শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

আরবের মরুতে হঠাৎ সবুজের ছড়াছড়ি, কিয়ামতের পূর্বাভাস?

সোমবার, জানুয়ারী ৯, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

সিএন প্রতিবেদক: মরুর দেশ সৌদি আরবের পবিত্র মক্কানগরীতে বৃষ্টির পর পবিত্র কাবাঘরের বেশ কাছের কয়েকটি পাহাড়, মাঠঘাট ও সড়কের দুই পাশে সবুজ লতাপাতা জন্মেছে। এসব সবুজ লতাপাতার বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করছেন বিশ্বের হাজার হাজার মানুষ।

অনেকে বলছেন, আরবের মরুতে হঠাৎ সবুজ লতাপাতা জন্মানো কেয়ামতের পূর্বাভাস। এক্ষেত্রে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স.) এর একটি হাদিসের উদ্ধৃতি করছেন তারা। তা হলো— ‘আরবভূমিতে যত দিন তৃণলতা ও নদী-নালা ফিরে আসবে না, তত দিন কেয়ামত হবে না।’ (মুসলিম)

ধর্মীয় বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন:

কেয়ামত কখন হবে—তা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। যেমন, পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআ’লা বলেন, ‘কেয়ামতের জ্ঞান কেবল তাঁরই জানা…।’ (সুরা হা-মিম-সাজদা: ৪৭)

মহানবী (সা.) হাদিসে পাঁচটি গোপন তথ্যের কথা বলেছেন, যা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেন না। এর মধ্যে প্রথমটিই হলো—কেয়ামত কখন হবে। (বুখারি)

তবে কোরআন-হাদিসে কেয়ামতের অনেকগুলো আলামতের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে কিছু ছোট আলামত, কিছু বড় আলামত। বড় আলামতগুলো কেয়ামত খুব কাছে এলেই দৃশ্যমান হবে। হাদিসে ১০টি বড় আলামতের কথা এসেছে। যেমন, দাজ্জালের আবির্ভাব, ইমাম মাহদির আগমন ইত্যাদি। আর ছোট আলামতের সংখ্যা ৩০ টির কাছাকাছি। প্রায় সব ছোট আলামতই এরই মধ্যে প্রকাশ পেয়েছে। যেমন, মহানবী (সা.)-এর জন্ম ও মৃত্যুর ঘটনাও কেয়ামতের অন্যতম ছোট আলামত। তেমনি মুসলমানদের বায়তুল মোকাদ্দাস ও কনস্টান্টিনোপল বিজয়ও ছোট আলামত। ছোট আলামতের মধ্যে এখনো পুরোপুরি প্রকাশ পায়নি এমন একটি হলো—আরব ভূখণ্ডে তৃণলতা ও নদী-নালা ফিরে আসা।

আরবে তৃণলতা গজানো সম্পর্কে ৩টি হাদিস
এ বিষয়ে তিনটি হাদিস পাওয়া যায়। প্রথম হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘আরব ভূখণ্ডে তৃণভূমি ও নদী-নালা ফিরে না আসা পর্যন্ত কেয়ামত হবে না।’ দ্বিতীয় হাদিসেও একই শব্দগুলো এসেছে। তৃতীয় হাদিসে তাবুকের যুদ্ধের একটি ঘটনা প্রসঙ্গে মহানবী (সা.) তাবুক সম্পর্কে মুআজ ইবনে জাবাল (রা.)-কে বলেছিলেন, ‘হে মুআজ, তোমার আয়ু যদি দীর্ঘ হয়, তবে শিগগিরই তুমি এই স্থান বসতি ও উদ্যানে ভরা দেখতে পাবে।’ (মুসলিম)

হাদিসগুলোর ব্যাখ্যায় আলেমগণ বলেছেন, আরব উপদ্বীপের মরুভূমিগুলোতে কেয়ামতের আগে সবুজ তৃণলতা গজাবে এবং নদী-নালার সৃষ্টি হবে। হাদিসে যেহেতু ‘ফিরে আসবে’ এসেছে, তাই বোঝাই যাচ্ছে, প্রাচীন যুগের কোনো এক সময় আরবের মরু অঞ্চলে সবুজ তৃণভূমি ও নদী-নালা ছিল। কেয়ামতের আগে আবার আরবের সেই রূপ ফিরে আসবে। সাম্প্রতিক সময়ে আরবের বিভিন্ন স্থানে গবেষণা করে অনেক ভূতাত্ত্বিকই এটি নিশ্চিত হয়েছেন। (ইসলামওয়েব ডটকম)

ওপরের আলোচনা থেকে এ বিষয়ে আমরা একটি উপসংহারে পৌঁছাতে পারি। তা হলো—প্রথম ও দ্বিতীয় হাদিসে মহানবী (সা.) আরবে তৃণলতা ও নদী-নালায় ভরে যাওয়ার যে কথা বলেছেন, এটি তারই একটি সূচনা হতে পারে। তবে পুরোপুরি সেটি দৃশ্যমান বলা যাচ্ছে না। কারণ হাদিসে বলা হয়েছে, আরব ভূমিতে তৃণলতা ও নদী-নালা স্বাভাবিক হয়ে যাবে, যেমনটি এক সময় ছিল। সেই সময় এখনো আসেনি। তবে তা যে খুব শিগগিরই আসতে চলেছে, তা আরববিশ্বের সাম্প্রতিক আবহাওয়া ও জলবায়ু দেখলেই আঁচ করা যায়।

সিএন/এমটি

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন