ইফতেখার ইসলাম: “আমি পাগলামি করেছি, মেন! আমি শুধু আমার সাবেক প্রেমিকার মাথায় গুলি করেছি, ইয়ো। হুম, স্বপ্নের মতো মনে হলো। আমি কখনই ভাবিনি যে আমার প্রেমিকার মাথায় গুলি করা ব্যক্তি আমি হবো।”
”আমার সাবেক স্ত্রী আমার জীবন বিষণ্ন করে দিয়েছে। সুতরাং আমার পরবর্তী শিকার হবে সে। তারপর আমি নিজেকেও মেরে পেলবো। আমি শুধু মানুষকে বলতে চাই মানুষের আবেগ নিয়ে খেলবেন না। লোকদের উপর অপবাদ দেবেন না।”
নিজের মাথায় গুলি করার আগে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের মেরিল্যান্ডের এক ব্যক্তি ঠিক এভাবেই ফেসবুক লাইভে এসে তাঁর সাবেক প্রেমিকা ও স্ত্রীকে হত্যা করার কথা বর্ণানা করেন!
শনিবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে মেরিল্যান্ডের বাল্টিমোরের একটি বাসায় রাজী শরীফ ব্ল্যাক (৪৪) নামে এক ব্যক্তি তার সাবেক প্রেমিকা তারা লাবাংককে (৪১) হত্যা করেন এবং পরে কলম্বিয়ায় একটি অ্যাপার্টমেন্টে সাবেক স্ত্রী ওয়েন্ডি নাটালি ব্ল্যাককে (৪২) হত্যা করেন। আর এ সময় তিনি ফেসবুক লাইভে এসে এসব বিষয়ে স্বীকারোক্তি দেন এবং পরে নিজের মাথায়ও গুলি করে আত্মহত্যা করেন। এর আগে ব্ল্যাক তার সাবেক প্রেমিকা তারা লাবাংককে হত্যার ঘটনাও ফেসবুকে ধারণ করেন।
এ ঘটনায় বাল্টিমোরের পুলিশ সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) ভোরে লাবাংকের মরদেহ শনাক্ত করেছে। এছাড়া রাজী ব্ল্যাক এবং ওয়েন্ডি ব্ল্যাককে কলাম্বিয়া অ্যাপার্টমেন্টের ভেস্টিবুলে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
ফেসবুক লাইভে ওই ব্যক্তি হত্যার কারণ হিসেবে বলেন, আমি আমার দুই সন্তানের হেফাজত নিয়ে ৩ বছর ধরে সমস্যায় আছেন। এর পেছনে আমার সাবেক প্রেমিকা ও স্ত্রীকে দায়ী । আমার স্ত্রী সন্তানদের দেখাশোনা না করে আপর ব্যক্তির সাথে সম্পর্ক গড়েন এবং অন্তঃসত্ত্বা হোন। এখন ছুঁটির দিন কিন্তু আমার কোন পরিবার নেই! এসবের জন্য আমার স্ত্রীকে হত্যা করতে যাচ্ছি। আর জেলে না যেতে নিজেই নিজের প্রাণ নিবো!
জানা গেছে, ওয়েন্ডি নাটালি এবং রাজী ব্ল্যাক উভয়েই নিবন্ধিত নার্স অ্যানেস্থেটিস্ট হিসাবে কাজ করেছিলেন। ওয়েন্ডি ব্ল্যাক প্রায় পাঁচ বছর ধরে হাওয়ার্ড কাউন্টি জেনারেল হাসপাতালের কর্মরত ছিলেন। রাজী ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ ভেটেরান্স অ্যাফেয়ার্সে একজন নার্স অ্যানেস্থেটিস্ট পদে কর্মরত ছিলেন । এছাড়া ল্যাবাং ক্যাপিটাল রিজিওন হেলথ এ কর্মরত ছিলেন ।
পুলিশ বলেছে, ব্ল্যাক তার সাবেক প্রেমিকাকে হত্যা করার কথা ভিডিওতে বলার সময় দরজায় আসেন তার সাবেক স্ত্রী। এসময় সে তার স্ত্রীকেও গুলি করে হত্যা করে। এর কিছুক্ষণ পর সে নিজের উপর গুলি চালায়। আর তার দুই সন্তানকে অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ের বাইরে একটি গাড়িতে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় হাওয়ার্ড কাউন্টি পুলিশ এক বিবৃতিতে বলেছে , ব্ল্যাক বাল্টিমোরে একটি ঘরে হত্যাকাণ্ড চালানোর পর কলম্বিয়ায় তার স্ত্রীর বাসায় এসেছিলেন। সেখানে স্ত্রীকে হত্যার পর নিজেও আত্মহত্যা করেন। হাওয়ার্ড কাউন্টি পুলিশ জানায়, ব্ল্যাকের উভয় মহিলার সাথে সম্পর্ক ছিল।
এইদিকে বাল্টিমোর পুলিশ কমিশনার মাইকেল হ্যারিসন সাংবাদিকদের বলেছেন, এটি একটি ভয়ানক ট্র্যাজেডি।
বাল্টিমোর মেয়র ব্র্যান্ডন স্কট এমন বন্দুক সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে বলেন, আমি এমন এক শহরের কথা বলেছি যেটি সব দিক দিয়ে সমৃদ্ধ । তবে এখন শহরটি কেঁপে উঠেছে। মানুষজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। এখানে একটি নির্মম হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে। আমাদের এটি আর ঘটতে দেওয়া যাবে না।
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন