সাইয়িদ মাহমুদ তসলিমঃ
ড্রাগন ব্লাড ট্রি । কিংবা রক্ত বৃক্ষ যার নাম । এ গাছ অন্য আট দশটি গাছের মত নয় । ইচ্ছে করলে হাতের নাগালে পাওয়া যায়না। তবে আমদানী কারকরা কিছু চারা আমদানী করে , যা সৌন্দয্য বা স্বকীয়তার জন্য টপে লাগিয়ে বাসা-বাড়ি, অফিস কিংবা নাইট ক্লাবের সৌন্দর্যই বৃদ্ধির জন্য ক্রয় করে থাকেন ।
এটি জন্মায় মূলত ইয়ামেন উপকূলে । অনেকেই এটিকে রক্ত বৃক্ষ বলে। যেমন বাংলাদেশে রয়েছে রক্ত করবী, দু’টোই সুন্দর আবার দুটোই বিষ । গাছটি কাটার পর কাটাস্থল থেকে রক্তের মত বের হয় ।
ড্রাগন রক্ত গাছটির একটি অনন্য গাছ। এই গাছের বিরল চেহারা রয়েছে, গাছটি বিভিন্ন রূপ ধারণ করে উপরে উঠতে থাকে । অনেকটা তাল গাছের মত। সব গাছ ছাডিয়ে মুকুটটি খাড়াভাবে ছাতার আকার ধারণ করে”। আবার কোনটা ১৫/২০ ফুট উপরে উঠতেই শাখা প্রশাখা খাড়া হয়ে মুকুট বা মাথা ভারী করে তোলে । এই চিরসবুজ প্রজাতির গাছের দেহ লাল। বৈজ্ঞানিক লল-রজনের নামে নামকরণ করা হয়েছে যা “ড্রাগনের রক্ত” নামে পরিচিত ।
এ গাছের ডাল গাছ থেকে ভিন্ন । এর পাতাগুলি কেবল তার কনিষ্ঠ শাখাগুলির শেষে পাওয়া যায়। ড্রগেনের ফলের ভেতর ৩ টি বা ৪ টি বীজ রয়েছে । এগুলি বিকাশের সাথে সাথে সবুজ থেকে কালো হয়ে যায় এবং পাকা হলে কমলা রংয়ের হয়ে যায়। কিছু কিছু পাখি ড্রাগনের বীজ খেয়ে থাকে । বীজগুলি ৪-৫মিমি হয় এবং ওজন গড়ে ৬০-৭০ মিলিগ্রাম হয় । বীজ গুলো দেখতে খেজুরের বীজের মতো। ড্রাগনের দেখতে ছাতা-আকৃতির মত। পাতাগুলি ৬০ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ৩ সেমিমিটার প্রশস্ত থাকে। ড্রাগনের ডালের শাখা গুলো দুই ভাগে বিভক্ত দেখা যায়।
ড্রাগনের সাধারণত মার্চ মাসে তার চারপাশে ফুল ফোটে। গাছে ফুল আসার পর তা অনেক সুগন্ধি হয় ।
ইয়েমেনের উপকূলে আরব সাগরে একটি দ্বীপ রয়েছে, যার নাম সুকাত্রা। ভৌগোলিক পরিবেশ ও বিচিত্র ধরনের উদ্ভিদের কারণে এ দ্বীপটি ‘এলিয়েন আইল্যান্ড’ বা ‘ভিনগ্রহবাসীদের দ্বীপ’ নামে পরিচিত। দ্বীপের উদ্ভিদগুলো বিচিত্র ধরনের । এখানে এমন প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে যা পৃথিবীর আর কোথাও দেখা যায় না। প্রায় ৩৭ শতাংশ উদ্ভিদই বিরল প্রজাতির । এই বিরল উদ্ভিদরাজির মধ্যে অন্যতম হল ড্রাগন ব্লাড ট্রি। সুকাত্রা দ্বীপের শুকনো মাটিতে জন্মানো এ গাছটি প্রায় ৩২ ফুট লম্বা হয়। গাছের কাণ্ড ওপরের দিকে বৃদ্ধি পেতে পেতে অসংখ্য ডালপালায় ভাগ হয়ে যায়। ডালগুলোর ঘন সন্নিবিষ্ট পাতার কারণে গাছটি দেখতে একটা ছাতার মতো লাগে। এ গাছ থেকে লাল রঙের আঠালো পদার্থ বের হয়। যার কারণে গাছটির নাম হয়েছে ড্রাগন ব্লাড ট্রি। এ গাছে আঠালো পদার্থ রং তৈরিতে ও বার্নিশের কাজে ব্যবহৃত হয়। ভেষজ গুণাগুণও রয়েছে। বছরে একবার ফুল দেয়। উপযুক্ত পরিবেশে ড্রাগন ব্লাড ট্রি কয়েকশ বছর বাঁচতে পারে।
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন