শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

দেশের ডিজিটাল ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে অবদান রাখছে শেয়ারইট

শুক্রবার, মার্চ ৪, ২০২২

প্রিন্ট করুন

ঢাকা: ডিজিটালাইজেশন দক্ষিণ এশিয়ায় ব্যাপক পরিবর্তন ঘটিয়েছে এবং এর ফলে করোনা ভাইরাস মহামারিতে মানুষের জীবন অনেক সহজ হয়েছে। এক প্রতিবেদন অনুসারে, গত বছরের জানুয়ারিতে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিলো ৪৭ দশমিক ৬১ মিলিয়ন এবং ২০২০-২০২১ সালের মধ্যে এ সংখ্যা ৭ দশমিক ৭ মিলিয়ন (+১৯ শতাংশ) বৃদ্ধি পায়। কিন্তু, এখনো সম্পূর্ণ ডিজিটাল ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত হয়নি। এর জন্য দায়ী ‘অ্যাক্সেসিবিলিটি ডিসকানেক্ট’ (সংযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন)। যখন ব্যবহারকারীর চাহিদা অবকাঠামোর প্রবৃদ্ধিকে ছাড়িয়ে যায়, তখন এমনটি ঘটে।

প্রযুক্তিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটলেও সম্পূর্ণ ডিজিটাল ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তি অর্জনের জন্য আমাদের আরো অনেক পথ অতিক্রম করতে হবে। অন্তর্ভুক্তিমূলক অবকাঠামো তৈরির লক্ষ্যে সব বাঁধা ভাঙতে অনলাইন ও অফলাইন ডিজিটাল কন্টেন্ট ও ফাইল-শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম হিসেবে যাত্রা শুরু করে শেয়ারইট।

সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী: যাত্রার শুরুর দিকে, শেয়ারইট একটি ক্রস প্ল্যাটফর্ম ফাইল শেয়ারিং অ্যাপ তৈরির দিকে বিশেষ গুরুত্বারোপ করে, যা পরে অনলাইন ও অফলাইন ফাইল শেয়ারিং, কন্টেন্ট স্ট্রিমিং ও গেমিং প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়। শেয়ারইট গ্রুপের পার্টনার ও গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট কারাম মালহোত্রা একে এমন একটি ‘শক্তিশালী ও উন্মুক্ত ইকোসিস্টেম’ হিসেবে অভিহিত করেন, যাতে বিভিন্ন ডেভেলপারের অ্যাপ রয়েছে। তিনি বলেন, ‘শেয়ারইট ইন্টারনেট সংযোগ বা মোবাইল ডেটা ব্যবহার ছাড়াই বিভিন্ন ধরণের ফোনে নানা কনটেন্ট শেয়ারের সক্ষমতা দেয় ও এটি বিনামূল্যে ডাউনলোড করা যায়।’ ব্যবহারকারীদের ডেটার চাহিদা দ্রুতগতিতে বৃদ্ধির ফলে প্রতিষ্ঠানটি এ বিষয়ে বিশেষ প্রাধান্য দেয়।

মালহোত্রা বলেন, ‘আগে মানুষ দশ মেগা বাইটের গেম খেলতে পারলেই খুশি ছিল। আর এখন, তারা এক জিবির নিচে কোন গেম খেলে খুশি নয়। এক সময়ের নোকিয়ার স্নেক গেম থেকে আজকের কল অফ ডিউটি- ব্যবহারকারীদের ডেটা ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা ১০০ গুণ বেড়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘উদীয়মান দেশগুলোতে মোবাইল ইন্টারনেট সংযোগের মান এখনো তেমন উন্নত নয় ও এখানকার মানুষকে মোবাইল ডেটা ব্যবহারের অত্যাধিক খরচ নিয়েও চিন্তা করতে হয়। ইন্টারনেট থেকে কন্টেন্ট ডাউনলোড করার এসব চ্যালেঞ্জ মানুষের ডিজিটাল অর্থনীতিতে সম্পূর্ণভাবে অংশ নেয়ার পথে বাঁধা সৃষ্টি করেছে। কনটেন্ট ও অ্যাপ শেয়ারের কোন বিকল্পই কেবল এ দৃশ্যে পরিবর্তন আনতে পারত।’

মানুষের প্রয়োজনীয়তা পূরণ: মালহোত্রা বলেন, ‘শেয়ারইটের প্রবৃদ্ধি এ নীতির ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে যে, শেয়ারিং মানুষকে ভাল বোধ করায়, যা আমাদের উন্নত ইউজার এক্সপেরিয়েন্স ও ওয়ার্ড অব মাউথ মার্কেটিংয়ের ফলে আরো সহজ হয়েছে।’

এ অর্গানিক প্রবৃদ্ধি শেয়ারইটের গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়েছে। শেয়ারইট একটি সাধারণ ফাইল-শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম হিসেবে চালু হওয়ার পর এর সাথে জড়িত টিম উপলব্ধি করে যে, এটি ইন্টারনেট সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীতে কাউকে ব্যবহার করার পরামর্শ দেয়ার মত বিশ্বস্ত অ্যাপ। যার ফলে এটি বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অ্যাপ হয়ে উঠছে। বর্তমান পর্যন্ত প্রায় ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ব্যবহারকারী শেয়ারইট গ্রুপের অ্যাপ্লিকেশনের বৈচিত্র্যপূর্ণ স্যুট ইনস্টল করেছেন।

মালহোত্রা বলেন, ‘নিয়ার-ডিসটেন্স পিয়ার-টু-পিয়ার বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় অফলাইন-অনলাইন সামাজিক ইকোসিস্টেম। শেয়ারইট এমন একটি ডিজিটাল অর্থনীতি সৃষ্টি করে, যে ব্যাপারে আমাদের ধারণাও নেই।’

পিয়ার-টু-পিয়ার শেয়ারিং অন্য উপায়েও সাহায্য করে: মানুষের মুখের কথায় সবচেয়ে দ্রুত আস্থা তৈরি করা যায়। গুগলের এক জরিপে দেখা গেছে, বেশিরভাগ মানুষ বন্ধু ও পরিবারের মাধ্যমে নতুন অ্যাপের সন্ধান পায়।

মালহোত্রা বলেন, ‘কথোপকথন কোন বিষয়ে আস্থা তৈরিতে মূল ভূমিকা পালন করে। তিনি উল্লেখ করেন, ‘প্রতিটি জনপ্রিয় গেমের কমপক্ষে ৩০টি নকল বিকল্প থাকে।’ ‘আপনি কীভাবে জানবেন যে কোনটি বৈধ যেটিতে ভাইরাস, ম্যালওয়্যার বা স্পাইওয়্যার নেই? আপনি আপনার বন্ধুকে জিজ্ঞেস করবেন।’ পিয়ার-টু-পিয়ার শেয়ারিংও অর্গানিকভাবে ডিজিটাল জ্ঞান বাড়ায়, কারণ বন্ধুরা একে অপরকে বিশ্বাস করে ও কীভাবে বিভিন্ন অ্যাপ কাজ করে তা শেখায়।

প্রযুক্তি সুবিধাবঞ্চিতদের সেবা প্রদান: ই-কমার্স ও মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস প্ল্যাটফর্মগুলোকে সুবিধাবঞ্চিত গ্রাহকদের সেবা প্রদানে সক্ষম করার মাধ্যমে দেশের ডিজিটাল অবকাঠামোর উন্নয়নে অবদান রাখছে শেয়ারইট। এটি কার্যকরী উপায়ে আরো উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গ্রাহকের কাছে পৌঁছাতে বিভিন্ন ব্র্যান্ডকে সহায়তা করে।

করোনার আঘাত হানার পর অনলাইন কেনাকাটা ও পেমেন্ট উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় অনলাইন প্ল্যাটফর্মের ব্যবহার দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পায়। এ বিষয়টি বিবেচনায় রেখে, সম্ভাব্য গ্রাহকদের সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে ও তাদের কাছে পৌঁছানোর লক্ষ্যে শেয়ারইট ই-কমার্স মার্কেটপ্লেস দারাজ ও দেশের ডাক বিভাগের অংশীদার উদ্ভাবনী মোবাইল আর্থিক সেবা নগদের মত ই-কমার্স ও ফিনটেক ব্র্যান্ডগুলোর সাথে অংশীদারিত্ব করেছে। একইভাবে, শেয়ারইট এর অ্যাড প্ল্যাটফর্মে ক্যাম্পেইন চালুর মাধ্যমে অন্যান্য অ্যাপ-ভিত্তিক ব্যবসার প্রবৃদ্ধিকে সহজ করে। এটি বিভিন্ন ব্র্যান্ডকে সম্ভাব্য ও নতুন অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছাতে সাহায্য করে।

এসবের জন্য শেয়ারইট স্থানীয়করণে বিশেষ জোর দেয় ও টার্গেট মার্কেটের সাংস্কৃতিক পটভূমি ও ভাষা বিশ্লেষণ করে সে অনুযায়ী অ্যাপের ডিজাইন, যোগাযোগের উপায় ও কার্যকারিতায় পরিবর্তন আনে। এটি ক্লায়েন্টদের চাহিদা পূরণে স্থানীয় টিম ও প্রতিভাবানদের পেছনে যতটুকু সম্ভব বিনিয়োগ করে।

বিশ্বের ৭০০’রও বেশি বিজ্ঞাপনদাতা ও তাদের বিদ্যমান ব্যবহারকারীদের কাজে লাগিয়ে শেয়ারইট সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন, ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি, ডিজিটাল পেমেন্ট অপশন ও বিস্তৃত অডিয়েন্স নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ইউজার মনিটাইজেশনে এর ক্লায়েন্টদের সহায়তা করে। এরপর ক্লায়েন্টরা ব্যবহারকারীর সংখ্যা আরো বৃদ্ধি করতে এ মুনাফা ফের বিনিয়োগ করতে পারেন। মালহোত্রা এ পদ্ধতিকে ‘ফ্লাইহুইল’ মডেল হিসেবে উল্লেখ করেন।

সিএন/এমএ

Views: 0

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন