পানামা সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি জলযানগুলো এখন থেকে কোনো মাশুল ছাড়াই পানামা খাল পার হতে পারবে। এতে প্রতি বছর কোটি কোটি ডলার সাশ্রয় হবে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, পানামা খাল পার হতে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি জলযানগুলোর জন্য আর কোনো মাশুল ধার্য করা হবে না। এই চুক্তির ফলে মার্কিন নৌবাহিনী ও অন্যান্য সরকারি সংস্থার জন্য বড় ধরনের আর্থিক সুবিধা সৃষ্টি হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য অনুরোধ জানানো হলেও পানামা খাল কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সাড়া দেয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সম্প্রতি মধ্য আমেরিকা সফরের অংশ হিসেবে পানামার প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনোর সঙ্গে বৈঠক করেন। পানামা খালের অতিরিক্ত মাশুল নিয়ে মার্কিন প্রশাসনের দীর্ঘদিনের আপত্তির প্রেক্ষাপটে এই আলোচনা হয়। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প তার প্রশাসনের সময় পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কড়া অবস্থান নেন। গত মাসে এক বক্তব্যে তিনি বলেন, যদি পানামা আমাদের নৈতিক ও আইনগত দাবির প্রতি সাড়া না দেয়, তাহলে আমরা পানামা খাল আমাদের নিয়ন্ত্রণে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি করব।
১৯০৪ থেকে ১৯১৪ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে পানামা খাল নির্মিত হয়। দীর্ঘ কয়েক দশক যুক্তরাষ্ট্র এই খাল ও সংলগ্ন অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করে। ১৯৭৭ সালে স্বাক্ষরিত এক চুক্তির আওতায় ১৯৯৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর খালটির মালিকানা পানামার কাছে হস্তান্তর করা হয়। তবে মার্কিন জাহাজগুলোর জন্য মাশুল কমানোর বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ অব্যাহত ছিল। পানামা খাল বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক জলপথ। এটি আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে। প্রতি বছর প্রায় ১৪ হাজার জাহাজ এই জলপথ ব্যবহার করে। বৈশ্বিক বাণিজ্যের প্রায় ২.৫ শতাংশ এই খালের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কনটেইনার পরিবহনের ৪০ শতাংশ অন্তর্ভুক্ত।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পানামা সরকারের নতুন এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বাণিজ্যিক ও সামরিক সুবিধা বয়ে আনবে। তবে পানামার অর্থনীতিতে এটি কী ধরনের প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে বিশ্লেষকদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন