সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫

শিরোনাম

ইসরাইলের গণহত্যা: আন্তর্জাতিক আইন কোনোদিন ফিলিস্তিনিদের রক্ষা করেনি

সোমবার, জুলাই ১৪, ২০২৫

প্রিন্ট করুন

গত ২১ মাস ধরে গাজায় ইসরাইলের গণহত্যামূলক যুদ্ধ আন্তর্জাতিক আইন ও নিয়মভিত্তিক ব্যবস্থার মৃত্যু ডেকে এনেছে বলে মন্তব্য করেছেন ফিলিস্তিনি আইনজীবী ও লেখক রজা শেহাদেহ। তিনি বলেন, এখন ইসরাইল কোনো রকম লুকোছাপা না করে যুদ্ধাপরাধমূলক নীতি প্রকাশ্যেই ঘোষণা করছে।

সম্প্রতি ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজ গাজার রাফায় ধ্বংসাবশেষের মধ্যে ফিলিস্তিনিদের একটি শিবিরে জোরপূর্বক স্থানান্তরের পরিকল্পনা প্রকাশ করেছেন। এটি মূলত একটি ‘কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প’ তৈরি করার শামিল বলে তিনি উল্লেখ করেন। দ্য গার্ডিয়ানকে ইসরাইলি মানবাধিকার আইনজীবী মাইকেল স্ফার্ড বলেছেন, কাটজ ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের একটি পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন।’

শেহাদেহ বলেন, ফিলিস্তিনিদের মানবিকতা অস্বীকার করার বীজ ১৯৪৮ সালের আরব-ইসরাইল যুদ্ধে বপন করা হয়েছিল। তখন তাদের ভূমি ও সম্পদ থেকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা হয়, যা ফিলিস্তিনিরা ‘নাকবা’ বা ‘বিপর্যয়’ নামে স্মরণ করে। সেই থেকে ইসরাইলের পক্ষ থেকে আরবদের ঘরবাড়ি ও জমি দখল কোনো অপরাধবোধ ছাড়াই চালানো হচ্ছে।

তিনি বলেন, ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধ ঠেকাতে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যর্থতা হতাশাজনক। আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। পশ্চিমা দেশগুলো এখনো ইসরাইলকে সামরিক ও রাজনৈতিক সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।

তবে শেহাদেহ মনে করেন, ফিলিস্তিনিদের আশা আন্তর্জাতিক আইনের উপর নয়, বরং তাদের ‘সুমুদ’ বা দৃঢ়তা ও টিকে থাকার মানসিকতার উপর নির্ভর করছে। তিনি বলেন, ‘৭৭ বছর পরও ফিলিস্তিনিরা তাদের ভূমির প্রতি অটল থেকেছে। পশ্চিম তীরে অবৈধভাবে বসতি স্থাপন ও ভৌগোলিক পরিবর্তনের পরও আমরা ছেড়ে দিইনি।’

তিনি উল্লেখ করেন, যুদ্ধ শেষ হলে এবং সাংবাদিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো গাজায় প্রবেশ করলে সেখানকার মানুষের যন্ত্রণার গল্পগুলো প্রকাশ পাবে, যা ইসরাইলিদের জন্য অভিশাপ হয়ে উঠতে পারে। ‘আমাদের মানবিকতা, কোনো আন্তর্জাতিক আইন নয়, ইসরাইল ও তাদের মিত্রদের বিচারের মুখোমুখি করবে।’

তিনি আরও বলেন, গাজার ভবিষ্যতের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হবে, ইসরাইলের ধ্বংসযজ্ঞের পরও সেখানে জীবনধারণ সম্ভব হবে কিনা। শেহাদেহ আশা প্রকাশ করে বলেন, গাজার ৪,০০০ বছরের ইতিহাসের মতই ফিলিস্তিনিরা বেঁচে থাকার পথ খুঁজে নেবে, ‘অন্যদের সাহায্যে হোক বা তাদের ছাড়াই।’

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন