মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

বিশ্ববাজারে বেড়েই চলেছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম

বুধবার, জুন ১৬, ২০২১

প্রিন্ট করুন
বিশ্ববাজারে বেড়েই চলেছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম
বিশ্ববাজারে বেড়েই চলেছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম

ক্রমেই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বিশ্ববাজার। টানা তিন সপ্তাহের মতো পণ্যটির দাম বেড়েছে। সর্বশেষ কার্যদিবসে জ্বালানি তেলের দাম ৩২ মাসের শীর্ষে উঠে এসেছে। খবর ব্লুমবার্গ ও রয়টার্স।

করোনাভাইরাসের টিকা প্রদান কার্যক্রম ত্বরান্বিত হওয়ায় বিশ্বজুড়ে ফিরছে স্বস্তি। বৈশ্বিক সংকট কাটতে শুরু করায় দৈনন্দিন জীবনধারা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। এর ফলে ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে গ্রীষ্মকালীন চাহিদা জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রেখেছে।

ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনায় বিশ্বব্যাপী যে স্থবিরতা দেখা দিয়েছিল তা দ্রুতগতিতে কাটছে। আমেরিকানরা আবারো কাজে ফিরতে শুরু করেছে। তারা বড় কলেবরে অনুষ্ঠানাদি ও বন্ধুদের আড্ডায় শামিল হচ্ছে। সিবিএস নিউজের এক সমীক্ষায় এ তথ্য উঠে এসেছে। পরিস্থিতি গত বছরের তুলনায় স্বাভাবিক হতে শুরু করায় জ্বালানি তেলের চাহিদায় উল্লম্ফন দেখা দিয়েছে। কিন্তু সে তুলনায় সরবরাহ কম। ফলে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বাজারদর। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক জ্বালানি তেলের বাজার আদর্শ ব্রেন্ট ও যুক্তরাষ্ট্রের বাজার আদর্শ ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম ব্যারেলপ্রতি ৭০ ডলারের ওপরে উঠে আসে।

রয়টার্স জানায়, সর্বশেষ কার্যদিবসে ব্রেন্টের দাম দশমিক ৭ শতাংশ বা ৫১ সেন্ট বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৭৩ ডলার ২০ সেন্টে দাঁড়িয়েছে, যা ২০১৮ সালের মে মাসের পর সর্বোচ্চ। অন্যদিকে ডব্লিউটিআইয়ের দাম ৪৭ সেন্ট বা দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৭১ ডলার ৩৮ সেন্টে পৌঁছেছে, যা ২০১৮ সালের অক্টোবরের পর সর্বোচ্চ।

এদিকে ব্লুমবার্গের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে কার্যদিবসের শুরুতে ডব্লিউটিআই জুলাইয়ে সরবরাহ চুক্তিমূল্য দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৭১ ডলার ২৪ সেন্টে দাঁড়ায়। অন্যদিকে আইসিই ফিউচারস ইউরোপ এক্সচেঞ্জে ব্রেন্টের আগস্টে সরবরাহ চুক্তিমূল্যও দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি ব্যারেলের মূল্য উঠেছে ৭৩ ডলার ৫ সেন্ট পর্যন্ত।

সিঙ্গাপুরভিত্তিক ফিলিপস ফিউচারসের সিনিয়র ম্যানেজার কমোডিটিস আভটার সান্ধু জানান, বাজারের চাহিদার সঙ্গে সরবরাহ তাল মিলিয়ে চলতে পারছে না। ফলে স্বল্প সময়ের জন্য জ্বালানি তেলের বিশ্ববাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে।

রফতানিকারক দেশগুলোর সংগঠন ওপেক ও মিত্র দেশগুলো নিয়ে গঠিত জোট ওপেক প্লাস। ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইইএ) বৈশ্বিক চাহিদা পূরণে জোটটির প্রতি জ্বালানি তেল উত্তোলন বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে।

গত বছর মহামরীর ভয়াবহ প্রভাবে জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা কমতে থাকে। এ সময় বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ওপেক প্লাস জ্বালানি তেল উত্তোলনে লাগাম টেনে ধরে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে জোটটি আবারো উত্তোলন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু বাজার চাঙ্গা রাখতে সরবরাহ নিয়ন্ত্রিত রাখছে ওপেক প্লাস। এ কারণে বিশ্ববাজারে পণ্যটির দাম বাড়তির দিকে। মূল্যবৃদ্ধির এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। গোল্ডম্যান স্যাকস জানায়, চলতি গীষ্মের শেষ নাগাদ প্রতি ব্যারেল ব্রেন্টের দাম ৭০ ছাড়িয়ে ৮০ ডলারের গণ্ডিতে পা রাখবে।

এদিকে জ্বালানি তেলের বাজারসংশ্লিষ্টরা ইরানের পরমাণু সংলাপ ইস্যুতে অনেকটাই আশাবাদী। তারা মনে করছেন, এ সংলাপের মধ্য দিয়ে ইরানের ওপর আরোপিত অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে। এতে বিশ্ববাজারে সরবরাহ বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তবে দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেই এ বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা সম্ভব নয় বলে জানান দেশটির খাতসংশ্লিষ্টরা।

Views: 0

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন