ঈদুল আজহার প্রধান জামাত জাতীয় ঈদগাহে সকাল আটটায়

ঢাকা: আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে সকাল আটটায় ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। আবহাওয়া প্রতিকূল বা অন্য কোন অনিবার্য কারণে এ জামাত অনুষ্ঠান সম্ভব না হলে ঈদের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে আটটায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে অনুষ্ঠিত হবে।

আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উদ্যাপনের জন্য সরকারি কর্মসূচি নির্ধারণকল্পে রোববার (১৯ জুন) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

সভায় যথাযোগ্য মর্যাদা, ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আনন্দমুখর পরিবেশে ঈদুল আজহা উদ্যাপনের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি প্রণয়ন ও সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের বিষয়ে আরো বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশ্যে বাণী দেবে। এ উপলক্ষ্যে সরকারি ও বেসরকারি ভবন ও বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় পতাকা ও ‘ঈদ মোবারক’ লিখিত ব্যানার ঢাকা মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ ট্রাফিক আইল্যান্ড ও লাইট পোস্টে প্রদর্শনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ ছাড়া ঈদুল আজহা দিবাগত রাত্রিতে নির্দিষ্ট সরকারি ভবন ও সামরিক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা আলোকসজ্জা করা হবে।

সভায় সিদ্ধান্ত হয়, সারা দেশে বিভাগ, জেলা, উপজেলা, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর প্রধানরা জাতীয় কর্মসূচি প্রণয়ণপূর্বক ঈদুল আজহা উদযাপন করবে। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি গণ মাধ্যমগুলো যথাযোগ্য গুরুত্ব সহকারে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার ও সংবাদপত্রগুলো বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করা হবে। এ ছাড়াও ঈদুল আজহা উদযাপন উপলক্ষ্যে দেশের সব হাসপাতালও কারাগার, সরকারি শিশু সদন, বৃদ্ধ নিবাস ও মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে উন্নতমানের খাবার পরিবেশনের ব্যবস্থা করা হবে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশনগুলোতে যথাযথভাবে ঈদুল আজহা উদযাপন করবে। এ উপলক্ষ্যে সারা দেশে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রক্ষার্থে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে রাষ্ট্রীয় নীতির সাথে সংগতিশীল ডকুমেন্টারি ফিল্ম ও চলচিত্র দেখানো হবে। ডকুমেন্টারি ফিল্ম তৈরির ক্ষেত্রে অন্যান্য মুসলিম দেশের ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি, রীতি ও রেওয়াজকে গুরুত্ব দিয়ে নতুন আঙ্গিকে নতুন ধারার অনুষ্ঠানমালা তৈরির অগ্রাধিকার দেয়ার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়। ঈদের দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের বিনা টিকিটে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন সব শিশুপার্কে প্রবেশ ও বিনোদনের ব্যবস্থা করা হবে। ঈদের দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের বিনা টিকিটে ঢাকা জাদুঘর, আহসান মঞ্জিল, লালবাগ কেল্লা ইত্যাদি দর্শনীয় স্থান প্রবেশ ও তা প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হবে। বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে শিশুদের ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে।

কুরবানি পরবর্তী কুরবানিকৃত পশুর বর্জ্য পদার্থ অপসারণ বিষয়ে সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়, কুরবানিকৃত পশুর রক্ত ও বর্জ্য পদার্থ দ্বারা যাতে পরিবেশ দুর্গন্ধময় না হয়, সে বিষয়ে সব প্রকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঈদুল আজহার পূর্ববর্তী জুমার খুৎবায় এ বিষয়ে মুসুল্লিদের সচেতন করা হবে। এ ছাড়া বিভিন্ন গণ মাধ্যমে এ বিষয়ে সচেতনতামূলক আলোচনা ও বিজ্ঞাপন প্রচার করা হবে।

সভায় ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুল আউয়াল হাওলাদার উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া সভায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, তথ্য মন্ত্রণালয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর ও সংস্থার প্রতিনিধিরা সশরীরে ও ভার্চুয়ালি অংশ নেন।

সিএন/এমএ