শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

শিরোনাম

শহরের জীবনমান রক্ষায় নিউইয়র্ক পুলিশের নতুন উদ্যোগ

বুধবার, জুন ২৫, ২০২৫

প্রিন্ট করুন

সিএন প্রতিবেদন: নিউইয়র্ক নগরের জীবনমান সংকট মোকাবিলায় নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে এনওয়াইপিডি। শব্দদূষণ, অবৈধ ভেন্ডিং, প্রকাশ্যে মাদক সেবন, বেপরোয়া স্কুটার চলাচল কিংবা পরিত্যক্ত গাড়ি—এ ধরনের সমস্যাগুলোর সমাধানে কাজ করবে এনওয়াইপিডির নতুন ‘কিউ-টিম’।

ছয়টি পাইলট কমান্ডে সফলভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এবার শহরজুড়ে এই কার্যক্রম সম্প্রসারিত হচ্ছে। নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস মনে করেন, জননিরাপত্তা মানে শুধু অপরাধের সংখ্যা নয়, বরং মানুষ ঘর থেকে বেরিয়ে কী দেখছে, কী অনুভব করছে—সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। এই উপলব্ধি থেকেই এ বছরের শুরুতে এনওয়াইপিডিতে চালু করা হয় “কোয়ালিটি অব লাইফ ডিভিশন”। শুরুর ৬০ দিনের মধ্যেই এই পাইলট প্রকল্পে আসে উল্লেখযোগ্য সাফল্য।

গত সোমবার (২৩ জুন) একটি কমিউনিটি ওপ-এডে মেয়র অ্যাডামস বলেন, “মাত্র ছয়টি পাইলট কমান্ডে স্থানীয় থানা–ভিত্তিক ‘কিউ-টিম’ ইতিমধ্যেই ৭ হাজার ৫০০–এর বেশি জীবনমান–সম্পর্কিত অভিযোগের জবাব দিয়েছে।”

তিনি জানান, ‘কম্পস্ট্যাট’ মডেলের অনুকরণে তৈরি করা হয়েছে ‘কিউ-স্ট্যাট’। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে এখন পর্যন্ত কিউ-টিম ৩৫০–এর বেশি গ্রেপ্তার, ৬ হাজার ১০০–এর বেশি সমন ইস্যু করেছে। তারা জব্দ করেছে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ পরিত্যক্ত গাড়ি ও ২০০–এর মতো অবৈধ ই–বাইক, মপেড ও স্কুটার। পাশাপাশি বন্ধ করা হয়েছে সমস্যা সৃষ্টিকারী স্মোক শপ, সরিয়ে দেওয়া হয়েছে অগোছালো খোলা ক্যাম্প।

শুরুতে এই কার্যক্রমের প্রভাব ছিল তাৎক্ষণিক ও দৃশ্যমান। এবার সেটি শহরজুড়ে বিস্তৃত হতে যাচ্ছে। আগামী মাসে ম্যানহাটন, ব্রঙ্কস ও ব্রুকলিনে চালু হবে কিউ-টিমের কার্যক্রম। এরপর আগস্টে কুইন্স, স্ট্যাটেন আইল্যান্ড ও বাকি এলাকাগুলোতেও পৌঁছাবে এই উদ্যোগ।

মেয়র অ্যাডামস বলেন, “মাত্র দুই মাসে কিউ-টিম যা অর্জন করেছে, তা থেকেই বোঝা যায়—এই কার্যক্রমকে দ্রুত শহরজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া কতটা জরুরি।”

তাঁর ভাষ্য, “এই উদ্যোগ গ্রেপ্তারের জন্য নয়, বরং পরিবর্তন আনার জন্য। এটি বাস্তব মানুষের, বাস্তব অভিযোগের প্রতি বাস্তব সময়ে সাড়া দেওয়ার উদ্যোগ। এর মাধ্যমে আমরা প্রতিদিনকার সমস্যা সমাধানে অঙ্গীকারবদ্ধ।”

মেয়র আরও জানান, টানা ছয় ত্রৈমাসিকে শহরে অপরাধের হার কমেছে। চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে শ্যুটিং ও হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা ছিল ইতিহাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।

“বেশির ভাগ নিউইয়র্কবাসী কখনোই কোনো অপরাধের শিকার হননি, এমনকি অনেকেই জীবনে কোনো অপরাধের সাক্ষীও হননি। কিন্তু আমরা সবাই মিলে অনুভব করেছি—ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে সেই ছোট ছোট উপাদান, যেগুলো একটি পাড়াকে ‘বাড়ি’ বলে মনে করতে সাহায্য করে। সেটাই ফিরিয়ে আনতেই মাঠে নেমেছে কিউ-টিম,” বলেন তিনি।

মেয়র অ্যাডামস বলেন, “নিউইয়র্ককে আমেরিকার সবচেয়ে নিরাপদ শহর এবং একটি পরিবারের বেড়ে ওঠার জন্য শ্রেষ্ঠ স্থান হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা আপনাদের কথা শুনছি, এবং ভবিষ্যতেও শুনে যাব। আপনাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমরাই এই শহরকে বদলে দেব।”

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন