শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে প্রবাসীদের সজাগ থাকতে হবে: নিউইয়র্কে মির্জা আজম এমপি

শুক্রবার, জুলাই ১২, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

সিএন প্রতিবেদন: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি বলেছেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার নেপথ্য নায়ক রাজাকারের দোসর জিয়াউর রহমানের পুত্র তারেক রহমান লন্ডনে বসে শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চায়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায়। মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে অর্জিত বাংলাদেশকে তারা পাকিস্তান বানাতে চায়। এজন্যে ষড়যন্ত্রকারিদের বিরুদ্ধে প্রবাসীদের সজাগ থাকতে হবে নিজ নিজ অবস্থান থেকে।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যায় নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে ‘শেফ মহল’ পার্টি হলে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের যুক্তরাষ্ট্র শাখার উদ্যোগে আয়োজিত বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং সচেতন প্রবাসীদের সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা আজম এমপি বলেন, এটা সকলেই জানি যে, ষড়যন্ত্রের মূল ঘাঁটি হচ্ছে এই আমেরিকা। খন্দকার মোশতাক এবং জিয়া গংদের ষড়যন্ত্রের লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে দূরে সরানো। সে অভিপ্রায়ে প্রতিরাতেই সামরিক জান্তা জিয়ার নির্দেশে ঢাকাস্থ কেন্দ্রীয় কারাগার ও আশপাশে শতশত মানুষকে ফাঁসি দেয়া হয়। যার প্রায় সকলেই ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বঙ্গবন্ধুর চেতনায় উজ্জীবিত সামরিক অফিসার।

মির্জা আজম বলেন, সেই জিয়ার সৃষ্টি বিএনপি এখন একই খেলায় মেতে উঠেছে। শেখ হাসিনাকে হত্যার একের পর এক চেষ্টা চালানো হচ্ছে। খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে বেশ কয়েক দফা হত্যার চেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু পরম করুণাময়ের অশেষ রহমতে প্রতিবারই তিনি প্রাণে বেঁচে গেছেন। শেখ হাসিনাকে হত্যার সেই নীল নক্শা বাস্তবায়িত করতে এখন খালেদা জিয়া ও জিয়াউর রহমানের পুত্র তারেক রহমান সব ধরনের চেষ্টা চালাচ্ছে। স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তির সহায়তা নিয়ে তারেক রহমান বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রের তকমা দিতেও কুন্ঠা করছে না।

মির্জা আজম বলেন, একাত্তরে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারিরা ঘুনাক্ষরেও আশা করেননি যে, তারা বেঁচে থাকবেন। কিন্তু তারপরও পাক হায়েনার দল ৩০ লাখ বাঙালিকে হত্যা করেছে। হত্যার হুলিখেলা চলছে এখনো সেই একাত্তরের মতোই রাজাকার আর বিএনপি মিলে। প্রবাসের বীর মুক্তিযোদ্ধাগণের উদ্দেশ্যে মির্জা আজম বলেন, ৯৬ সালে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হবার পরই মুক্তিযোদ্ধাগণের জাতীয় সম্মান পুনরুদ্ধার করা হয়।

সাংসদ বলেন, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় দাফনের পদক্ষেপ গ্রহণের পর ২০০৯ সালে পুনরায় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে শেখ হাসিনা বীর মুক্তিযোদ্ধাগণের সম্মানী ভাতা চালু করেন। এখন স্মার্ট কার্ড দেয়া হচ্ছে। যাবতীয় সুযোগ সুবিধা বহাল করা হয়েছে।

মির্জা আজম বাংলাদেশে চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, এটা খুবই দু:খজনক। তাই কারা এমন আন্দোলনে মদদ দিচ্ছে সেটিও ভেবে দেখতে হবে। ইতিমধ্যেই বিএনপির নেতা রুহুল কবীর রিজভি বলেছেন যে, এর চেয়ে পাকিস্তানেই তারা ভালো ছিলেন। এজন্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বিলুপ্তির আন্দোলনে তারা মদদ দিচ্ছে। সাথে রয়েছে রাজাকারের দল।

বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের মিয়ার সভাপতিত্বে এতে বিশেষ সম্মানীত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কন্সাল জেনারেল মো. নাজমুল হুদা। তিনি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলা বাংলাদেশ কর্মসূচিকে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার উদাত্ত আহবান জানান এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাগণের জন্যে বিরাজিত সুযোগ-সুবিধার কথা বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করেন। কন্সাল জেনারেল বলেন, নিউইয়র্ক কন্স্যুলেটে বীর মুক্তিযোদ্ধাগণের জন্যে বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে।

সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ’৭১ এর যুক্তরাষ্ট্র শাখার সভাপতি এবং বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের কম্যুনিকেশন্স ডাইরেক্টর বীর মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসারের স্বাগত বক্তব্যের পর বিশেষ সম্মানীত অতিথির বক্তব্যে ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ ফজলুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় বলেই মুক্তিযোদ্ধারা রাষ্ট্রীয় সম্মান পাচ্ছেন। শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মডেলে পরিণত হয়েছে।বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা রচনায় প্রবাসীরাও আজ ঐক্যবদ্ধ বলে উল্লেখ করেন ইঞ্জিনিয়ার ফজলুল হক।

ঢাকাস্থ চট্টগ্রাম সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট শিল্পপতি মো. গিয়াস উদ্দিন এবং বাকসুর সাবেক জিএস ড. প্রদীপ কর নিজ নিজ বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের এ উদ্যোগের প্রশংসা করেন।

সমাবেশে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ছিলেন বীর প্রতিক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব:) মঞ্জুর আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বারি, হাবিব রহমান আকন্দ, আবুল বাশার চুন্নু, মোজাম্মেল হক, মাহমুদ হাসান, কামরুজ্জামান শিকদার, নুরুল ইসলাম, আব্দুস সাদেক, মো. হেলাল মজিদ, আব্দুল কাদের, মো. গুলজার হোসেন, মেসবাহউদ্দিন চৌধুরী, মো. নাজিমউদ্দিন, মো. এনামুল হক, আবুল বাশার ভূইয়া, মো. আব্দুর রহমান, প্রদীপ কর, ডেল্টা কোম্পানীর মোজাম্মেল হক, এম এ হাসান, আশরাফ চৌধুরী, এ কাদের, শামসুল আলম চৌধুরী, নাজমুল হক, জাহিদ হাসান, প্রাণগোপাল কুন্ডু প্রমুখ।

বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নেতৃবৃন্দের মধ্যে ছিলেন নজরুল ইসলাম বাবুল, হাজী জাফরউল্লাহ, সাহাবউদ্দিন চৌধুরী লিটন, আরিফুল ইসলাম, এ টি এম মাসুদ, নুরুল আবসার, প্রিন্স মুরাদ, সুমন, রিদোয়ান বারি এবং কামাল হোসেন মিঠু।

কম্যুনিটি নেতৃবৃন্দের মধ্যে ছিলেন মোর্শেদ আলম, সালেহা মোর্শেদ, ডা. সায়েরা হক, ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, মোর্শেদা জামান, আশরাফুজ্জামান, খোরশেদ খন্দকার, দাউদ ভূইয়া, সালেহ শফিক গেন্দা, খন্দকার আবু মুরাদ, ভিক্টর এলাহি লিয়াকত, জাকির হোসেন বাচ্চু, ওসমান চৌধুরী, আবু তাহের, ফরিদ আলম, ট্রাফিক ইউনিয়নের শফিক, সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের কোষাধ্যক্ষ আলিম খান আকাশ এবং বিশ্ববাংলা টোয়েন্টিফোর টিভির এমডি নুরুন্নাহার নিশা,নিউইয়র্ক ট্যাক্সি ওয়াকারস এলায়েন্সের নেতা টিপু সুলতান, চার্চ-ম্যাকডোনাল্ড বাংলাদেশী বিজনেস এসোসিয়েশনের নেতা মামুন রশিদ প্রমুখ।

প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য, নিতান্তই পারিবারিক সফরে এসেছিলেন মির্জা আজম। ১০ জুলাই সকালে ঢাকার উদ্দেশ্যে জেএফকে ত্যাগের আগে এটি ছিল তার সর্বশেষ সমাবেশে ভাষণ। এর আগে জামালপুরবাসীর নাগরিক সম্বর্ধনা সমাবেশ, যুবলীগের সাবেক নেতা-কর্মীগণের সমাবেশ, ক্যালিফোর্নিয়া আওয়ামী লীগের সমাবেশ এবং যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সমাবেশে মির্জা আজম বক্তব্য দিয়েছেন। সব্কটি সমাবেশেই তার স্ত্রী দেওয়ান আলেয়া আজম এবং দুই কন্যা মির্জা আফিয়া আজম অপি ও মির্জা আসফিয়া আজম অমিও ছিলেন।

সিএন/এমটি

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন