চট্টগ্রাম: সঙ্গীত শিল্পী ও নাট্যজন চার্লস সুবাস বোস, যিনি চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে জীবন রসিক বা জীবন শিল্পী হিসেবে পরিচিত। জীবনের প্রথম ভাগে তিনি সঙ্গীত চর্চার সাথে জড়িত ছিলেন। দীর্ঘকাল মঞ্চ নাটকে কাজ করেছেন। বর্তমানে বয়সের ভারে চার্লস সুবাস বোস শারীরিক নানা অসুবিধায় ভুগছেন। করোনা ভাইরাসের মধ্যে দূরাবস্থা ও অসুস্থতার পাশাপাশি আর্থিক অনটনে জীবন পার করছেন তিনি। এ অবস্থায় কিছুটা হলেও আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে তার পাশে দাঁড়িয়েছে মায়াকানন ফাউন্ডেশন।
সম্প্রতি লাভলেইনস্থ মায়াকানন ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে ‘বিশিষ্ট মঞ্চনাট্য শিল্পী চার্লস সুবাস বোসের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগিতা প্রদান’ শিরোনামের অনুষ্ঠানে তাকে আর্থিক সহায়তা তুলে দেয়া হয়। মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ও সাইফুল আজম চৌধুরীর সৌজন্যে এ আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়। এ সময় শিল্পী চার্লস সুবাস বোস, তার স্ত্রী শেলী ডায়াস, নাট্যজন অধ্যাপক সঞ্জীব বড়ুয়া, মায়াকানন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক জামাল হোসাইন মনজু, আলমগীর শাহনেওয়াজ সাগর, তৈমুর হোসেন মিঠু, সুমন কুমার দে, মাইশা ফাইরোজ মেঘা ও মোহাম্মদ সালাউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে সঞ্জীব বড়ুয়া বলেন, ‘চার্লস সুবাস বোস চমৎকার সঙ্গীত পরিবেশন করতেন। সঙ্গীতের চর্চা করতেন, সঙ্গীত সংগ্রহ করতেন। সঙ্গীতের অসাধারণ সংগ্রহশালা ছিল তার। যার অনেকটাই বিনষ্ট হয়ে গেছে। ইস্টার্ন মিউজিক শুধু নয় ওয়েস্টার্ন মিউজিকেরও অনেক সম্পদ তার কাছে গচ্ছিত ছিল। আশির দশকের শুরু থেকে তিনি নিয়মিত নাট্যচর্চার সাথে জড়িত ছিলেন। জুতা আবিস্কার, আমিনা সোন্দরী, যায় দিন ফাগুন দিন, শেষ বিকেলের গল্পসহ অনেক নাটকে অসাধারণ অভিনয় দিয়ে তিনি মঞ্চ মাতিয়েছেন, দর্শক চিত্তকে জয় করেছেন। আজ তিনি অসুস্থ্য। করেনাকালীন তার আয়ও বন্ধ। পরিবারের অন্যদের আয়ও সংকুচিত।’
অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে শিল্পী চার্লস সুবাস বোস বলেন, ‘মায়াকানন ফাউন্ডেশন যে উদ্যোগটা নিয়েছে, তা সত্যি মহৎ উদ্দেশ্য। উনারা যেন এ কাজটা ঠিকভাবে ও সুন্দরভাবে চালিয়ে নিয়ে যেতে পারেন, তার জন্য আমি দোয়া করি। তারা যেন চলার পথে সব বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারে। এ আমার মনকামনা।’
মায়াকানন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক জামান হোসাইন মনজুকে ধন্যবাদ জানিয়ে চার্লস সুবাস বোসের জন্য মায়াকানন ফাউন্ডেশনের কাছে সাহায্য পাঠাতে সবার প্রতি আহ্বান জানান তার স্ত্রী শেলী ডায়াস। তিনি বলেন, ‘নাটক ও সঙ্গীতে অনেক অবদান আছে চার্লস সুবাস বোসের। অনেকেই উনাকে চেনে। সবাই মায়াকানন ফাউন্ডেশনের কাছে সহায়তা পাঠাবেন, যাতে আমাদের মত অসচ্ছ্বলরা সহযোগিতা পান। আপনারা সবাই মিলে ওকে একটু দেখবেন। ওর প্রতি একটু দয়া করুন।’
জামাল হোসাইন মনজু বলেন, ‘প্রতিটি অসহায় মানুষের জন্য সমাজের প্রতিটি মানুষের ভালবাসার হাত বাড়িয়ে দেয়া দরকার। মায়াকানন ফাউন্ডেশনের চেয়ে অনেক স্বচ্ছল প্রতিষ্ঠান আছে। আমাদের চেয়ে ভালভাবে সহযোগিতা করার যোগ্যতা আছে। চার্লস ভাইয়ের আর্থিক ও অন্য সহায়তার প্রয়োজন আছে, সেসব প্রতিষ্ঠান যেন এ খবরটা পায়। আমাদের অনেক বন্ধু ও সহকর্মী আছেন, যারা চার্লস ভাইয়ের সাথে কাজ করেছেন। অনেকেই অনেক জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন। আমার এ অনুষ্ঠানের মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে, তাদের কাছে এ তথ্যটা যেন যায়। তারা যেন ব্যক্তিগতভাবে বা মায়াকানন ফাউন্ডেশনের কাছে চার্লস ভাইয়ের জন্য সহায়তা পৌঁছে দেন। আপাতত এ সময়ে আমাদের এ ক্ষুদ্র সহযোগিতা তার অনেক কাজে লাগবে বলে আমি বিশ্বাস করি। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হল টাকার অঙ্কটা বড় নয়, চার্লস ভাই যখন দেখবেন, আমরা ছোটভাইরা তার সাথে আছি, উনার মনোবল অনেক বেড়ে যাবে, উনি কর্মক্ষম হয়ে উঠবেন।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন