চিকিৎসাবিজ্ঞানে অসাধারণ গবেষণার জন্য চলতি বছরের নোবেল পেলেন যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের তিন বিজ্ঞানী। মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার কাজ ও নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া বোঝার ক্ষেত্রে তাদের অবদানকে স্বীকৃতি দিয়েছে সুইডেনের ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট।
নোবেলজয়ীরা হলেন যুক্তরাষ্ট্রের মেরি ই. ব্রাঙ্কো, ফ্রেড র্যামসডেল এবং জাপানের শিমন সাকাগুচি। তাদের গবেষণা মূলত ‘পেরিফেরাল ইমিউন টলারেন্স’ নামের প্রক্রিয়ার ওপর কেন্দ্রিত, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে নিজস্ব কোষের আক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট জানায়, সাধারণভাবে টি-সেল নামের কোষ থাইমাসে গঠনের সময় শরীরের নিজস্ব টিস্যুর বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া দেখালে ধ্বংস হয়ে যায়। কিন্তু কিছু সেল রক্তে বেঁচে থাকে। এই কোষগুলোর কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণে রাখে বিশেষ ‘রেগুলেটরি টি-সেল’ বা Treg। এই কোষের বিকাশ ও কার্যক্রম নির্ধারণ করে FOXP3 জিন।
১৯৯০-এর দশকে শিমন সাকাগুচি প্রথম প্রমাণ করেন, এমন Treg কোষ আছে যা অটোইমিউন প্রতিক্রিয়া প্রতিরোধ করে। পরবর্তীতে ব্রাঙ্কো ও র্যামসডেল ইঁদুর ও মানুষের শরীরে FOXP3 জিনের ত্রুটি শনাক্ত করেন, যা এই কোষের কার্যকারিতা ব্যাহত করে।
গবেষণায় তারা দেখান, FOXP3 জিন রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ আবিষ্কারের ফলে বিজ্ঞানীরা এখন আরও ভালোভাবে বুঝতে পারছেন, কিভাবে অটোইমিউন রোগ হয় এবং ক্যানসার কোষ কখনও কখনও এই নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার ফাঁকফোকর ব্যবহার করে বেঁচে থাকে।
নোবেলজয়ীরা ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট থেকে মেডেল, সনদপত্র ও ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা পাবেন।
প্রতিবছর ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল বিজয়ী ঘোষণা করে থাকে। আগামীকাল মঙ্গলবার পদার্থবিজ্ঞানের নোবেল বিজয়ীর নাম জানানো হবে।
১৯০১ সাল থেকে শুরু হওয়া নোবেল পুরস্কারটি সুইডিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের নামে নামকরণ করা হয়েছে। তার উইলে বর্ণিত পাঁচটি ক্ষেত্রে—পদার্থ, রসায়ন, চিকিৎসা, শান্তি ও সাহিত্য—বিশেষ অবদান রাখা ব্যক্তিদের এ পুরস্কার দেওয়া হয়। ১৯৬৯ সালে এতে অর্থনীতিকেও সংযুক্ত করা হয়।
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন