সিএন প্রতিবেদন: প্রবাসে বেড়ে ওঠা তরুণ প্রজন্মকে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের আবহে বিকশিত করতে নিউইয়র্ক স্টেটের রাজধানী আলবেনীতে আগামী ২৮ ও ২৯ জুন দুদিনব্যাপী এক বৃহৎ ইসলামিক কনভেনশনের আয়োজন করা হয়েছে। ‘নর্থ আমেরিকান মুসলিম এলায়েন্স’ আয়োজিত এ কনভেনশনে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বিভিন্ন স্টেট থেকে আড়াই হাজারেরও বেশি মুসলমান অংশগ্রহণ করবেন বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন।
২৬ এপ্রিল শনিবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে কনভেনশন সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন নর্থ আমেরিকান মুসলিম এলায়েন্সের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ সাইফুল আজম আল-আজহারি। তিনি বলেন, উত্তর আমেরিকায় বেড়ে ওঠা মুসলিম তরুণদের মধ্যে ধর্মীয় চেতনা ও পারিবারিক বন্ধন দৃঢ় রাখাই এই কনভেনশনের মূল উদ্দেশ্য। তিনি উল্লেখ করেন, লেখাপড়ার পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষায়ও তাদের পারদর্শী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে নানা সেমিনার ও ওয়ার্কশপের আয়োজন থাকবে, যেখানে বাস্তব জীবনের নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে উপজীব্য করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ সাইফুল আজম আল-আজহারি আরও বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে ইসলাম ও মুসলিম জাতিগোষ্ঠী নানা নেতিবাচক প্রচারণার শিকার হচ্ছে। বিশেষ করে গণমাধ্যমে ইসলামের বিপরীতে যে বিকৃত চিত্র উপস্থাপিত হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে সত্যিকারের ইসলামের সৌন্দর্য ও মানবতার বার্তা তুলে ধরাই এখন সময়ের দাবি। তিনি বলেন, ইসলামের সুফি-সুন্নি আদর্শ মানবতা, প্রেম ও শান্তির শিক্ষা দিয়ে মানুষের জীবন পথনির্দেশ করে এসেছে এবং এ ধারাই প্রকৃত ইসলামের প্রতিনিধিত্ব করে।
আসন্ন কনভেনশনে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বহু ইসলামিক স্কলার অংশ নেবেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন ক্যালিফোর্নিয়ার জয়তুনা কলেজের কো-ফাউন্ডার ইমাম জাঈদ শাকির, লেবাননের প্রখ্যাত আলেম শেখ নূর মোহাম্মদ কাব্বানী, নিউইয়র্কের মসজিদ আন-নূরের ইমাম গোলাম রসুল, কানাডার শেখ আলী আল-সাঈদ এবং সিরিয়ান-আমেরিকান গবেষক মোহাম্মদ বিন আহিয়া আল-নিনোঈ। এ সব বক্তারা প্রবাসী মুসলিমদের বর্তমান বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ নিয়ে জীবনঘনিষ্ঠ আলোচনা করবেন।
কনভেনশনের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য গিয়াস আহমেদ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, যেসব দেশে অলি-আউলিয়াদের মাধ্যমে ইসলাম বিস্তৃত হয়েছে, সেসব দেশেই মুসলমানদের অস্তিত্ব টিকে রয়েছে। তিনি স্পেন, গ্রীসের উদাহরণ টেনে বলেন, যেখানে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে ইসলাম প্রচার হয়েছিল, সেখানে আজ মুসলমানের সংখ্যা নেই বললেই চলে। বিপরীতে, তুরস্ক, ভারত, বসনিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও চীনের মতো দেশে এখনো মুসলিম সম্প্রদায়ের উপস্থিতি বিদ্যমান, যেখানে ইসলাম প্রচারে অলি-আউলিয়ারা ভূমিকা রেখেছেন। গিয়াস আহমেদ আরো বলেন, ইসলামের এ সুফি ঐতিহ্যের প্রতি নতুন প্রজন্মের অনুরাগ গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তাও আজ তীব্রভাবে অনুভূত হচ্ছে।
এ সময় কমিউনিটির বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। আয়োজকরা জানান, প্রথমবারের মতো উত্তর আমেরিকায় আয়োজিত এই ইসলামিক কনভেনশন ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক চেতনার এক নবজাগরণ ঘটাবে বলে তারা প্রত্যাশা করছেন।
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন