চলমান ডেস্ক: বাংলাদেশের বর্তমান সময়ে মানুষের মৃত্যুর প্রধান কারণগুলোর অন্যতম একটি হল ক্যান্সার। এক বছরে দেশে নতুন করে ক্যান্সাররোগী শনাক্ত হয়েছে এক লাখ ৫০ হাজার ৭৮১ জন। তাদের মধ্যে মারা গেছেন এক লাখ আট হাজার ১৩৭ জন। দেশে ক্যান্সার শনাক্ত ও মৃত্যুর হারে পুরুষের তুলনায় নারীর সংখ্যাই বেশি।
গবেষণায় দেখা গেছে, ক্যান্সারে আক্রান্ত প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে ৫৯ দশমিক পাঁচ শতাংশই নারী ও ৪০ দশমিক পাঁচ শতাংশ পুরুষ। ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ৭৪ দশমিক আট শতাংশ প্রাপ্ত বয়স্ক ও ২৫ দশমিক দুই শতাংশ শিশু। আবার পুরুষের তুলনায় নারীদের কম বয়সে ক্যান্সার আক্রান্তের হারও বেশি।
পূর্ণ বয়স্ক পুরুষদের মধ্যে মূত্রথলির ক্যান্সারে আক্রান্ত দশ দশমিক দুই শতাংশ, প্রটেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত নয় দশমিক নয় শতাংশ ও মুখগহ্বরের ক্যান্সারে আক্রান্ত আট দশমিক পাঁচ শতাংশ। অন্য দিকে, নরীদের মধ্যে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত ২৩ দশমিক ৩ শতাংশ, জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত ২১ দশমিক ৫ শতাংশ ও মুখগহ্বর ক্যান্সারে আক্রান্ত ৮ দশমিক ৯ শতাংশ। প্রজননতন্ত্রের ক্যান্সারে আক্রান্তের হার পুরুষের ১১ দশমিক ২ শতাংশ ও নারীদের মধ্যে ৩১ দশমিক ৯ শতাংশ।
হাসপাতাল ভিত্তিক ক্যান্সার রেজিস্ট্রি নিয়ে ১ হাজার ৬৫৬ জনের ওপর গবেষণা পরিচালিত হয়। এদের মধ্যে পূর্ণবয়স্ক ১ হাজার ২৩৮ জন ও শিশু ৪১৮ জন। এখানে পুরুষদের ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্তের হার ৯ দশমিক ৬ শতাংশ, লিউকেমিয়ায় আক্রান্তের হার ৯ দশমিক ৪ শতাংশ, লিম্ফোমায় আক্রান্তের হার ৯ শতাংশ। নারীদের মধ্যে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্তের হার ২৮ দশমিক ১ শতাংশ, থাইরয়েড ক্যান্সারে আক্রান্তের হার ১৬ দশমিক ১ শতাংশ, জরায়ুমুখে ক্যান্সারে আক্রান্তের হার ১২ দশমিক ২ শতাংশ। ছেলে শিশুদের মধ্যে লিউকেমিয়ায় আক্রান্তের হার ৭১ দশমিক ৫ শতাংশ ও লিম্ফোমায় আক্রান্তের হার ১০ দশমিক ৩ শতাংশ। কন্যাশিশুদের মধ্যে লিউকেমিয়া ৬৬ দশমিক ৫ শতাংশ ও হাড়ের ক্যান্সারে আক্রান্তের হার ১১ দশমিক ৬ শতাংশ।
গবেষণার ফলাফলে আরো দেখা গেছে, নারীরা ১৫ বছর বয়স থেকে ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন ও ৪৬ বছরের মধ্যে বেশি রোগী পাওয়া যাচ্ছে। এ দিক থেকে আবার পুরুষের বেশির ভাগই ২০ বছরের পরথেকে আক্রান্ত হচ্ছেন, আর ৫০ বছর বয়সের মধ্যেই বেশি রোগী শনাক্ত হচ্ছে।
নারীরা কেন বেশি ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন সে বিষয়ে জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইন্সটিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডাক্তার হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন বলেন, ‘নারীদের মধ্যে আক্রান্ত হওয়ার হার বৃদ্ধির একটি বড় কারণ তাদের জীবনযাত্রার পরিবর্তন। এখন মেয়েরা অনেক বেশি পথে ঘাটে বের হচ্ছেন, কর্মজীবী হচ্ছেন অনেকেই, সিগারেট বা মদ্যপানে অভ্যস্ত হয়ে উঠছেন। তারা এখন অনেক বেশি পথে ঘাটে ধোঁয়া ও ধুলার মধ্যে কাজ করছেন। বাচ্চাকে বুকের দুধ না খাওয়ানো, অনিয়মিত খাবার বা ফ্যাটি খাবার খাওয়াও ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার হার বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ।
বাসস/ইউনিসেফ ফিচার/সিএন/এমএ



চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন