বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

বাজারে হস্তক্ষেপ বাড়ান

শনিবার, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

নিম্নবিত্ত পরিবারে পুষ্টির চাহিদা পূরণে বড় ভূমিকা রাখে ডিম। কিন্তু সেই ডিম এখন তাদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবরে দেখা যায়, বাজারে এক ডজন ডিমের দাম নেওয়া হয় ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা। ডজনের কম কিনলে এক হালি ডিমের দাম রাখা হয় ৬০ টাকা অর্থাৎ এ ক্ষেত্রে ডজন পড়ে ১৮০ টাকা।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বলেছে, পাইকারি ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণেই ডিমের দাম বাড়ছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার ডিম ও মুরগির দাম বেঁধে দিলেও ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণে তার সুফল পাচ্ছে না ভোক্তারা। বাজারে দাম বাড়ানোর জন্য ব্যবসায়ীদের অজুহাতের অভাব হয় না। বড় ব্যবসায়ীরা আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দেন।

অনেকে ডলার, এলসির দোষ দেন। কিন্তু যে পণ্য আমদানি করতে হয় না তার দামও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে। এমনই দুটি পণ্য হচ্ছে ডিম ও আলু। প্রতি কেজি আলুর দাম সেই যে ৬০ টাকায় উঠেছে, আর নামছে না।

সপ্তাহ দুয়েক আগেও এক ডজন ডিম ১৫৫ টাকায় পাওয়া যেত। এরপর সরকার খুচরায় প্রতিটি ডিমের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিল ১১ টাকা ৮৭ পয়সা অর্থাৎ ডজন ১৪৩ টাকার কম। এখন তা ১৮০ টাকায় উঠেছে। ডিম ব্যবসায়ীরা এবার বন্যার দোহাই দিচ্ছেন। তাঁদের মতে, বন্যা ও গরমের কারণে দৈনিক ২০ থেকে ৩০ লাখ ডিমের উৎপাদন কম হচ্ছে।

কিন্তু তাঁদেরই তথ্য অনুযায়ী, দেশে দৈনিক ডিমের চাহিদা চার কোটি, অথচ উৎপাদন সক্ষমতা আছে সাড়ে চার কোটি। ৩০ লাখ ডিম কম উৎপাদিত হলেও তা চাহিদার চেয়ে বেশি। আবার ভারত থেকেও ডিম আমদানি করা হচ্ছে। তার পরও দাম বাড়ছে কেন? বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, ডিম মজুদের প্রবণতা ক্রমেই বাড়ছে। মজুদ করে বাজারে ঘাটতি সৃষ্টি করা হয় এবং দাম বেড়ে গেলেই সেই ডিম ছেড়ে দেওয়া হয়। অনেক কোল্ড স্টোরেজেও ডিম মজুদ করা হয়।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পাইকারি বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সিন্ডিকেটের ওপর নজরদারি বাড়াতে হবে। আলু, পেঁয়াজসহ আরো কিছু কৃষিপণ্য আছে, যেগুলোর নতুন ফলন পেতে এখনো অনেক সময় বাকি। সাধারণত ফাল্গুন-চৈত্র মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। ফলে আগামী কয়েক মাস এই পণ্যগুলোর বাজার অস্থির করার জন্য বিভিন্ন সিন্ডিকেট নানা অপতৎপরতা চালাবে। এ ব্যাপারে প্রশাসনকে সচেতন থাকতে হবে। বাজার মনিটরিংয়ের পাশাপাশি বাজারসংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এসব পণ্যের আপৎকালীন ঘাটতি পূরণে এখন থেকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

আমরা মনে করি, নিত্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখার জন্য আরো পরিকল্পিত উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। এ ছাড়া বাজারে সরকারের হস্তক্ষেপ বাড়াতে হবে।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন