মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

লাখপতির গল্প: ক্রেতার সন্তুষ্টিই লক্ষ্য লাখপতি সুরাইয়ার

বুধবার, জুন ২৩, ২০২১

প্রিন্ট করুন
suraia c
suraia c

বাটিক ও ব্লকের শাড়ি, থ্রি-পিস, বাচ্চার পোশাক, পুরুষের পাঞ্জাবি, বিছানার চাদর, কুশন কভার, টেবিল ম্যাট, পর্দা, মসলিন এমব্রয়ডারি করা শাড়ি ও থ্রি-পিস নিয়ে কাজ করেন সুরাইয়া শারমিন সুলতানা। অনলাইনে বিক্রি করেন সেসব। আর এতেই লাখপতি বনে গেছেন এ উদ্যোক্তা।

সুরাইয়া শারমিন সুলতানার অনলাইনভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের নাম—ফ্যাশন ওয়ার্ক বাই সুমি (Fashion Work By Shumi)। এ সেক্টরে কাজ করছেন প্রায় পাঁচ বছর। সম্প্রতি কথা হয় সুরাইয়ার। জানান নিজের উদ্যোক্তা-জীবনের কথা।

কুশল বিনিময়ের পর সুরাইয়া নিজের অনলাইনে ব্যবসা শুরুর দিক সম্পর্কে বলেন, ‘অনলাইনে ই-কমার্স পেজের মাধ্যমে ব্যবসা করার আগে থেকেই আমার অফলাইন বুটিক শপ ছিল মিরপুর পল্লবী ১২-তে। প্যানডেমিক সিচুয়েশন আসার আগ পর্যন্ত আমার অফলাইন বুটিক শপ ভালোই চলছিল। করোনাকালে অফলাইন বুটিক শপ লকডাউনের কারণে বন্ধ হয়ে যায়। তারপর অনলাইনে পুরোপুরি মনোযোগী হই এবং আস্তে আস্তে নিজের পরিচিতি বৃদ্ধি করি উই-এর (উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম) মাধ্যমে। আলহামদুলিল্লাহ, এখন ভালো সাড়া পাচ্ছি।’

কত টাকার বেচাকেনা করেছেন? সুরাইয়া শারমিন সুলতানা বলেন, ‘উই-এর মাধ্যমে প্রায় আমার দুই লাখ টাকা বেচাকেনা হয়েছে এ পর্যন্ত। বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছি।’

সুরাইয়া জানান, তিনি এমএসসি সম্পন্ন করেছেন। একটি বেসরকারি স্বনামধন্য ওষুধ কোম্পানিতে দশ বছর চাকরি করেছেন উদ্যোক্তা হওয়ার আগে। জানালেন, রান্না করতে খুব পছন্দ করেন। ঘরে তৈরি খাবার নিয়ে নতুন উদ্যোগ শুরু করতে চান।

উই-এর ফেসবুক গ্রুপ সুরাইয়ার উদ্যোক্তা-জীবনকে প্রভাবিত করেছে। উই সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘উই আমার জীবনে আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। ২০২০-এর প্রথম দিকে যখন করোনা-পরিস্থিতির কারণে লকডাউনের জন্য আমার বুটিক শপ বন্ধ হয়ে যায়, প্রায় সাত মাস আমাকে দোকান বন্ধ রেখে দোকান ভাড়া গুনতে হয়, দোকানের কর্মচারীদের বেতন গুনতে হয়। ঠিক সেই সময় আমি খুব চিন্তায় পড়ে যাই। তখনই উই আমার জন্য আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়ায়। আমি উই-এ সময় দিতে থাকি ও নিজের পরিচিতি তৈরি করতে থাকি। আমি পরিপূর্ণভাবে উই-এ অ্যাকটিভ থেকে পারসোনাল ব্র্যান্ডিংয়ের মাধ্যমে নিজের পরিচিতি তৈরি করি ও আমার পণ্যের বিক্রি শুরু হয়। এভাবেই আস্তে আস্তে আমি এগিয়ে যাই। উই-এ এত মানুষের সংগ্রামের খবর জেনেছি, সেখান থেকে নিজে সাহস পাই ও এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। উই-এর মাধ্যমে আমি ই-কমার্সের খুঁটিনাটি জানতে পারি এবং অনলাইন ট্রেনিংগুলোতে অংশগ্রহণ করে নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তুলি, যা আমার ব্যবসায় কাজে লাগাতে পারি। উই আমাকে আত্মবিশ্বাসী করেছে। উই আমার নিজস্ব পরিচয় তৈরি করতে সাহায্য করেছে।’

উদ্যোক্তা হওয়ার পর মধুর স্মৃতি জানতে চাইলে সুরাইয়া বলেন, ‘উই-এর ২০২০ মিট আপে নাসিমা আক্তার নিশা আপুর হাত থেকে লাখপতি ক্রেস্ট নেওয়া আমার কাজের মধুর স্মৃতি।’

উদ্যোক্তা হতে পেরে কেমন লাগছে? সুরাইয়া শারমিন সুলতানা বলেন, ‘নিজের দেশের পণ্য নিয়ে কাজ করতে পারছি, এ জন্য আমি গর্ব বোধ করি। অবশ্যই খুব ভালো লাগছে। দেশের পণ্যকে দেশ ও দেশের বাইরে পরিচিত করাতে পারছি, এটা আমার জন্য খুবই গর্বের বিষয়।’

পণ্যের মান রক্ষা করেন কীভাবে? সুরাইয়া শারমিন সুলতানা বলেন, ‘আমি আমার ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী কাপড় সরবরাহ করি। কাপড়ের কোয়ালিটি অবশ্যই সবচেয়ে ভালোটা দেওয়ার চেষ্টা করি। ক্রেতার সন্তুষ্টিই আমার ফ্যাশন ওয়ার্কের লক্ষ্য।’

বলা হয়, অনেকে লাখপতি? আপনি হতে পেরেছেন? উত্তরে সুরাইয়া বলেন, ‘জি। আমি গত বছরই লাখপতি হয়েছি। নতুনদের জন্য বলব, লাখপতি মানে লাখ টাকার সেল। এ রকম করা সম্ভব। অবশ্যই লেগে থেকে শুরুটা সাহস করে করতে হয়, নিজের উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে হয়। থেমে গেলেন তো হেরে গেলেন, এটাই উই-এর মূলমন্ত্র। নিয়মিত নিজের উদ্যোগে লেগে থাকতে হয়, তাহলেই সফল; এটা আমি মনে করি।’

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী? সুরাইয়া শারমিন সুলতানা বলেন, ‘ইনশা আল্লাহ, ফ্যাশন ওয়ার্ক বাই সুমির আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে নিজস্ব ফ্যাশন স্টুডিও থাকবে এবং দেশ ও দেশের বাইরে এর পণ্য সমাদৃত হবে।’ সুরাইয়ার সেই স্বপ্ন পূর্ণ হোক, এ প্রত্যাশা সবার।

Views: 0

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন