সাঈদ চৌধুরী, চুয়েটঃ
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এর “চুয়েট চেকমেট-১৯” নামের একটি দল বাংলাদেশ সায়েন্স, টেকনোলজি, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যাথেম্যাটিকস (STEM) ফাউন্ডেশনের আয়োজনে “ন্যাশনাল বিডি-স্টেম প্রতিযোগিতা-২০২১” এ সারাদেশের মধ্যে দ্বিতীয় রানার-আপ নির্বাচিত হয়েছে।
চুয়েট চেকমেট-১৯ দলের সদস্যরা হলেন ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৯-২০শিক্ষাবর্ষের ব্শিক্ষার্থী তানযীম তাহমীদ রেজা ও তাইয়্যিবা বুশরা, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জোহায়ের মাহতাব এবং ম্যাটেরিয়ালস সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী কাশফি উদ্দিন।
তাদের প্রজেক্টটি ছিলো জাতিসংঘ স্বীকৃত টেকসই উন্নয়ন সূচক (SDG)-এর ১১ নম্বর সূচক দ্বারা উপস্থাপিত ‘ডেভেলপড মডেল উইথ ইন্টিগ্রেটেড প্রজেক্ট ফর সাস্টেইনেবল সিটিস এন্ড কমিউনিটিস’ (Developed Model with Integrated Project for Sustainable Cities and Communities)দলটির সদস্যরা জানান, প্রজেক্ট টি মূলত কোনো একটি জায়গার ইন্ডোর এবং আউটডোর উভয়ই রক্ষা করতে কার্যকরী। তাদের প্রথম প্রজেক্ট টি হলো ফায়ার অ্যালার্ট ও ডিটেকশন টুলস (Fire Alert & Detection Tool(FADT)। এটি ঘরের মধ্যে গ্যাস লিকেজ হলে, ধোয়া পেলে বা আগুন ধরলে সাথে সাথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে টুলের মালিক ও নিকটস্থ ফায়ার সার্ভিস কে কল বা এসএম স দিয়ে দিবে। এই যন্ত্রটি একই সাথে ৩ টি কাজ করে থাকে, এরকম যন্ত্র এখন পর্যন্ত বর্তমানে দেশের বাজারে নেই। এই টুলটি ঘরে লাগালে মেইন্টেনেন্স খরচও নেই তেমন, শুধু ব্যাটারি বদলানো ছাড়া।
দিতীয় প্রজেক্ট ছিল ইন্টিগ্রেটেড ট্রান্সপোর্ট সিকিউরিটি সিস্টেম ( Integrated Transport Security System)।যেখানে লাইসেন্স প্লেট ডিটেকশন ও যানবাহন এর স্পিড নির্ণয় করা যায়। কোনো জায়গায় সার্ভেইলেন্স ক্যামেরা স্থাপনের মাধ্যমে এই সফটওয়্যার বেজড কাজ সম্পন্ন করা গেলে সহজেই যানবাহন চুরি, হাইওয়ে ডাকাতি কমানো সম্ভব হবে।
এ উপলক্ষ্যে আজ ২০ ডিসেম্বর (সোমবার), বিকাল ৩.০০ ঘটিকায় ভাইস চ্যান্সেলর কার্যালয়ে চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলমের সাথে বিজয়ী দলটি সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় দলের সুপারভাইজার ও যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সানাউল রাব্বী উপস্থিত ছিলেন। সাক্ষাৎকালে চুয়েট ভিসি বিজয় দলের সদস্যদের ও সুপারভাইজারকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান। একইসাথে ভবিষ্যতেও এ ধরনের সৃজনশীল প্রতিযোগিতার মাধ্যমে চুয়েটের ভাবমূর্তি ও সম্মানকে তুলে ধরার আহবান জানান।
এই সাফল্যে টিম চেকমেট-১৯ দলের কাশফি উদ্দিন বলেন, এই পুরষ্কার জয়ে আমি অনেক খুশি। আলহামদুলিল্লাহ। যতটুকু এসেছি অনেক এসেছি। সামনে আরো ভাল করব ইনশাআল্লাহ। এই জয়ে আমি সন্তুষ্ট। আমার টিমমেটদের থেকে যা যা শিখেছি জেনেছি বা তাদের কে যা দিতে পেরেছি তার মূল্যও অনেক।
তাইয়্যিবা বুশরা বলেন, সবচেয়েজুনিয়র হয়ে এত উদ্ভাবনী টিমগুলোর সাথে প্রতিযোগিতায় এত দূর এসে সেকেন্ড রানার আপ হওয়া আমাদের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। আমার প্রতিটি টিমমেটের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং মেন্টর স্যারের স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতাই আমাদের এই উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, গতকাল ১৯ ডিসেম্বর (রবিবার) রাজধানী ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এক জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিজয়ীদের হাতে পুরষ্কার তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার, এমপি। পুরষ্কার হিসেবে দলটি সনদপত্রের পাশাপাশি ৭৫ হাজার টাকা পেয়েছে। এবারের প্রতিযোগিতায় দেশের ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ২৩৮টি দল অংশগ্রহণ করে।
আরএইচ/
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন