যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্ক নিয়ে এক মামলায় সুপ্রিম কোর্টে তীব্র প্রশ্নের মুখে পড়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই মামলা মার্কিন প্রেসিডেন্টের এজেন্ডা এবং বিশ্ব অর্থনীতির উপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে ব্যাকআপ প্লানও ভেবে রেখেছেন ট্রাম্প।
বিচারপতিদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ হোয়াইট হাউসের আমদানি শুল্ক আরোপের যুক্তি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। যাদের মধ্যে একাধিক রক্ষণশীলও রয়েছেন। তবে ট্রাম্পের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদনভিত্তি পুনরুদ্ধার ও বাণিজ্য ঘাটতি দূর করতে এই শুল্ক প্রয়োজনীয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বৃহস্পতিবার বলেছেন, সুপ্রিম কোর্ট যদি আরোপিত শুল্কগুলো বাতিল করে দেয়, তাহলে তাঁর প্রশাসনের একটি বিকল্প পরিকল্পনা (ব্যাকআপ প্ল্যান) প্রয়োজন হবে।
বুধবার সুপ্রিম কোর্টের নয়জন বিচারপতির মধ্যে বেশিরভাগই ট্রাম্পের শুল্ক নীতির সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে। এরপর দিনই ট্রাম্প জানান, শুল্ক ‘জাতীয় নিরাপত্তার অংশ’। আমরা অবশ্যই মামলা জিতব।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের দেশের প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা হিসেবে, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে শুল্কের অনেক কিছুই জড়িত। আশা করি সফল হব। আমি মনে করি, যদি হেরে যাই, তাহলে তা দেশের জন্য বিধ্বংসী হবে। তবে আমাদের একটি ‘গেম টু’ পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। দেখা যাক কী হয়। বেশিরভাগ মানুষই আমাকে বলছে আমরা আইনি দিক থেকে ভালো অবস্থানে আছি।’
সুপ্রিম কোর্টের রক্ষণশীল ও উদারপন্থী উভয় শাখার বিচারপতিরাই সলিসিটর জেনারেল ডি. জন সাওয়ারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন যে প্রশাসন কীভাবে কংগ্রেসের সাংবিধানিক কর আরোপের ক্ষমতা লঙ্ঘন না করেই এই শুল্কগুলো কার্যকর করেছে।
সাওয়ার বলেন, ‘এগুলো নিয়ন্ত্রক শুল্ক, রাজস্ব আদায়ের জন্য নয়। এগুলোর মাধ্যমে রাজস্ব আদায় হওয়া কেবলই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।’
কোর্টের তিনজন বিচারকের একজন, সোনিয়া সোটোমেয়র, সাওয়ারকে বলেন, ‘আপনি বলছেন শুল্ক কর নয়। কিন্তু আসলে সেটাই তো কর। এগুলো আমেরিকান নাগরিকদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করছে। শুধুমাত্র ট্রাম্পই আন্তর্জাতিক জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা আইন ব্যবহার করে শুল্ক আরোপ করেছেন।
নিম্ন আদালতগুলো আগে রায় দিয়েছিল যে কানাডা, চীন ও মেক্সিকো থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ফেন্টানিল-সম্পর্কিত শুল্ক এবং অন্যান্য বাণিজ্য অংশীদারদের ওপর আরোপিত পারস্পরিক শুল্ক আরোপের জন্য ট্রাম্পের কোনো বৈধ ক্ষমতা ছিল না।
প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস এবং বিচারপতি অ্যামি কনি ব্যারেট, ব্রেট ক্যাভানফ এবং স্যামুয়েল অ্যালিটোও সাওয়ারকে কঠিন প্রশ্ন করেন।
বিচারপতিরা সাওয়ারকে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে প্রশ্ন করার পর বাদীপক্ষের আইনজীবী নিল কাতিয়াল তার বক্তব্য শুরু করেন। কাতিয়াল বলেন, ‘শুল্ক মানেই কর। আমাদের সংবিধানের প্রণেতারা কর আরোপের ক্ষমতা শুধুমাত্র কংগ্রেসকেই দিয়েছেন।’
ট্রাম্পের কাছে এ ব্যাপারে এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস নতুন এই শুল্ককে মার্কিনিদের ওপর আরোপিত কর বলেছেন।’ ট্রাম্প জবাবে বলেন, আমি পুরোপুরি একমত নই। হয়তো মার্কিনিরা কিছু বাড়তি খরচ দিচ্ছে, কিন্তু সামগ্রিকভাবে দেখলে তারাই বিশাল লাভবান হচ্ছে।



চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন