ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধে যোগ দিল আমেরিকা

নিউজ ডেস্ক: ইরানের যুদ্ধে অ্যামেরিকার যুক্ত হওয়া নিয়ে কয়েক দিনের ধোঁয়াশার পর ট্রাম্প এ ঘোষণা দিলেন। ইরানের তিনটি পরমাণু ক্ষেত্রে অ্যামেরিকা শনিবার বোমা হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।

এর মধ্য দিয়ে ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধে সরাসরি যুক্ত হলো অ্যামেরিকার সামরিক বাহিনী। নিউ ইয়র্ক টাইমস জানায়, ইরানের যুদ্ধে ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র অ্যামেরিকার যুক্ত হওয়া নিয়ে কয়েক দিনের ধোঁয়াশার পর ট্রাম্প এ ঘোষণা দিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শনিবার রাতে দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘সব বিমান এখন ইরানের আকাশসীমার বাইরে।’ তিনি আরও বলেন, ইরানের ফোরডো পারমাণবিক ক্ষেত্রে বিমানবোঝাই বোমা ছোড়া হয়েছে। বর্তমানে সর বিমান নিরাপদে বাড়িতে ফিরছে।

ইরানে ১৩ জুন থেকে শুরু করা হামলায় অ্যামেরিকাকে যুক্ত করতে পীড়াপীড়ি করছিল ইসরায়েল। দুটি সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছিল, পরমাণু কর্মসূচির গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো বাদ দিতে ওয়াশিংটন তেহরানকে চুক্তির জন্য যে দুই সপ্তাহ সময় দিয়েছিল, সে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চান না বলে ট্রাম্প প্রশাসনকে জানিয়েছিলেন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা।

এ সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই ইসরায়েল এককভাবে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ধ্বংসে তৎপরতা শুরু করতে পারে বলেও জানিয়েছিলেন এসব কর্মকর্তা।
মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের নতুন যুদ্ধে জড়ানো নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যে তর্ক অব্যাহত ছিল।

ঘটনার সঙ্গে পরিচিত সূত্র দুটি জানায়, বৃহস্পতিবার ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাছে নিজেদের উদ্বেগের কথা জানান ইসরায়েলের শীর্ষ কর্মকর্তারা। কলটি ছিল উত্তেজনাপূর্ণ।

প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার জানান, ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধে অ্যামেরিকা জড়াবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে দুই সপ্তাহের মধ্যে।

ইসরায়েলি কর্মকর্তারা এত সময় অপেক্ষা করতে চান না বলে রয়টার্সকে জানিয়েছিল নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রগুলো। একটি নিরাপত্তা সূত্র জানায়, কলে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ ও ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস-আইডিএফের চিফ অব দ্য জেনারেল স্টাফ ইয়াল জামির।

সূত্রগুলো জানায়, ইরানের পরমাণু কর্মসূচির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র ভূগর্ভস্থ ফোরডোতে ইসরায়েলের হামলার সুযোগ কম বলে মত দিয়েছিলেন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা। একটি পর্বতের পাশে মাটির বেশ গভীরে ফোরডো পারমাণবিক ক্ষেত্র স্থাপন করেছে ইরান। অ্যামেরিকাই একমাত্র দেশ, যার কাছে থাকা বাঙ্কার বাস্টার বোমা প্রবেশ করতে পারে সেই ক্ষেত্র পর্যন্ত।

রয়টার্স শনিবার এক প্রতিবেদনে জানায়, মূল ভূখণ্ড থেকে নিজেদের প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ গুয়ামে বি-২ বোমারু বিমান নিচ্ছে অ্যামেরিকা। এ খবরের মধ্য দিয়ে ইরানে সরাসরি হামলায় অ্যামেরিকার যুক্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেড়ে যায়। সে আশঙ্কা সত্যি করে ইরানে হামলায় যুক্ত হলো অ্যামেরিকা।