শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

চবি-রাবির লোকালয়ে বেরিয়ে আসছে সাপ

রবিবার, নভেম্বর ১৪, ২০২১

প্রিন্ট করুন
চবি রাবির লোকালয়ে বেরিয়ে আসছে সাপ 1

ইফতেখার ইসলাম: করোনা ভাইরাসের কারণে দীর্ঘ বিরতির পর গত অক্টোবরে খুলেছে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। শিক্ষার্থীরা থাকছেন আবাসিক হলে। দীর্ঘদিন পর হল-ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের আনাগোনায় ক্যাম্পাসে বেড়েছে সাপের উপদ্রব।  একের পর এক সাপের কামড়ে আহত হচ্ছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থী, কর্মচারীরা। এছাড়া মুক্ত জলাশয় ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ করায় আবাসস্থল হারিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) লোকালয়ে বেরিয়ে আসছে বিভিন্ন প্রজাতির সাপ। 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়,  গত ১১ নভেম্বর ক্যাম্পাসের রাস্তায় হাঁটার সময় বিষধর সবুজ বোড়া সাপের কামড়ে আহত হন এক ছাত্র। এর আগের দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ আব্দুর রব হলের ২৩৬ নম্বর কক্ষ পরিষ্কার করতে গিয়ে ঘরগিন্নি নামে সাপের কামড়ে আহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা দপ্তরের এক কর্মচারী। এছাড়া আলাওল হলের ১১০ নম্বর ও ১৩৩ নম্বর কক্ষ থেকে আরও দুইটি সাপ উদ্ধার করা হয়। সর্বশেষ শনিবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে চবির শামসুন্নাহার হলের চারতলার একটি টয়লেটে সাপ দেখা গেলে হলের কর্মচারীরা সাপটিকে মেরে ফেলে।

এইদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্ত জলাশয় ভরাট করে এবং মুক্ত স্থানে শহীদ কামারুজ্জামান হল, বেগম খালেদা জিয়া ও কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। যার ফলে আবাসস্থল হারিয়ে লোকালয়ে বাড়ছে সাপের আনাগোনা।  গত ১১ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখশ হলের সামনে থেকে একটি সাপ উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে ছেড়ে দেন। এর আগে ২৫ অক্টোবর ও ৯ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের খালেদা জিয়া হলের ডাইনিং থেকে ঘরগিন্নি সাপ উদ্ধার করা হয়৷ এছাড়া মুন্নুজান হল থেকে একটি, মাদার বখশ হল ও হল এলাকা থেকে দুটি সাপ উদ্ধার হয়েছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান বলেন, যে সাপগুলো দেখা যাচ্ছে সেগুলোর মধ্যে ঘরগিন্নি ও মেটে সাপ বেশি। কয়েকটি কারণে এরা জনবহুল এলাকায় আসতে পারে। এর মধ্যে শীতকাল হওয়ায় তারা উষ্ণতা খোঁজার জন্য মানুষের কাছাকাছি আসছে, কোনোটি তাদের খাবারের খোঁজে বের হচ্ছে। আরেকটি কারণ হতে পারে যেসব জলাশয়ে এদের বসবাসের স্থান ছিল সেগুলো অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য ভরাট করে দেওয়ায় তাদের দেখা মিলছে।

এইদিকে বিশ্ববদ্যালয় খোলার পর ক্যাম্পাসে সাপ বেড়ে যাওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। এতদিন নির্বিঘ্নে হলের কক্ষে থাকলেও এখন কিছুটা ভয় কাজ করছে বলে জানিয়েছেন অনেকে। রাবি ও চবির অন্তত ১২ জন শিক্ষার্থী প্রতিবেদককে জানান, বন্ধের পর হলে এসে রুম পরিষ্কার করেছেন তারা। কিন্তু এখন সাপের খবর শুনে ভয় সৃষ্টি হয়েছে । মাঝে মাঝে গা ‘চমচম’ করে। এই শিক্ষার্থীরা সাপ মেরে না পেলে অবমুক্ত করে দেওয়ারও পরামর্শ দেন। 
জানতে চাইলে চবির  প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী বলেন, শীতকালে নিদ্রায় যায় সাপ, এ জন্য তারা দুই মাসের জন্য একটা আশ্রয় খোঁজে। এই কারণে শীতকালের শুরুতে বা আগে লোকালয়ে সাপ বেশি দেখা যায়। এছাড়া আবাসস্থল হারানোর কারণে সাপ লোকালয়ে ছুটে আসতে পারে। 

প্রসঙ্গত, চবি ক্যাম্পাসে প্রায় ৩৬ প্রজাতির সাপ রয়েছে। এর মধ্যে ধোড়া সাপ (Checkered Keelback) সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। বিষধর সাপ রয়েছে আট প্রজাতির। এর মধ্যে শঙ্খিনী বেশি দেখা যায়। এছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও এর আশে পাশে দেখা যায় বেশ কয়েক প্রজাতির সাপ। তার মধ্যে গোখরা, চন্দ্রবোড়া,খইয়া গোখরা, ক্রেইট বা কালাচ,ঘরগিন্নি ও মেটে সাপ উল্লেখযোগ্য। 

আইআই/

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন