে দায়িত্ব নিয়ে আগামী বর্ষায় যাতে কোন ধরণের জলজট না হয়, সে বিষয়ে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে। এছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে নিরপত্তা বেষ্টনী না থাকার ফলে জানমালের যে ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে, তার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, সে দিকে বাস্তবায়নকারী সংস্থাকে সতর্ক দৃষ্টি রেখে কাজ করতে হবে।’
সোমবার (২৮ মার্চ) দুপুরে সিটির আন্দরিকল্লাস্থ পুরাতন নগর ভবনের কেবি আবদুচ সাত্তার মিলনায়তনে চসিকের ষষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের ১৪তম সাধারণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সভাপতির বক্তৃতায় রেজাউল করিমন সিটির মেগা প্রকল্পের আওতার বাইরে যে ২১টি খাল রয়েছে, সেখালগুলোর সঠিক অবস্থান নির্ণয় ও সম্ভাব্যতা যাচাই করে প্রকল্পের ডিপিপি তৈরির নির্দেশনা দিয়েছেন।
তিনি পরিচ্ছন্ন বিভাগের জনবলের ছবি সম্বলিত তালিকা প্রণয়ন ও ডিজিটাল হাজিরা নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেন। এছাড়া ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের পরিচ্ছন্ন, মশক নিধন, আলোকায়নের সার্বিক তত্বাবধানের দায়িত্ব ওয়ার্ড ভিত্তিক স্ব স্ব কাউন্সিলরদেরকে গ্রহণ করে নিরবিচ্ছিন্নভাবে সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করতে দায়িত্ব দেন। তিনি সিটি করপোরেশনকে একটি সুশৃঙ্খল প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরে প্রত্যেকের স্বীয় অবস্থানে থেকে কর্তব্য কর্ম সঠিকভাবে পালনের জন্য বিশেষভাবে নির্দেশ দেন।
মেয়র আগামী রমজান মাসকে সামনে রেখে সিটকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা, তারাবী নামাজের আগে প্রতিটি মসজিদে ফগার মেশিনের মাধ্যমে মশক নিধনের ওষুধ স্প্রে করা, ওয়াসা কর্তৃক কর্তনকৃত রাস্তা দ্রুত প্যাঁচওয়ার্কের মাধ্যমে মেরামত, নতুনভাবে কোন রাস্তা কর্তন না করা, সিটিতে নিরবিচ্ছিন্ন আলোকায়ন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে বাজার মনিটরিং করা, যাতে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে না পড়েন, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিয়েছেন।
চসিকের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব খালেদ মাহমুদের সঞ্চালনায় প্যানেল মেয়র, কাউন্সিলর, সংরক্ষিত কাউন্সিলর ও বিভাগীয় প্রধানরা সভায় বক্তব্য দেন।
মেয়র আরো বলেন, ‘চসিকের আয়ের উৎস হচ্ছে শুধুমাত্র গৃহকর ও ট্রেড লাইসেন্স। কিন্তু এমন অনেক খাত আছে, যেখান থেকে কর আদায় করা যায়।’
সে খাতগুলো কার্যকর করে করের আওতা বৃদ্ধির জন্য রাজস্ব কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেন। তিনি কর কর্মকর্তা, উপ কর কর্মকর্তা ও কর আদায়কারীদের কর আদায়ে নানা অসঙ্গতি ও অদক্ষতা পরিলক্ষিত হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং তাদের প্রাত্যহিক কর্মকান্ড সম্পর্কে প্রতিবেদন তৈরি করে ১৫ দিনের মধ্যে পেশ করার নির্দেশনা দেন।
রেজাউল করিম ভূ-সম্পত্তি বিভাগের কর্মকান্ডের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের অনেক সম্পত্তি এখানো বেহাত আছে। বার বার তাগাদা দেওয়ার পরও ভূ-সম্পত্তি শাখা এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে।’
তিনি জরুরী ভিত্তিতে একজন ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা নিয়োগসহ পুরো শাখাকে ঢেলে সাজানোর নির্দেশনা দিয়েছেন।
মেয়র বিদ্যুৎ বিভাগের নানা অনিয়ম অসঙ্গতি দূর করার জন্য কাউন্সিলরদের সাথে সমন্বয় করে এখন থেকে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে সিটিতে পরিপূর্ণ আলোকায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে কঠোর নির্দেশনা দেন।
রেজাউল করিম বলেন, ‘নগরবাসীর মন জয় করতে না পারলে চসিকের এ পরিষদের সব কর্মকান্ড ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে। সে জন্য সব কাউন্সিলরকে নিজেদের ওয়ার্ডের জনগণকে সন্তুষ্ট রাখতে যা যা প্রয়োজন, সব সেবামূলক কাজগুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন করে নিজেদের সুনাম অর্জনের পদক্ষেপ নিতে হবে বলে।’
সিএন/এমএ
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন