শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

নিজেকে শুধরে নেওয়ার মাস রমজান

বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৩, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

বছর ঘুরে আবারও মুসলমানদের মাঝে ফিরে এসেছে রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস পবিত্র মাহে রমজান। সিয়াম সাধনার এই মাস আত্মশুদ্ধির অন্যতম মোক্ষম সময়। এ মাস কুরআন নাজিলের মাস। কাম, ক্রোধ, মোহ ও রিপু দমন করার মাস। আত্মশুদ্ধি, ধৈর্য ও খোদাভীতি অর্জনেরও মাস।

এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেন, হে ইমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর; যাতে তোমরা খোদাভীতি অর্জন করতে পার (সূরা বাকারা, আয়াত-১৮৩)।

মহান আল্লাহ তায়ালা আরও বলেন, রমজান মাসই হলো সে মাস, যাতে কুরআন নাজিল করা হয়েছে; যা মানুষের হিদায়াত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য সুস্পষ্ট নিদর্শন ও সত্য-মিথ্যার মাঝে পার্থক্যকারী (সূরা বাকারা, আয়াত-১৮৫)।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে এবং সওয়াব অর্জনের আশায় সিয়াম আদায় করবে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে (বুখারি, মুসলিম)।

রোযা বলতে শুধু পানাহার থেকে বিরত থাকা বোঝায় না বরং সব ধরনের অন্যায়-অসত্য, পরনিন্দা-অশ্লীলতা ইত্যাদি পাপাচার থেকে আত্মাকে কলুষমুক্ত করা বোঝায়। সিয়ামের পুণ্য ও লক্ষ্য অর্জনের জন্য পানাহার বর্জনের সঙ্গে পাপাচার-অশ্লীলতা বর্জন না করলে সিয়ামের মূল উদ্দেশ্য সাধনই ব্যর্থ।

এ জন্য রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মিথ্যা ও অশ্লীলতা থেকে বিরত থাকতে না পারে তার পানাহার থেকে বিরত থাকার কোনো প্রয়োজন নেই’ (বুখারি)।

রমজান এমন একটি মাস, যার মাধ্যমে ধনীরা গরিবদের কষ্ট কিছুটা হলেও অনুভব করতে পারে। আর রোযা শুধুই আল্লাহর জন্য নির্ধারিত। এর প্রতিদান আল্লাহ নিজেই দেবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।

কিন্তু প্রশ্ন হলো, যে শিক্ষা ও উদ্দেশ্য নিয়ে রমজান আমাদের মাঝে এসেছে সে শিক্ষা আমরা অর্জন করতে পারি কিনা? সত্যিকার অর্থে বাস্তবতার প্রতি লক্ষ করলে দেখা যায়, রমজানের শিক্ষা থেকে আমরা বঞ্চিত, যে উদ্দেশ্যে আল্লাহ আমাদের জন্য রমজানের বিধান দিয়েছেন তা আমরা অর্জন করতে পারছি না, রমজান আমাদের জীবনে তেমন কোনোই পরিবর্তন আনছে না।

রমজান এলে ইবাদত-বন্দেগিতে ঠিকই হয়তো মনোযোগী হচ্ছি কিন্তু রমজান চলে গেলে সেই আগের মতোই তা ছেড়ে দিচ্ছি। রমজানের আগে যেমন ঘুষ, দুর্নীতি, পণ্যে ভেজাল করা, কালোবাজারি, মজুদদারি, মাপে কম দেওয়া, ধোঁকাবাজি, ছলচাতুরি, হিংসা-বিদ্বেষ, পরশ্রীকাতরতা ইত্যাদি অমানবিক কর্মে ছিলাম রমজানের পরে ঠিক আগের মতোই এসব করে যাচ্ছি।

আসুন! রোজার প্রকৃত শিক্ষা ও উদ্দেশ্যের প্রতি যত্নবান হয়ে সিয়াম সাধনার মাধ্যমে মনুষ্যত্বকে জাগ্রত করি, মানবিক গুণাবলিতে জীবনকে করি আলোকিত। নিজেকে শুধরে নিই। রমজানের আলোয় আলোকিত করি পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্রকে।

সিএন/এমটি

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন