মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

শিরোনাম

স্বপ্নভঙ্গের যাত্রা, শিকলবন্দী হয়ে দেশে ফেরা বাংলাদেশিদের

বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৫

প্রিন্ট করুন

সিএন প্রতিবেদন: পরিবারের ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে কিংবা নিরাপদ জীবন লাভের আশায় স্বপ্নের দেশ যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছিলেন তারা। কিন্তু উন্নত জীবনের আশায় শুরু হওয়া সেই যাত্রা শেষ হলো অপমানজনক প্রত্যাবাসনে। শিকলবন্দী অবস্থায় চার্টার্ড ফ্লাইটে দেশে ফিরতে হচ্ছে একদল বাংলাদেশিকে।

বৃহস্পতিবার (০৪ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে একটি চার্টার্ড বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামার কথা। তবে কতজন বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানো নতুন কিছু নয়। এর আগে গত ২ আগস্ট সি-১৭ সামরিক উড়োজাহাজে ৩৯ বাংলাদেশিকে দেশে পাঠানো হয়েছিল। ফেরত আসা ব্যক্তিরা অভিযোগ করেন, ৬০ ঘণ্টার দীর্ঘ যাত্রায় তাঁদের হাতকড়া ও শিকলে বেঁধে রাখা হয়েছিল। খেতে দেওয়া হয়েছিল কেবল রুটি আর পানি।

ঢাকায় নেমে ফাহিম নামের এক যাত্রী বলেছিলেন, ‘আমাদের হাতকড়া ও শিকলে বাঁধা অবস্থায় উড়োজাহাজে করে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। টয়লেটে যেতেও অফিসার সঙ্গে নিয়ে যেতেন, আবার শিকল পরিয়ে দিতেন। অবশেষে ঢাকায় নামার আগে শিকল খোলা হয়।’

এর আগে ৮ জুন ৪২ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। মার্চ থেকে এপ্রিলের মধ্যে আরও অন্তত ৩৪ জন দেশে ফিরেছেন। চলতি বছরের শুরু থেকে আগস্ট পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশির সংখ্যা ১৫০ ছাড়িয়েছে।

অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপরাধে জড়িত বা ঝুঁকিপূর্ণ না হলে প্রত্যাবাসনের সময় হাতকড়া-শিকল ব্যবহার মানবাধিকারবিরোধী। ব্র্যাকের অভিবাসনবিষয়ক কর্মকর্তা শরিফুল হাসান বলেন, ‘মানুষ উন্নত জীবনের খোঁজে বিদেশে যাবে, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাতকড়া-শিকল পরিয়ে পাঠানো অত্যন্ত দুঃখজনক। এটি সারা জীবনের জন্য ট্রমা হয়ে থাকে।’

মার্কিন আইনে বৈধ কাগজপত্র ছাড়া অভিবাসীদের আদালতের রায় বা প্রশাসনিক আদেশে ফেরত পাঠানো হয়। ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এই প্রক্রিয়া আরও কঠোর হয়েছে। চার্টার্ড ও সামরিক ফ্লাইট ব্যবহার করে দ্রুত প্রত্যাবাসনের ঘটনা বেড়েছে।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন