রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫

শিরোনাম

বিদেশের একমাত্র সামরিক ঘাঁটি থেকে কেন চুপিসারে সৈন্য সরালো ভারত?

রবিবার, নভেম্বর ৯, ২০২৫

প্রিন্ট করুন

বিদেশে ভারতের একমাত্র পূর্ণাঙ্গ সামরিক ঘাঁটি ছিল তাজিকিস্তানের আয়নি বিমানঘাঁটি। কিন্তু সেখান থেকে অনেকটা চুপিসারে সৈন্য ও সরঞ্জাম সরিয়ে নিয়েছে নয়াদিল্লি। প্রায় দুই দশক ধরে এই ঘাঁটি মধ্য এশিয়ায় ভারতের কৌশলগত উপস্থিতির একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক ছিল। তাহলে এখন কেন গোপনে ঘাঁটিটি ছেড়ে দিলো ভারত?

আয়নি ঘাঁটি কেন গুরুত্বপূর্ণ?

তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশানবে থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত আয়নি বিমানঘাঁটি মূলত সোভিয়েত আমলে নির্মিত হয়েছিল। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর এটি জরাজীর্ণ অবস্থায় ছিল। ২০০২ সালে তাজিক সরকারের সঙ্গে চুক্তি করে ভারত প্রায় ৮০ মিলিয়ন (ট কোটি) ডলার ব্যয়ে ঘাঁটিটি সংস্কার করে।

ভারতীয় সীমান্ত সড়ক সংস্থার মাধ্যমে এর রানওয়ে ৩ হাজার ২০০ মিটার পর্যন্ত সম্প্রসারণ করে যুদ্ধবিমান ও ভারী পরিবহন প্লেন চলাচলের উপযোগী করা হয়।

ঘাঁটিটি আফগানিস্তানের ওয়াখান করিডর থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে, যা পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর ও চীনের শিনজিয়াং প্রদেশের সংযোগস্থল। এই অবস্থান ভারতের জন্য অত্যন্ত কৌশলগত ছিল, বিশেষ করে পাকিস্তান ও চীনের ওপর নজরদারি এবং আফগানিস্তান–মধ্য এশিয়া অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রে।

কখন ও কেন সরলো ভারত?

২০২২ সালে নীরবে আয়নি ঘাঁটি থেকে সৈন্য ও সামরিক সরঞ্জাম প্রত্যাহার শুরু করে ভারত। ওই সময় তাজিক সরকারের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয় এবং তারা নতুন করে লিজ নবায়নে আগ্রহ দেখায়নি। কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, রাশিয়া ও চীনের চাপেই ভারতকে লিজ নবায়নের অনুমতি দেয়নি তাজিকিস্তান।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় ঘাঁটিটি ২০২২ সালে তাজিকিস্তান সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়।

ভারতের কী ক্ষতি হলো?

আয়নি ছিল ভারতের একমাত্র পূর্ণাঙ্গ বিদেশি ঘাঁটি, যা তাকে মধ্য এশিয়ায় সামরিক উপস্থিতি ও প্রভাবের সুযোগ দিয়েছিল। ঘাঁটিটি থেকে আফগানিস্তান, চীন ও পাকিস্তানের সীমান্ত এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারির সুবিধা মিলতো। ফলে, ভারত এখন ওই অঞ্চলে প্রভাব হারাতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ওয়াখান করিডর এবং শিনজিয়াং অঞ্চলের কাছাকাছি অবস্থানের কারণে আয়নি ঘাঁটিটি ছিল চীন ও পাকিস্তানের ওপর নজরদারির কৌশলগত কেন্দ্র। এখন সেই সুবিধাও হারালো ভারত।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন