শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

ক্ষমতার অপব্যবহার আল্লাহ পছন্দ করেন না

শনিবার, আগস্ট ১৭, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

মাওলানা নোমান বিল্লাহ: আল্লাহ জালিমদের পছন্দ করেন না। পরকালে তাদের পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ। আল্লাহই ক্ষমতার মালিক। জগতের সব শক্তি ও ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহর করায়ত্তে আছে। সম্মান ও অসম্মান তারই নিয়ন্ত্রণাধীন।

তিনি দরিদ্র ও পথের ভিখারিকে রাজ সিংহাসন ও মুকুটের অধিকারী করতে পারেন। আবার প্রবল প্রতাপান্বিত রাজা-বাদশাদের হাত থেকে রাষ্ট্র ও ঐশ্বর্য ছিনিয়ে নিতে পারেন।

আল্লাহ বলেন, ‘বল, হে সার্বভৌম শক্তির মালিক আল্লাহ, তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা দাও এবং যার কাছ থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা কেড়ে নাও; যাকে ইচ্ছা তুমি পরাক্রমশালী করো, আর যাকে ইচ্ছা তুমি হীন কর। কল্যাণ তোমার হাতেই। নিশ্চয়ই তুমি সব বিষয়ে সর্বশক্তিমান।’ (সুরা আলে ইমরান ২৬)

ক্ষমতার যথার্থ ব্যবহার হল- ন্যায়পরায়ণতা ও ইনসাফের সাথে ক্ষমতার প্রয়োগ করা, সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা, অধীনদের অধিকার পৌঁছে দেয়া ও তাদের প্রতি কল্যাণকামী হয়ে কাজ করা। ন্যায়পরায়ণ শাসকের জন্য রয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে সীমাহীন মর্যাদা ও সম্মান।

হজরত আবু সাঈদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ন্যায়পরায়ণ শাসক তথা ক্ষমতার যথার্থ ব্যবহারকারী কিয়ামতের দিন আল্লাহর সর্বাধিক প্রিয় ও সর্বাধিক নৈকট্যপ্রাপ্ত হবেন। আর অত্যাচারী শাসক আল্লাহর কাছে সর্বাধিক ঘৃণিত ও সর্বাধিক শাস্তিপ্রাপ্ত হবে। অধিকন্তু সে আল্লাহর দরবার থেকেও বহু দূরে অবস্থান করবে। (তিরমিজি ১৩৭৯)

নিজের কাছে থাকা অন্যের কোন কিছু যথাসময়ে যথাস্থানে মালিককে পৌঁছে দেয়া হল আমানত। আমানত শুধু অর্থ-সম্পদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং ব্যাপক অর্থে চাকরি, সরকারি-বেসরকারি দাপ্তরিক কাজকর্ম, শিক্ষকতা, রাষ্ট্রীয়, সামাজিক ও পারিবারিক দায়িত্ব-কর্তব্য সব আমানতের অন্তর্ভুক্ত। এমনকি নিজের হাত-পা, চোখ-কানসহ সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও ব্যক্তির কাছে আমানত। এগুলোর খেয়ানতও ক্ষমতার অপব্যবহার। আমানতের বিষয়ে কোরআনে এসেছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দেন- আমানত তার হকদারকে প্রত্যর্পণ করতে। ’ (সুরা নিসা ৫৮)

ইচ্ছাকৃতভাবে দায়িত্ব পালনে অবহেলা করা ক্ষমতার অপব্যবহার। কর্তব্যে অবহেলা বিভিন্নভাবে হতে পারে। যেমন- ইচ্ছা করে দায়িত্ব পালন না করা, অযথা কালক্ষেপণ, বিলম্বে কর্মস্থলে উপস্থিতি, নির্ধারিত সময়ের পূর্বে প্রস্থান, সেবা প্রদানে অলসতা ইত্যাদি। দায়িত্ব-কর্তব্যে অবহেলার জন্য প্রত্যেককে আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে।

ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, ‘তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল; আর তোমরা প্রত্যেকেই তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।’ (বুখারি ৮৫৩; মুসলিম ৪৮২৮)

সিএন/আলী

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন