মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫

শিরোনাম

নিউইয়র্ক সিটি ‘সিএফবি’ মামদানির পক্ষে পক্ষপাত দেখিয়েছে, অভিযোগ অ্যাডামসের

মঙ্গলবার, অক্টোবর ১৪, ২০২৫

প্রিন্ট করুন

ডেমোক্র্যাটিক নিউইয়র্ক সিটি মেয়র পদপ্রার্থী জোহরান মামদানির প্রচারণায় সম্ভবত ১৩ হাজার ডলারের বেআইনি বিদেশি অনুদান ঢুকেছে—নিউইয়র্ক পোস্ট রোববার এমন খবর প্রকাশ করেছে। পোস্টের রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রায় ৫৪ হাজার অনুদানের মধ্যে কমপক্ষে ১৭০টি অনুদান এসেছে এমন দাতাদের কাছ থেকে, যাদের ঠিকানা যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে তালিকাভুক্ত। ফেডারেল, স্টেট ও স্থানীয় আইন অনুযায়ী, কেবল মার্কিন নাগরিক বা বৈধ স্থায়ী বাসিন্দারাই রাজনৈতিক প্রচারণা ও রাজনৈতিক অ্যাকশন কমিটিতে অনুদান দেওয়ার অনুমতি পান। এর বাইরে থেকে আসা অনুদান অবৈধ বলে বিবেচিত হয়।

এ নিয়ে সম্প্রতি মেয়র পদ থেকে সরে দাঁড়ানো ডেমোক্র্যাট এরিক অ্যাডামস অভিযোগ করেছেন, নিউইয়র্ক সিটি ক্যাম্পেইন ফাইন্যান্স বোর্ড প্রকাশ্যভাবে জোহরান মামদানির পক্ষে পক্ষপাত দেখিয়েছে।

অ্যাডামস বলেন, “যখন এমন একটি বোর্ড, যা নিউইয়র্ক সিটির বৈচিত্র্যকে প্রতিফলিত করে না, বেছে বেছে নিয়ম প্রয়োগ করে, তখন সেটি গণতন্ত্রকে দুর্বল করে। আমার প্রচারণাকে ভিত্তিহীন অভিযোগে ম্যাচিং ফান্ড থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে, অথচ মামদানির প্রচারণা ১৩ হাজার ডলার অবৈধ বিদেশি অনুদান পাওয়া সত্ত্বেও মিলিয়ন ডলারের অনুদান পেয়েছে। এই পক্ষপাত অস্বীকার করা যায় না।”

নিউইয়র্ক সিটি ক্যাম্পেইন ফাইন্যান্স বোর্ডের নথি থেকে জানা যায়, মামদানির প্রচারণা দুবাই নিবাসী তার শাশুড়ি বারিয়াহ দারদারির কাছ থেকে ৫০০ ডলার অনুদান পেয়েছিল। তবে পোস্টের খবর অনুযায়ী, প্রচারণা পক্ষ ইতোমধ্যে তার শাশুড়ির অনুদানসহ মোট ৫ হাজার ৬০৮ ডলার ফেরত দিয়েছে।

প্রচারণার পক্ষ থেকে আউটলেটকে জানানো হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে থেকে আসা যেকোনো অনুদান তারা ফেরত দেওয়ার লক্ষ্য রেখেছে। শনিবার এই অনুদানগুলোর একটি বিস্তারিত বিবরণ পাওয়ার পর, প্রচারণা পক্ষ পোস্টকে এক বিবৃতিতে বলেছে, “অবশ্যই, আমরা নিউইয়র্ক সিটি ক্যাম্পেইন ফাইন্যান্স বোর্ড আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এমন যেকোনো অনুদান ফেরত দেব।”

তবে পোস্টের তথ্য অনুযায়ী, প্রচারণা পক্ষ এখনও সন্দেহভাজন ৮৮টি বিদেশি অনুদান ফেরত দিতে ব্যর্থ হয়েছে, যার মোট মূল্য ৭ হাজার ১৯০ ডলার। ক্যাম্পেইন ফাইন্যান্স বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, রবিবার পর্যন্ত মামদানির প্রচারণা প্রায় ৪ মিলিয়ন ডলারের ব্যক্তিগত অনুদান পেয়েছে।

এ নিয়ে রিপাবলিকান মেয়র প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়াও কথিত বিদেশি প্রচারণার অনুদান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বলে পোস্ট জানিয়েছে।

স্লিওয়া পোস্টকে বলেছেন, “যেখানে ধোঁয়া আছে, সেখানে আগুনও আছে, তাই আমি খুবই উদ্বিগ্ন হব। বিদেশি অর্থের পরিমাণ সম্ভবত আরও অনেক বেশি। এটা শুধু জোহরান মামদানির জন্যই নয়, বরং এই ধরনের রাজনৈতিক অ্যাকশন কমিটি যাদের আছে তাদের সবার জন্যই এটি খুবই সমস্যাজনক, কারণ এটি অবৈধভাবে অর্থ পাচারের একটি লাইসেন্স। আর বিদেশিরা জানে, আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার দরকার নেই—শুধু নির্বাচনকে প্রভাবিত করলেই চলে।”

প্রচারণার আর্থিক রেকর্ড অনুযায়ী, মামদানির প্রচারণা আগস্ট ২০২৫-এ জার্মানির বাসিন্দা বলে মনে হওয়া ইয়ুর মাকিটের কাছ থেকে ২৫০ ডলার অনুদান পেয়েছিল। রেকর্ডে দেখা গেছে, জেমস ফারলাউড নামে একজন পরিবেশ বিজ্ঞানী অস্ট্রেলিয়া থেকে আড়াই হাজার ডলার অনুদান দিয়েছেন। এছাড়া দুবাই-ভিত্তিক বিনিয়োগকারী আদা দিয়াজ আহমেদ ২৬ সেপ্টেম্বর প্রচারণায় ২ হাজার ১০০ ডলার অনুদান দিয়েছেন।

মামদানির প্রচারণা এবং ক্যাম্পেইন ফাইন্যান্স বোর্ড—ডেইলি কলার নিউজ ফাউন্ডেশনের মন্তব্যের অনুরোধে তাৎক্ষণিক কোনো সাড়া দেয়নি।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন