চবি প্রতিনিধি: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) কেন্দ্রীয় স্টোরে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উপাচার্যকে ২৪ ঘণ্টা সময় বেধে দিয়েছে কর্মকর্তা সমিতি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারকে পাঠানো এক চিঠিতে এসব বিষয় জানানো হয়।
অভিযুক্তরা হলেন, শাখা ছাত্রলীগের তিন সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম সবুজ, মোফাজ্জল হায়দার মোফা ও সাদেক হোসেন টিপু। এদের তিনজনের বিরুদ্ধেই বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে।
চিঠিতে বলা হয়, ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স, হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির এক জরুরসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিগত ১৫ মার্চের মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব নেই এমন ব্যক্তিবর্গদের আবাসিক হল ও ক্যাম্পাস ত্যাগের নির্দেশনা দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ওই সময়ের পর ক্যাম্পাস বা ক্যাম্পাস সংলগ্ন এলাকায় এমন কাউকে পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা
গ্রহণ করা হবে বলে জানায় চবি প্রশাসন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এই সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন না হওয়ায় গতকাল ৫ এপ্রিল দুপুর ২ টা ৫৫ মিনিটে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত নজরুল ইসলাম সবুজ, বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী মোফাজ্জল হায়দার মোফা ও সাদেক হোসেন টিপুর নেতৃত্বে আরও কিছু ছাত্র নামধারী চিহ্নিত অছাত্র চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয়
স্টোরে বড় ধরনের অঘটন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ বিনষ্ট করার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়। উক্ত সময়ে কেন্দ্রীয় স্টোরের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (প্রশাসন) অফিস কক্ষে অফিসিয়াল কাজে ব্যস্ত ছিলেন।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, নজরুল ইসলাম সবুজ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সমাজতত্ত্ব বিভাগের ঝাড়ুদার ফজলুল করিমের ছেলে। সে শোভা কলোনিতে বসবাস করে এবং ইতঃপূর্বে বিভিন্ন অফিসে বিশেষ করে রেজিস্ট্রার দপ্তরের এস্টেট শাখা, প্রকৌশল দপ্তর ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তাদেরকে হুমকি-ধামকি প্রদান করেন। এই ঘটনায় জড়িত অছাত্রদের বিরুদ্ধে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ না হলে অদ্য ৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত অফিসার সমিতি কার্যকরী পরিষদের জরুরী সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ৯ এপ্রিল হতে লাগাতার কর্ম-বিরতি পালিত হবে।
জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় স্টোরের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (প্রশাসন) ও চবি অফিসার সমিতির সভাপতি রশীদুল হায়দার জাবেদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু পুরাতন মালামাল স্টোরে জমা আছে। যেগুলো কয়েকটি কমিটির মাধ্যমে নিলামে তোলা হয়। কিন্তু ছাত্রলীগের কয়েকজন সেগুলো নিলাম ছাড়া নিতে চেয়েছে। আমরা না দেওয়াতে তারা টেবিল চাপড়িয়ে অশোভন আচরণ করে। পরবর্তীতে কর্মকর্তারা এগিয়ে আসলে তারা বাহিরে গিয়ে আশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এই ঘটনায় অফিসার সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির জরুরি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমরা উপাচার্যকে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছি। অন্যথায় আমরা আগামী ৯ এপ্রিল হতে লাগাতার কর্ম-বিরতি পালন করবো।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত মোফাজ্জল হায়দার মোফা। তিনি বলেন, স্টোরের প্রধান জাভেদ ভাই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। আমাদের একটা ইফতার পার্টির বিষয়ে ওনার সাথে কথা বলতে গিয়েছিলাম। আমাদের কোন কথায় হয়ত জাভেদ ভাই মনঃক্ষুণ্ন হয়েছেন। এজন্য তিনি আমাদের বড় ভাই হিসেবে শাসিয়েছেন। এটা সেখানেই মীমাংসা হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারকে কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন, বিষয়টি আমরা শুনেছি। আমরা যাছাই বাছাই করে দেখছি। সত্যতা পাওয়া গেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কেন্দ্রের নিকট সুপারিশ করবো।
সিএন/এমটি
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন