বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

মহাবিশ্বের সৃষ্টির প্রথম ভোরের আলোর ঝলক পর্যবেক্ষণ করবে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ

শনিবার, ডিসেম্বর ১১, ২০২১

প্রিন্ট করুন
Elescope
Elescope

চলমান ডেস্ক: জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ গভীর মহাশূন্যে দৃষ্টি ফেলে কোটি কোটি বছর অতীতের মহাবিশ্বের সৃষ্টির সূচনায় প্রাচীনতম ছায়াপথগুলো তৈরির শুরুতে মহাজাগতিক ভোরের স্পস্ট ঝলক দেখার সুযোগ করে দেবে।

নাসা বলেছে, ‘এটি হবে মহাকাশে পাঠানো সবচেয়ে বড় ও এযাবতকালের সবচেয়ে শক্তিশালী টেলিস্কোপ। হাবল টেলিস্কোপের কার্যকাল শেষে অবসরে যাওয়ায় জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ সেখানে প্রতিস্থাপিত হবে। আগামী ২২ ডিসেম্বর জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের উৎক্ষেপণের কথা রয়েছে। এ টেলিস্কোপ মহাশূন্যে এত গভীরে ও সময়ের কয়েক বিলিয়ন বছর অতীতের ঘটনা পর্যবেক্ষণ করবে, যা অতীতে কখনো সম্ভব হয়নি।’

মহাবিস্ফোণের মাত্র কয়েকশ’ মিলিয়ন বছর পরে মহাবিশ্বের যৌবন কালের ঘটনা ও পটভূমি এ টেলিস্কোপ মানুষের সামনে তুলে ধরবে।

নাসার গডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের ইন্সট্রুমেন্ট সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার বেগোনিয়া ভিলা এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘বিজ্ঞানের খুব উচ্চ লক্ষ্যের কথা মাথায় রেখে’ ওয়েব টেলিস্কোপ ১৩ দশমিক পাঁচ বিলিয়ন বছর পেছনে ফিরে তাকাবে, যখন মহাবিশ্বের ছায়াপথগুলো বিবর্তিত হয়েছিল।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের এ পর্যবেক্ষণের লক্ষ্য হচ্ছে, ‘আমরা আজ যে ধরণের ছায়াপথে বাস করি, এ পর্যায়ে পৌঁছাতে ছায়াপথগুলো কীভাবে বিবর্তিত হয় ও বিকশিত হয়’ তা পর্যবেক্ষণ করার পাশাপাশি প্রথম নক্ষত্রগুলোর দিকে দৃষ্টি দেয়া এবং পানি, কার্বন ডাই অক্সাইড ও মিথেনের মত উপাদানগুলো শনাক্ত করা যেগুলো প্রাণের সৃষ্টির ইঙ্গিত দেয়।’

মহাকাশের দিকে আরো দূরে তাকানোর অর্থ হল- সময়ের সাথে সাথে আরো পিছনের দিকে তাকানো। আলোর ভ্রমণ গতিতে অতীতের দিকে দৃষ্টি ফেলা, যেমন সূর্যের আলো পৃথিবীতে পৌঁছাতে আট মিনিট সময় লাগে। হাবল টেলিস্কোপ মহাবিশ্বেও ১৩ দশমিক চার বিলিয়ন অতীত সীমায় প্রচীনতম ছায়াপথ ‘জিএন-জেড ১১’তে দৃষ্টি ফেলেছে।

হাবল টেলিস্কোপ ১৯৯০ সালে মহাকাশে পাঠানো হয়। এ টেলিস্কোপ ভিজিবল লাইট ধরতে পারত, কিন্তু জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ ইনফারেড লাইট ধারণ করতে পারবে। এতে এই টেলিস্কোপের পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কয়েক বার উৎক্ষেপণের সময় পরিবর্তনের পর এবার ২২ ডিসেম্বর এ টেলিস্কোপের উৎক্ষেপণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।

নাসা, ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি ও কানাডিয়ান স্পেস এজেন্সি যৌথভাবে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ তৈরি করেছে। এ টেলিস্কোপের মাধ্যমে মহাবিশ্বের শুরুতে বিবর্তনের ইতিহাস জানা যাবে। যখন মহাবিশ্বে প্রথম আলো জ্বলে উঠেছে ও প্রথম নক্ষত্রগুলোর গঠন শুরু হয়েছে।

প্রথম জিএন-জেড ১১ ছায়াপথ শনাক্তকারী সুইস জ্যোতিপদার্থ বিজ্ঞানী পাসকাল ওয়েচ বলেছেন, ‘মহাবিস্ফোরণের পরে মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ শুরু হয় ও মহাজাগতিক অন্ধকার যুগে প্রবেশ করে। সেখানে মহাশূন্য হাইড্রোজেন ও হিলিয়ামের একটি গ্যাসীয় মাধ্যম তৈরি হয়, যা মহাবিশ্বকে অস্বচ্ছ করে তোলে। এ অবস্থা শত শত মিলিয়ন বছর ধরে চলতে থাকে যতক্ষণ না প্রথম নক্ষত্রগুলো তৈরি শুরু হয়। এ সময় দৈত্যাকার নক্ষত্র তৈরি হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। যা আমাদের সূর্যের চেয়ে ৩০০ গুণের বেশী বড়। জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ প্রথম ছায়াপথগুলো আমাদের নজরে আনবে, যা থেকে দ্বিতীয় প্রজন্মের নক্ষত্রের জন্ম হয়েছে।

সিএন/এমএ

Views: 0

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন