নিউইয়র্ক পুলিশ বাহিনীতে ৫ বাংলাদেশী সাজেন্ট হিসাবে পদোন্নতি পেয়েছেন। তারমধ্যে একজন লেখক , সাংবাদিক রাজুব ভৌমিক। চাকুরী বিধি মেনেই রাজুব ভৌমিক প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার সাথে জড়িত। নিয়মিত সংবাদ প্রতিবেদন করা ছাড়াও ‘উত্তরের পথে’ মাসিক একটি আয়োজনের সম্পাদনাও করে থাকেন রাজ্যব ভৌমিক।
১৮ মার্চ বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় সকালে ড. রাজুব ভৌমিক পুলিশ অফিসার থেকে সার্জেন্ট পদে শপথ গ্রহণ করেন।
কুইন্সের পুলিশ একাডেমিতে পুলিশ কমিশনার ডেরমট শে এর উপস্থিতিতে তার এই পদোন্নতি দেয়া হয়। সার্জেন্ট পদে শপথ নেয়ার পর রাজুব ভৌমিক বলেন, একজন বাংলাদেশি হিসেবে এই পদে শপথ নিতে পেরে আমি গর্বিত।
পদোন্নতি গ্রহণ করেই রাজুব ভৌমিক ছুটে আসেন জ্যাকসন হাইটস্থ প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা অফিসে। সেখানে তাঁকে স্বাগত জানানোর জন্য অপেক্ষা করছিলেন লেখক সাংবাদিকরা। প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার পক্ষ থেকে রোকেয়া দীপা ফুলের তোড়া দিয়ে রাজুব ভৌমিককে স্বাগত জানান।
সংলগ্ন একটি রেস্তুরায় আয়োজিত অনুষ্টানে নিউইয়র্ক ডেমোক্রেটিক পার্টির ডিসট্রিক্ট লিডার অ্যাট লার্জ মঈন চৌধুরী শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে বলেন , রাজুব ভৌমিকের মতো চৌকস প্রজন্মের অগ্রযাত্রা যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশীদের ভীতকেই মজবুদ করে তুলছে।
প্রবীণ সাংবাদিক ও ভাষ্যকার নাজমুল আহসান বলেন , রাজুব ভৌমিকের মতো একজন বাংলাদেশী বংশদ্ভূতকে নিউইয়র্ক পুলিশের কমিশনার হিসেবে দেখার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
টাইম টিভি’র সিইও , সাংবাদিক আবু তাহের রাজুব ভৌমিককে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন , যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশীদের অগ্রযাত্রা রাজুব ভৌমিকের মতো লোকজনের মাধ্যমেই দৃশ্যমান হয়ে উঠছে।
লেখক সাংবাদিক রহমান মাহবুব বলেন রাজুব ভৌমিকের মতো নতুন প্রজন্মের লোকজন প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার সাথে সম্পৃক্ত থাকাটি একটা উল্লেখযোগ্য ঘটনা। পুলিশের চাকুরী , অধ্যাপনা , লেখালেখি সামাল দিয়ে রাজুব পত্রিকার জন্য সময় দিয়ে সবাইকে অনুপ্রাণিত করে রাখছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অভিনেতা ও রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী খাইরুল ইসলাম পাখি বলেন রাজুব ভৌমিক তাঁর পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে উদাহরন সৃষ্টি করেছেন।
শুভেচ্ছা জানিয়ে অন্যান্যের মধ্যে বকব্য রাখেন, মেইনরে হো, ক্রিস্টোফার ওয়াং , আলী আফরোজ অর্নব , সানাউল্লাহ হোসেন , পুতুল ভৌমিক , শাহ আহমদ, মনীষা তৃষা , আব্দুশ শহীদ , মনজুরুল হক, শেলী জামান খান , রোকেয়া দীপা , সায়ান সাদিক , ভায়লা সালিনা , জাহিদা আলম , কান্তা কাবির , রেজোয়ানা আলম , সুব্রত বিশ্বাস, সুখেন জোসেফ গোমেজ প্রমুখ।
অনুষ্টানে উপস্থিত রাজুব ভৌমিকের রত্নগর্ভা মা পুতুল ভৌমিক এবং উত্তর আমেরিকার লেখক এবং রাজুব ভৌমিকের স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা ভৌমিক।
প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার আবাসিক সম্পাদক ইব্রাহীম চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে রাজুব ভৌমিকের সাফল্যের জন্য পুতুল ভৌমিক এবং স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা ভৌমিকের নেপথ্য সহযোগিতার কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন।
নিউইয়র্ক পুলিশে সার্জেন্টের পর পরের ধাপের পদবি লেফটেনেন্ট, যা সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়। এর আগে রাজুব ভৌমিক পুলিশ অফিসার হিসেবে নিউইয়র্ক সিটি পুলিশ ডিপার্টমেন্ট (এনওয়াইপিডি)তে একজন কাউন্টার টেরোরিজম অফিসার হিসেবে আট বছর ধরে কর্মরত ছিলেন।
কবি ও লেখক, অধ্যাপক ড. রাজুব ভৌমিকের জন্ম বাংলাদেশের নোয়াখালী জেলায়। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা পঁচিশটিরও বেশি। সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্কে তার প্রকাশিত তিনটি পাঠ্যপুস্তক নিয়মিত পড়ানো হয়।
একই দিনে নিউইয়র্ক সিটি পুলিশ (এনওয়াইপিডি) বিভাগে মোট পাঁচ বাংলাদেশি পদোন্নতি পেয়েছেন।
লেফটেন্যান্ট পদে পদোন্নতি পেয়েছেন সাজেদুর রহমান। সার্জেন্ট পদে পদোন্নতি পেয়েছেন, আবু তাহের ফিরোজ, মোহাম্মদ চৌধুরী, মোহাম্মদ শামসুদ্দিন ও ড. রাজুব ভৌমিক। তাদের হাতে পদোন্নতির সার্টিফিকেট তুলে দেন নগরীর পুলিশ কমিশনার ডারমোট শিয়া। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি-আমেরিকান পুলিশ অ্যাসোসিয়েনের (বাপা) নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
লেফটেন্যান্ট পদের পরবর্তী ধাপ নির্বাহী কর্মকর্তার ক্যাপ্টেন পদ। এই পদ থেকেই রাজনৈতিক বিবেচনায় পুলিশের শীর্ষপদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এই পদে ইতোমধ্যে পদোন্নতি পেয়েছেন বাংলাদেশি খন্দকার আব্দুল্লাহ, কারাম চৌধুরী এবং পারুল চৌধুরী। নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগে আরও বেশ কয়েকজন ক্যাপ্টেন ও লেফটেন্যান্ট পদে পদোন্নতির অপেক্ষায় রয়েছেন। বর্তমানে নিউইয়র্ক পুলিশে দুই শতাধিক বাংলাদেশি নিয়মিত অফিসার ও সহস্রাধিক বাংলাদেশি ট্রাফিক এজেন্ট রয়েছেন। ট্রাফিক বিভাগের নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যানেজার পদেও দায়িত্ব পালন করছেন বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি।
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন