শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

রাজনৈতিক নেতাদের ব্যক্তিগত প্রতিযোগিতায় চট্টগ্রামের উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হচ্ছে

শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২১

প্রিন্ট করুন
রাজনৈতিক নেতাদের ব্যক্তিগত প্রতিযোগিতায় চট্টগ্রামের উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হচ্ছে 1

চট্টগ্রাম: রাজনৈতিক নেতাদের ব্যক্তিগত প্রতিযোগিতার কারণে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা উপ মন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে) আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির নব নির্বাচিত নেতৃবৃন্দকে সম্মাননা জানাতে ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

সিইউজে সভাপতি মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, সিইউজের সিনিয়র সহ সভাপতি রতন কান্তি দেবাশীষ, সহ সভাপতি অনিন্দ্য টিটো প্রমুখ বক্তব্য দেন। মঞ্চে সিইউজের যুগ্ম সম্পাদক সবুর শুভ, অর্থ সম্পাদক কাশেম শাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম ইফতেখারুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক ইফতেখার ফয়সাল, দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশ ইউনিটের প্রধান স ম ইব্রাহিম, দৈনিক পূর্বকোণ ইউনিট প্রধান মিহরাজ রায়হান, দৈনিক কর্ণফুলী ইউনিট প্রধান মুজাহিদুল ইসলাম, প্রতিনিধি ইউনিট প্রধান সাইদুল ইসলাম, টিভি ইউনিট প্রধান মাসুদুল হক ও দৈনিক পূর্বদেশ ইউনিট প্রধান জীবক বড়ুয়া উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে নওফেল আরো বলেন, ‘চট্টগ্রামে অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। রাজনৈতিক নেতারা নিজেদের সামনে নিয়ে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের চেষ্টা করে। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে ব্যক্তিগত প্রতিযোগিতা কখনো এত বেশি হয়ে যায়, যার কারণে উন্নয়নও বাধাগ্রস্থ হয়। সেগুলো নিরসনে সাংবাদিকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামে প্রতি বছর জলাবদ্ধতা হচ্ছে। কাজ যেভাবে এগোবার কথা ঠিক সেভাবে এগুচ্ছে না। অনেক সমস্যা আছে সেগুলো নিরসনের চেষ্টা চলছে। কিন্তু এক সাথে সমন্বয় করে কাজ করতে না পারলে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছানো যাবে না।’

এ সময় প্রাতিষ্ঠানিক স্বচ্ছতার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে নওফেল বলেন, ‘এক দিনের নির্বাচন বা গণতন্ত্রের মাধ্যমে পৃথিবীর কোন দেশেই সামষ্টিক গোষ্ঠীর উন্নয়ন নিশ্চিত হয়নি।  উন্নয়ন তখনই হয় যখন প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, জন সেবা নিশ্চিত করতে পারে এবং জবাবদিহিতা সঠিকভাবে হয়। এ জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার কাজটিই সাংবাদিকরা এগিয়ে নিচ্ছে।’

দেশে অনিয়ন্ত্রিতভাবে ভুঁইফোড় সংবাদ মাধ্যম বাড়ছে জানিয়ে শিক্ষা উপ মন্ত্রী বলেন, ‘সাংবাদিক সমাজের জন্য দীর্ঘ মেয়াদে সরকারকে চিন্তা করতে হবে। অনিয়ন্ত্রিত ও অনিবন্ধিতভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পেজ খুলে সাংবাদিক পরিচয় দেবার যে প্রবণতা দেখা দিয়েছে, সেখানে নিয়ন্ত্রণ করা জরুরী হয়ে পড়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে পেশা হিসেবে সাংবাদিকতা প্রতিবেশী দেশগুলোর তূলনায়ও অর্থনৈতিকভাবে অনেক পিছিয়ে। এর কারণ দেশের গণমাধ্যম পুরোপুরি বিজ্ঞাপন নির্ভর। অথচ, প্রতিবেশী দেশেও ইলেকট্রিনক মিডিয়াগুলো সাবস্ক্রিপশন ফি আদায় করে এর একটি অংশ সাংবাদিকদের দিতে পারছে।’

নওফেল বলেন, ‘দেশে বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকরাই সাংবাদিকতার নীতি নৈতিকতা, গতি সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে যা দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু পাশ্ববর্তী দেশেও ৪৯ শতাংশের বেশি মালিকানা উদ্যোক্তাদের দেয়া হয় না। কঠোর নীতিমালা না থাকলে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতা পেশাকে বিত্তশালীদের কাছে আবদ্ধ হয়ে যাবে।’

মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘করোনাকালে সারা দেশে যখন অর্থনৈতিক স্থবিরতা দেখা দিয়েছে, তখন চট্টগ্রামে সাংবাদিকদের সুখে দু:খে পাশে থেকেছে সিইউজে। নতুন কমিটি দায়িত্ব নেবার পর থেকে সরকার সিইউজে সদস্যদের জন্য প্রণোদনা ও কল্যাণ ট্রাস্টের অনুদান হিসাবে ৮১ লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়েছেন। এছাড়াও করোনাকালে ২৫ লাখ টাকার উপহারসামগ্রী সদস্যদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।’

আলী আব্বাস বলেন, ‘সাংবাদিকদের যে কোন সংকটে পাশে থেকেছে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব ও সিইউজে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী এ দুই সংগঠনের মধ্যে যে মেলবন্ধন তৈরি হয়েছে, তা সাংবাদিকদের জন্য কল্যাণকর ভূমিকা রাখবে।’

অনুষ্ঠান শেষে বিকাল তিনটা থেকে সিইউজের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিইউজে সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

চলমান নিউইয়র্ক/মোহাম্মদ আলী

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন