ডেস্ক রিপোর্ট: যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইওর আকাশে রোববারের সকালটি ছিল আর দশটা দিনের মতোই স্বাভাবিক। কিন্তু কয়েক মিনিটের মধ্যেই সে সকাল পরিণত হলো এক ভয়াবহ শোকগাঁথায়। ইয়ংস্টাউন আঞ্চলিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের মাত্র সাত মিনিট পরই বিধ্বস্ত হলো ছোট্ট একটি দুই ইঞ্জিনের বিমান। ছুটি শেষে ঘরে ফেরা হলো না এক সুখী পরিবারের। মুহূর্তেই নিভে গেল ছয়টি প্রাণের প্রদীপ, থমকে গেল কত স্বপ্ন, কত আশা।
নিহতদের মধ্যে ছিলেন লিবার্টি স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজ ইনকর্পোরেটেডের প্রতিষ্ঠাতা জেমস ‘জিম’ ওয়েলার (৬৭), যিনি জীবনের পরিশ্রমে গড়ে তুলেছিলেন এক ব্যবসা সাম্রাজ্য। তার পাশে ছিলেন জীবনের সুখ-দুঃখের সঙ্গী স্ত্রী ভেরোনিকা (৬৮)। পরিবারের গর্ব, তাদের একমাত্র ছেলে জন (৩৬) আর পুত্রবধূ মারিয়া (৩৪)। যারা নতুন স্বপ্ন বুনছিলেন আগামী দিনের জন্য। সেই সঙ্গে প্রাণ গেল পাইলট জোসেফ ম্যাক্সিন (৬৩) ও কো-পাইলট টিমোথি ব্লেকের (৫৫), যারা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত প্রাণপণে চেষ্টা করেছিলেন যাত্রীদের রক্ষা করতে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, আকাশ ফাটানো এক বিকট শব্দে কেঁপে উঠেছিল চারপাশ। তারপর নিস্তব্ধতা। বাতাসে ভেসে বেড়ায় পোড়া ধোঁয়া আর ধ্বংসস্তূপের করুণ গন্ধ। হাওল্যান্ড টাউনশিপ ফায়ার চিফ রেমন্ড পেস জানান, ঘন জঙ্গলের মধ্যে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে সময় লেগেছে, আর ততক্ষণে সব শেষ। ছয়টি নিথর দেহ উদ্ধারের পর কেবল কান্নাই ছিল সঙ্গী।
একটি ছুটি শেষ করে ঘরে ফেরার আনন্দমুখর অপেক্ষা যে এভাবে মৃত্যুমিছিলে পরিণত হবে, তা কে জানত! এই দুর্ঘটনা শুধু এক পরিবারের নয়, পুরো কমিউনিটির হৃদয়ে শোকের কালো ছায়া বয়ে এনেছে। কত অজস্র অসমাপ্ত কথা, অগোছানো স্বপ্ন, ফেলে যাওয়া ভালোবাসা — সবকিছু যেন থেমে গেছে সেই ভাঙা বিমানের পাশে। কারণ? এখনো অজানা। কিন্তু শোকের এ ভার আজ ওহাইও পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে দূর দূরান্তে, অসংখ্য হৃদয়ে।
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন